ঠাণ্ডায় জ্বর-সর্দির প্রকোপে কী দায়ী দূষণ?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একটু ঠাণ্ডা লাগতে না লাগতেই জাঁকিয়ে বসেছে জ্বর-সর্দি। চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এই সময় রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে।

দেখা যাচ্ছে গায়ে অল্পস্বল্প জ্বর। সেইসঙ্গে খুকখুকে কাশি, ফ্যাচফ্যাচে সর্দি, মাথা ঝিমঝিম ভাব! কারও আবার সঙ্গে ডায়রিয়াও দেখা যায়। এই শীতে এমন ব্যামো ঘরে ঘরে দেখা যাচ্ছে। ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে ও ডাক্তারের চেম্বারেও। সে জন্য জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দোষী ঠাওড়াচ্ছেন আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা ও পরিবেশ দূষণকেও।

তবে অন্য বছরের মতো কৃপণ নয়, শীত এবার বেশ উদার। তবে তার প্রকৃতি যেনো সত্যিই কেমন তরো! কখনও তাপমাত্রার পারদের ঘনঘন ওঠানামা, কখনওবা অকালবৃষ্টির স্যাঁতসেঁতে ভাব যেনো বিপদ ডেকে আনেছে। সঙ্গে কুয়াশার বাড়বাড়ন্ত তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে ভাইরাসের কামড় বেড়েছে সব খানে। এতে করে জাঁকিয়ে বসেছে জ্বর-সর্দি। চিকিৎসকদের একাংশ বলেছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এই সময় রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে।

Related Post

ভারতের অধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ রায়ের পর্যবেক্ষণ, ‘‘এবার তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। কখনও কখনও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নীচে নেমে যাচ্ছে। বিশেষত: বয়স্কদের অসুস্থতা আরও বেড়েছে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা মোকাবিলায় শিশুসহ হাসপাতালের সব ওয়ার্ডে রুম হিটার কিংবা রুম ওয়ার্মারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

আরামবাগের বিশিষ্ট চিকিৎসক অতনু কুন্ডুর বক্তব্য হলো, শীতকালীন অসুস্থতা অন্য বারের তুলনায় এই বছর অনেক বেশি। অসুস্থতা ১০ দিন থেকে ১ মাস পর্যন্তও থেকে যাচ্ছে। এর অন্যতম কারণই হলো তাপমাত্রার ওঠানামা বা বৃষ্টি কম হওয়া। সর্বোপরি আরও বায়ুদূষণ বেড়ে যাওয়া। বায়ুদূষণ ও প্রতিকূল আবহওয়া বিভিন্ন ভাইরাস সংক্রমণকে প্রভাবিত করে থাকে। বিশেষত: সর্দি-কাশি, অ্যালার্জি আরও বাড়িয়ে দেয়। সেজন্য জমিতে নাড়া পোড়ানো, আবর্জনায় আগুন লাগানোকেও দুষছেন তিনি।

একাধিক চিকিৎসক জানিয়েছেন, ভাইরাসঘটিত কারণে অসুখ-বিসুখ বাড়ছে। শিশুদের জ্বর-সর্দির পাশাপাশি বমি- পাতলা পায়খানা হতে পারে। বিশিষ্ট শিশু চিকিৎসক অনুপ মঙ্গল বলেন, ‘‘আমার কাছে এই ধরনের সংক্রমণ নিয়ে বহু শিশুকে আনা হচ্ছে।’’ ওষুধের পাশাপাশি অভিভাবকদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থার পরামর্শও দিচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘শিশুদের মাথা এবং হাত ভালো করে ঢেকে রাখতে হবে, যাতে ঠাণ্ডা না লাগে। খাবার এবং পানি গরম করে খাওয়াতে হবে। গরম পানিতে গোসল করাতে হবে। বয়স্ক কারও জ্বর-সর্দি হলে তাকে মাস্ক পরাতে হবে, যাতে বাড়ির শিশুরাদ এর থেকে সংক্রমিত না হয়।’’ তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on ফেব্রুয়ারী ৪, ২০২৪ 3:42 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

ডিবিএইচের ময়মনসিংহ শাখা উদ্বোধন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের গৃহঋণ প্রদানকারী স্পেশালিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডিবিএইচ ফাইন্যান্স পিএলসি সম্প্রতি…

% দিন আগে

পাবলিক প্রকিউরমেন্টে সমান সুযোগের জন্য অন্যায্য ধারাগুলো সরান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রবিবার (১২ মে) সেমিনারে বক্তারা বলেন, সরকারকে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রক্রিয়ায়…

% দিন আগে

তাহসান দীর্ঘ ৮ বছর পর আবারও নতুন করে গাইলেন ‘কে তুমি’

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ৮ বছর পূর্বে ‘কে তুমি’ শিরোনামে একটি গান গেয়েছিলেন জনপ্রিয়…

% দিন আগে

তীব্র উত্তেজনার মধ্যেই ইসরায়েলকে কড়া সতর্ক করলো ইরান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মধ্যপ্রাচ্যে ইরান এবং ইসরায়েলের উত্তেজনা স্থায়ী সংঘাতে পরিণত হওয়ার শঙ্কার…

% দিন আগে

কেবলমাত্র এক শতাংশ মানুষ এই ধাঁধার সমাধান করতে পারবেন! তাহলে কী সেই ধাঁধা?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে লাইব্রেরিতে টেবিলের সামনে বই নিয়ে বসে…

% দিন আগে

কখনও কখনও প্রকৃতি আমাদের মুগ্ধ করে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ১৩ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১…

% দিন আগে