বাস্তুসংস্থান পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ‘বনায়ন’

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপনে দেশজুড়ে ৫০ লাখ চারা বিতরণ করবে দেশের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় বৃক্ষরোপণ এই কর্মসূচি ‘বনায়ন’। গত ৪৪ বছর ধরে পরিবেশ রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে এই উদ্যোগ।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের মোকাবিলা করছে বাংলাদেশ। বাড়ছে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, তাপপ্রবাহ এবং মরুকরণের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ। গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে এবং পরিবেশ রক্ষা ও বিপর্যয় মোকাবিলায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির ভূমিকা অপরিসীম। এক্ষেত্রে, ‘বনায়ন’ কর্মসূচি গত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।

জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) নেতৃত্বে পরিবেশ নিয়ে সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক আয়োজন হিসেবে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপিত হয়। বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রোধে সরকার এবং অন্যান্য সকল অংশীদারদের অনুপ্রাণিত ও সচেতন করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে এই দিবস।

Related Post

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কৌশলগত নানা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। এই লক্ষ্যকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে দেশের ১৯টি নার্সারি থেকে ৫০ লাখ চারাগাছ প্রস্তুত করেছে ‘বনায়ন’। একইসাথে, এই প্রচেষ্টা জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ১৫ নং লক্ষ্য (স্থলজ জীবন) তথা দেশের ২৫ শতাংশ ভূমিকে গাছপালায় ঢাকা সবুজ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার উদ্দেশ্য বাস্তবায়নেও সহায়ক
ভূমিকা পালন করছে।

‘বনায়ন’ কর্মসূচির মুখপাত্র আহমেদ রায়হান আহসানউল্লাহ বলেন, “বিশ্ব পরিবেশ দিবস জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষায় সমন্বিত এবং সামগ্রিক কৌশল গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব তুলে ধরে। সম্ভাবনাময় আগামী নিশ্চিতে আমাদের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ‘বনায়ন’ কর্মসূচির অধীনে এ বছর আবারও আমরা ৫০ লাখ চারা বিতরণ করব। বাস্তুসংস্থানের পুনরুদ্ধারে দেশজুড়ে বনায়নের প্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করে তুলতে সরকারের পাশাপাশি কাজ করার সুযোগ পেয়ে আমরা গর্বিত। এই ক্ষেত্রে, সবাই একযোগে কাজ করতে পারলে শীঘ্রই ২৫ শতাংশ গাছপালায় ঢাকা ভূমির লক্ষ্য অর্জন করতে পারবো বলে আশাবাদী আমরা।”

পরিবেশের সুরক্ষা ও বৈচিত্র্য নিশ্চিত করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় ১৯৮০ সালে ‘বনায়ন’ কর্মসূচির যাত্রা শুরু হয়। এই কর্মসূচির আওতায় এখন পর্যন্ত দেশজুড়ে বিনামূল্যে ১২ কোটি ৫০ লাখ ফলজ, বনজ এবং ঔষধি গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে; গড়ে তোলা হয়েছে ১১৯টি ঔষধি গাছের বাগান।

বর্তমানে ঢাকা, ময়মনসিংহ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রংপুর, রাজশাহী, লালমনিরহাট, নাটোর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, যশোর, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি এবং নোয়াখালি (সুবর্ণচর) সহ দেশের মোট ২৪টি জেলায় ‘বনায়ন’-এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

জলবায়ু বিপর্যয় মোকাবিলায় ধারাবাহিক প্রচেষ্টা এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে ‘বনায়ন’ কর্মসূচি। এর মধ্যে রয়েছে- প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার (পাঁচবার), প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় পুরস্কার, এসডিজি ব্র্যান্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০২৩, ‘এন্টারপ্রাইজ এশিয়া’ থেকে গ্রিন লিডারশিপের জন্য ‘এশিয়া রেসপনসিবল অন্ট্রাপ্রনারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ ও এসডিজি ইনক্লুশন ক্যাটাগরিতে ‘বাংলাদেশ ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড ২০২১।’

একটি সম্ভাবনাময় আগামী নিশ্চিত করতে ‘বনায়ন’ কর্মসূচির নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রোধে সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সকল অংশীদারের সাথে একযোগে কাজ করবে এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি।

খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on জুন ৬, ২০২৪ 2:37 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায় কিশোরদের জন্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বেগ উল্লেখ করে শিশুদের সামাজিক…

% দিন আগে

‘বন্যা’ নিয়ে মনির খানের কণ্ঠে গান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মনির খানের কণ্ঠে ‘বন্যা’ নিয়ে গান ইউটিউবে। এই গান লিখেছেন…

% দিন আগে

বাংলাদেশের ইলিশ ভারতের বাজারে যে দামে বিক্রি হচ্ছে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আলোচনা-সমালোচনার পর ভারতে রপ্তানি করা হয় বাংলাদেশের ইলিশ। শুক্রবার (২৭…

% দিন আগে

প্ল্যাটফর্মে এঁকেবেঁকে ঘুরে বেড়াচ্ছে ৬ ফুট লম্বা সাপ!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্ল্যাটফর্মে এঁকেবেঁকে ঘুরে বেড়াচ্ছে ৬ ফুট লম্বা সাপ! যা দেখে…

% দিন আগে

নেত্রকোনা দুর্গাপুর বর্ডার এলাকার সোমেশ্বরী নদী

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১…

% দিন আগে

রসগোল্লা বা সন্দেশ না খেয়েও শরীরে চিনির পরিমাণ বাড়তে পারে: কীভাবে বুঝবেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেক খাবারে চিনির পরিমাণ এতোই বেশি থাকে যে, পৃথক করে…

% দিন আগে