দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হঠাৎ আলোচনায় উঠে এসেছে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শক্তিধর দেশ ভারত। যার ইংরেজি নাম হলো ‘ইন্ডিয়া’। দেশটির নাম ভারত না কি ইন্ডিয়া? আসলে কোনটা থাকবে, না কি দুটোই থাকবে? যদিও দেশটির সংবিধানে বর্তমানে ইন্ডিয়া এবং ভারত দু’টি নামই রয়েছে।
দেশটির বর্তমান ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ‘ইন্ডিয়া’ নামটি বাদ দিতে চাওয়ার কারণে গুঞ্জন ছিল অনেক আগে থেকেই। তবে হঠাৎ জি-২০ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিশ্বনেতাদের নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্রে দেশটির নাম শুধুমাত্র ভারত হিসেবে উল্লেখ করায় বিষয়টি নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।
৫ সেপ্টেম্বর সংবাদমাধ্যম টাইমস নাওয়ের বরাতে বলা হয়েছে, আগামী ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর দেশটির পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে দেশের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে একটি রেজুলেশন আনতে পারে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকার। ওই রেজুলেশনে দেশটির নাম আনুষ্ঠানিকভাবে শুধুমাত্র ভারত করা হতে পারে।
গত মঙ্গলবার জি২০ শীর্ষ বৈঠকে অংশ নেওয়া বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের কাছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর নৈশভোজ অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র প্রকাশ্যে আসার পরই জল্পনা শুরু হয়। লোকসভা ভোটের আগে দেশের নাম শুধুই ‘ভারত’ করতে চলেছে মোদি সরকার। এই সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী বিল পাসের জন্যই আগামী ১৮-২২ ডিসেম্বর সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে বলে জল্পনা আরও দানা বেঁধেছে।
সংবাদমাধ্যম টাইমস নাও জানিয়েছে, জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশ্ব নেতাদের নৈশভোজে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণপত্র পাঠায় আয়োজক দেশটির কর্মকর্তারা। ওই নিমন্ত্রণপত্রে ‘প্রেসিডেন্ট অব ভারতের’ পক্ষে নৈশভোজের আয়োজন করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়। এই ধরনের নিমন্ত্রণপত্রে ইতিপূর্বে ‘প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়া’ লেখা হতো।
বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র মঙ্গলবার তার এক্স হ্যান্ডলে (টুইটার) প্রধানমন্ত্রী মোদির আসন্ন ইন্দোনেশিয়া সফরের ঘোষণাসংক্রান্ত একটি সরকারি নথি প্রকাশ করেন। সেখানে মোদির পদ লেখা হয়, ‘প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত’। যদিও সরকারি প্রথা অনুযায়ী তার পদটিকে ‘প্রাইম মিনিস্টার অফ ইন্ডিয়া’ লেখা হতো।
এই বিষয়ে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রামেশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (টুইটার) লেখেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে ইন্ডিয়ার নাম পরিবর্তনের বিষয়টি সত্যি হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ৯ সেপ্টেম্বরের নৈশভোজে আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে নিমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়, যেখানে প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়ার পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট অব ভারত কথাটি লেখা হয়েছে। দেশটির সংবিধানের এক নম্বর আর্টিকেল অনুযায়ী, ‘ইন্ডিয়া, যা হলো ভারত, রাজ্যগুলোর একটি ইউনিয়ন।’ এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা ইউনিয়ন অব স্টেটকে অসম্মানিত করছেন।’
তবে দেশটির আনুষ্ঠানিক নাম পরিবর্তনের পক্ষে সরব হচ্ছেন ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতারা। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা ৫ সেপ্টেম্বর দেশের নাম শুধু ‘ভারত’ করার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। এক্সে এক পোস্টে তিনি লেখেন যে, ‘রিপাবলিক অব ভারত, আমাদের লোকেরা সাহসিকতার সঙ্গেই অমৃতকালের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন জেনে আমি খুশি এবং গর্বিত।’
কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী রাজীবচন্দ্র শেখর বলেছেন, ‘আমাদের দেশের নাম ভারত, এটি নিয়ে কোনোই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব নেই। কংগ্রেস সবকিছুতেই সমস্যা দেখে।’
ভারতের প্রধান হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএসের প্রধান রাজীব শেখর আরও বলেন যে, ‘যুগ যুগ হতেই এই দেশের নাম ভারত। আমাদেরকে সে দিকেই যেতে হবে। ভাষা যাই হোক না কেনো, নাম এক থাকে।’
নাম পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষেও কথা বলেছিলেন বিজেপির আইনপ্রণেতা নারেশ বানসাল। অধিবেশনে নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবটি তুলে ধরে তিনি বলেছিলেন যে, ‘ইন্ডিয়া নামটি ঔপনেবেশিক দাসত্বের এক প্রতীক। সংবিধান থেকে এই নামটি মুছে ফেলা উচিত।’
সংবিধানের ১ নম্বর অনুচ্ছেদে লেখা রয়েছে, ‘ইন্ডিয়া, অর্থাৎ ভারত, রাজ্যগুলোর সমষ্টি’। অর্থাৎ- ‘ইন্ডিয়া’ ও ‘ভারত’, দুই নামেই সাংবিধানিক সিলমোহর রয়েছে। মোদির জামানায় ২০১৬ সালে দুই বিচারপতির বেঞ্চ রায়ে ‘ইন্ডিয়া’ নাম বাতিলের আর্জি খারিজ করে বলেছিল যে, ‘এই ধরনের আবেদন অর্থহীন।’
দেশের নাম বদলে গেলে মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র তাহলে কী হবে? ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ স্লোগানেও পরিবর্তন হবে?
আগামী নভেম্বরে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র দ্বিতীয় পর্ব শুরু হলে কোনো নামবিভ্রাট বিতর্কে পড়তে হবে না কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে। তবে শেষ পর্যন্ত যদি সত্যিই সংবিধান সংশোধন করে ‘ইন্ডিয়া’ ছেঁটে ফেলে শুধুমাত্র ভারত নামটিকেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়, বরং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী হবে? নাম বদলাতে হবে মোদি সরকারের অনেক কিছুর।
>>>>>>>>>>>>>>
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
This post was last modified on সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৩ 10:31 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমানে পড়াশোনার জন্য দিনের বেশির ভাগ সময় কম্পিউটারে চোখ রাখতে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের গৃহঋণ প্রদানকারী স্পেশালিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডিবিএইচ ফাইন্যান্স পিএলসি সম্প্রতি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রবিবার (১২ মে) সেমিনারে বক্তারা বলেন, সরকারকে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রক্রিয়ায়…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ৮ বছর পূর্বে ‘কে তুমি’ শিরোনামে একটি গান গেয়েছিলেন জনপ্রিয়…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মধ্যপ্রাচ্যে ইরান এবং ইসরায়েলের উত্তেজনা স্থায়ী সংঘাতে পরিণত হওয়ার শঙ্কার…