ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ মানেই কী ডায়াবেটিস? হতে পারে ক্যান্সারের লক্ষণ!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রাথমিক পর্যায় প্রস্টেট ক্যান্সার বা মূত্রাশয়ের ক্যান্সার ধরা পড়লে উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে রোগী সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।

শরীরে প্রস্টেট ক্যান্সার বাসা বাঁধার প্রাথমিক উপসর্গগুলো আগে থেকেই জেনে রাখা ভালো। তাহলে কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ফুসফুসের ক্যান্সারের পরেই পুরুষরা প্রস্টেট ক্যান্সার বা মূত্রশয়ের ক্যান্সারে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন। চিকিৎসকরা মনে করেন, যে কোনও বয়সেই এই রোগ হতে পারে। তবে বয়স ৫০ পেরোলে পুরুষদের শরীরে এই অসুখটির আশঙ্কা অনেকটা বেড়ে যায়। তাই ৫০ পেরোলেই ছেলেদের বাড়তি সতর্ক হতে হবে।

Related Post

সাধারণত ‘পিএসএ টেস্ট’ কিংবা ‘প্রস্টেট স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন টেস্ট’-এর মাধ্যমে এই রোগটি নির্ণয় করা হয়। সাধারণত ছেলেদের রক্তে ‘পিএসএ’-র মাত্রা ১ হতে ৪-এর মধ্যেই থাকে। তবে রক্তে ‘পিএসএ’-র মাত্রা ৪-এর বেশি হলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। ‘পিএসএ’-র মাত্রা ৪ ছাড়ানো শরীরে ক্যান্সার বাসা বাঁধার লক্ষণও হতে পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ‘পিএসএ’ পরীক্ষাতেও প্রস্টেট ক্যান্সার ধরা পরে না, সেই ক্ষেত্রে ‘ডিজিটাল রেক্টাল টেস্ট’ করানো হয় রোগীদেরকে। সবশেষে বায়োপ্সি করিয়ে ক্যান্সাোরের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগটি ধরা পড়লে উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে রোগী সুস্থও হয়ে উঠতে পারেন। তাই শরীরে প্রস্টেট ক্যান্সার বাসা বাঁধার প্রাথমিক উপসর্গগুলো আগে থেকেই জেনে রাখা ভালো।
কোন কোন উপসর্গ দেখলে সতর্ক হবেন?

# ঘন ঘন প্রস্রাব পাওয়ার অর্থই কিন্তু ডায়াবেটিস নয়, এই উপসর্গ হতে পারে প্রস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণ। বার বার প্রস্রাবের বেগ আসা, প্রস্রাব পেলেও ঠিকমতো না হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেওয়া, প্রস্রাবের সময় জ্বালাভাব- কিংবা হঠাৎই এই উপসর্গগুলো দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

# প্রস্রাব বা বীর্যের সঙ্গে রক্তপাতকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয়, হেমাচুরিয়া। এই অসুখও মূত্রাশয়ের ক্যান্সারের লক্ষণও হতে পারে। তাই সময় থাকতে সাবধান হতে হবে।

# চিকিৎসকরা মনে করেন, পিঠের নীচের দিকে, কোমর, নিতম্ব, কুঁচকি এবং থাইয়ের ব্যথা প্রস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণও হতে পারে। হাড়ে তীব্র যন্ত্রণা কেবল বাতের লক্ষণই নয়, মূত্রাশয়ের ক্যান্সারের উপসর্গও হতে পারে।

# কোনও রকম ডায়েট এবং শরীরচর্চা ছাড়া যদি ওজন কমতে শুরু করে, তাহলে সতর্ক হতে পারে। ওজন কমা প্রস্টেট ক্যান্সারের অন্যতম লক্ষণও হতে পারে।

# প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে যৌনজীবনেও প্রভাব পড়তে পারে। এই রোগে আক্রান্ত হলে লিঙ্গোত্থানেও সমস্যা দেখা দেয়। তাই এই রকম কোনও উপসর্গ শরীরে দেখলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on জানুয়ারী ৩১, ২০২৪ 2:47 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

পুষ্টিবিদরা যা বলেন: সুজি খাওয়া উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…

% দিন আগে

বাংলা এবং হিন্দিতে ‘দরদ’-এর ট্রেলার ও গান প্রকাশ [ট্রেলার]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…

% দিন আগে

মুরগির লেগপিস প্রতিদিন খাওয়া কী ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…

% দিন আগে

উপদেষ্টা নাহিদকে নিয়ে নানা অপপ্রচার: সাবধান করেছেন সমন্বয়ক মাসউদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…

% দিন আগে

ইলন মাস্ককে এক লাখ সরকারি চাকরি বাতিলের দায়িত্ব দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…

% দিন আগে

গোল্ডেন আউল: ৩১ বছর ধরে চলা গুপ্তধন অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে গত ৩১ বছর ধরে চলা ‘গোল্ডেন আউল’ বিতর্কের অবসান…

% দিন আগে