ডাইনোসরদের নিশ্চিহ্ন করা: সৌরজগতের বাইরে থেকে আসা গ্রহাণুই করেছিলো যে কাজটি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটি কোটি বছর পূর্বে এক গ্রহাণুর আক্রমণে পৃথিবী থেকে ডাইনোসরসহ অনেক প্রাণী ধ্বংস হয়ে গেছে- নানা গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা তাই মনে করেন।

সেই গ্রহাণু সৌরজগতের কোন এলাকা হতে এসেছিল, তা নিয়েও অনেক বিতর্ক দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এক তথ্যে জানিয়েছেন যে, ডাইনোসরদের ধ্বংস করে দেওয়া সেইসব গ্রহাণু সৌরজগতের বড় গ্রহ বৃহস্পতির বাইরে উদ্ভূত হয়। সৌরজগতের বাইরে থেকে বহুকাল পূর্বে এসে বৃহস্পতি গ্রহের বহির্বলয়ে অবস্থান করছিল সেইসব গ্রহাণু। পরবর্তী সময় সেটি আঘাত হানে এই পৃথিবীর বুকে।

সেই গ্রহাণু এখনকার মেক্সিকোতে ইউকাটান উপদ্বীপে আঘাত হানে। সেই আঘাতে চিক্সুলুব ক্রেটার নামে এক গভীর খাদ তৈরি হয়। ওই খাদ ১১২ মাইল প্রশস্ত এবং প্রায় ১২ মাইল গভীর। গ্রহাণুর প্রভাবে তখন প্রাণী এবং উদ্ভিদকুলের ব্যাপক বিলুপ্তি ঘটে। ডাইনোসর, টেরোসরের মতো উড়ন্ত সরীসৃপসহ অনেক সামুদ্রিক প্রজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় বলেও ধারণা করা হয়। ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর পূর্বের সেই বিশাল গ্রহাণুর প্রভাব নিয়ে নতুন এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

Related Post

সেই বিশাল গ্রহাণু প্রায় ৬ হতে ৯ মাইল চওড়া ছিল। নতুন গবেষণা সেই বিপর্যয়কর গ্রহাণুর উৎপত্তি নিয়ে তথ্যও প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। নমুনা বিশ্লেষণ করে গ্রহাণুটি বৃহস্পতি গ্রহের বাইরে হতে এসেছিল বলে জানা যায়। সেই গ্রহাণু বৃহস্পতি গ্রহের এলাকায় আসার পূর্বে আমাদের সৌরজগতের বাইরের অঞ্চলেই ছিল। অবশেষে গ্রহাণুর উৎপত্তি নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিতর্কের সমাধান ঘটলো।

ধ্বংসাবশেষ বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, গ্রহাণুটি একটি কার্বোনাসিয়াস গ্রহাণু, কিংবা সি-টাইপ। যেসব গ্রহাণুতে কার্বনের উচ্চ ঘনত্ব রয়েছে সেগুলো সি-টাইপ গ্রহাণু বলে। আগে মনে করা হতো যে, সেই গ্রহাণুটি কোন ধূমকেতু ছিল।

সায়েন্স সাময়িকীতে গ্রহাণুর আবির্ভাব কোন এলাকা হতে, তা নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞানীরা নমুনা বিশ্লেষণ করে বলেছেন, গ্রহাণুটি মঙ্গলগ্রহ এবং বৃহস্পতির মধ্যবর্তী গ্রহাণু বেল্টে স্থানান্তরিত হওয়ার পূর্বে বাইরের সৌরজগত হতে এসেছিল। জার্মানির কোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী মারিও ফিশার-গোড্ডে বলেছেন, সৌরজগতের মধ্যে উৎপন্ন গ্রহাণুর আক্রমণে প্রকৃতপক্ষে ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়ে যায়।

গবেষকরা ৩ কোটি ৭০ লাখ বছর হতে ৪৭ কোটি বছরের মধ্যে অন্যান্য গ্রহাণুর প্রভাব নিয়ে পরীক্ষা করেন। তখনকার সব গ্রহাণুই এস-টাইপ ছিল। গ্রহাণুর উৎপত্তি নিয়ে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর কাদামাটির স্তরে রুথেনিয়াম নামে আইসোটোপ নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন। এই আইসোটোপ পৃথিবীতে বিরল তবে গ্রহাণুতে সাধারণভাবে পাওয়া যায়। অন্যান্য কার্বোনাসিয়াস গ্রহাণুর মতোই ছিল আঘাত করা গ্রহাণুটি।

এই বিষয়ে বেলজিয়ামের ভ্রিজ ইউনিভার্সিট ব্রাসেলস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-বিজ্ঞানী স্টিভেন গোডেরিস বলেছেন, ‘আমি মনে করি যে, সেই গ্রহাণুর প্রভাবের মহাজাগতিক এক কাকতালীয় ঘটনাও ঘটে। সেই আঘাত না ঘটলে আমাদের গ্রহে জীবন বিকাশ হয়তো অন্যভাবে হতো। কাদামাটির স্তরে পাওয়া রুথেনিয়াম আইসোটোপ প্রকৃতপক্ষে গ্রহাণুর মাধ্যমেই ছড়িয়েছে। সি-টাইপ এমন গ্রহাণু সৌরজগতের সবচেয়ে প্রাচীন বস্তুর মধ্যে একটি। এইসব মহাজাগতিক বস্তু সূর্য হতে অনেক দূরে উৎপন্ন হয়। এইসব গ্রহাণুর গঠন এস-টাইপ গ্রহাণু হতে পৃথক। এস টাইপ গ্রহাণু সূর্যের কাছাকাছি গঠিত হয়ে থাকে। এস টাইপের গ্রহাণু পৃথিবীর মতো স্থলজ গ্রহের প্রাথমিক ভিত্তি হিসেবেও ধরা হয়ে থাকে। তথ্যসূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on আগস্ট ১৮, ২০২৪ 2:30 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

২৪ বছর সংসার করার পর বিচ্ছেদ: ৪৯ বছর পর প্রাক্তন স্ত্রীকে আবারও বিয়ে ৯৪ বছরের বৃদ্ধের!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ১৯৫১ সালের নভেম্বর মাসে বিয়ে হয় ফে ও রবার্টের। বিয়ের…

% দিন আগে

শীতের সকালে গাছি চলেছে খেজুরের রস নিয়ে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৬ পৌষ ১৪৩১…

% দিন আগে

লিকার চা খাবেন নাকি কালো কফি? কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘুম থেকে উঠেই সকাল বেলা দুধ চা খেতে বারণ করেছেন…

% দিন আগে

মনির খান আবারও নতুন ‘অঞ্জনা’ নিয়ে আসছেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জনপ্রিয় গায়ক মনির খানের প্রথম অ্যালবাম ‘তোমার কোনো দোষ নেই’।…

% দিন আগে

গাড়ি-ঘোড়ায় প্রবল এক সংঘর্ষ: ১০ ফুট উড়ে রাস্তায় মুখ থুবড়ে পড়ে মারা গেলো চতুষ্পদ! [ভিডিও]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাড়ি-ঘোড়ায় প্রবল এক সংঘর্ষ ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের বাগপতে। দিল্লি-সাহারানপুর হাইওয়েতে…

% দিন আগে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরিফাইল জামে মসজিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৫ পৌষ ১৪৩১…

% দিন আগে