ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি থাকলেই কী শরীরে সারাদিন ভোগায় ক্লান্তি?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনি কী সারাদিন ক্লান্তিতে ভোগেন? কাজ করতে গিয়ে তুলতে থাকেন হাই? সেইক্ষেত্রে আপনার শরীরে কয়েকটি ভিটামিন এবং খনিজের ঘাটতি থাকতে পারে। সেগুলো সম্পর্কে আজ জেনে নিন।

আমাদের মধ্যে অনেকেই সারাদিন ক্লান্ত থাকেন। ঘুম থেকে ওঠার পরও তাদের চোখে যেনো লেগে থাকে নিদ্রার রেশ। এরপর গোটা দিন হাই তুলতে তুলতে কাজ করেন তারা। শরীরে থাকে এনার্জির ঘাটতিও।

বিশেষজ্ঞদের কথায়, ক্লান্তির পিছনে একাধিক কারণও থাকতে পারে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শরীরে কয়েকটি ভিটামিন এবং খনিজের অভাব থেকেই এই সমস্যা নিতে পারে পিছু। এরপর এই সব ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবারকে ডায়েটে জায়গা করে দিন। আশা করছি, এতেই শরীরে ক্লান্তি দূর হবে।

আয়রণ ডেফিসিয়েন্সি​

আমাদের শরীরের প্রতিটি প্রান্তে অক্সিজেন পৌঁছে দেয় এই লোহিত রক্ত কণিকা। এবার শরীরে আয়রণের অভাব হলে দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে রেড ব্লাড সেলও তৈরি হয় না। যে কারণে পিছু নেয় অ্যানিমিয়ার মতো নানা সমস্যা। একবার এই সমস্যার ফাঁদে পড়লে সারাদিনই ক্লান্তি লেগে থাকে। সেইসঙ্গে শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরার মতো লক্ষণও ফুটে উঠতে পারে। তাই এই ধরনের সমস্যা হলে সাবধান হতে হবে। সেইক্ষেত্রে পালংশাক, ডাল, মাছ, মাংস নিয়মিত খেতে হবে। এতেই উপকার পাওয়া যাবে হাতেনাতে।

Related Post

ভিটামিন ডি’র ঘাটতি​

অনেকেই মনে করেন, ভিটামিন ডি শুধু হাড় গঠনেই সাহায্য করে। তবে বিষয়টি কিন্তু একবারেই তেমন নয়। বরং এই ভিটামিন শরীরের একাধিক কাজের সঙ্গেও জড়িত। বিশেষত: দেহে এনার্জির ভারসাম্য রাখার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই ভিটামিন। সেইসঙ্গে পেশির ক্ষমতাও বাড়ায়। তাই প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৩০ মিনিট সূর্যের আলো গায়ে লাগাতে হবে। সেইসঙ্গে ফর্টিফায়েড দুধ, মাশরুম খান। তাতে দেহে এই ভিটামিনের ঘাটতিও মিটে যাবে।

ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি মিটিয়ে ফেলুন​

লোহিত রক্ত কণিকা তৈরি ও নার্ভের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে এই ভিটামিন বি১২। তাই শরীরে এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে সারাদিন ক্লান্ত ভাব লাগে। সেইসঙ্গে কথায় কথায় হয় মুড সুইং, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে ভালো খবর হলো, আপনি যদি নিয়মিত ডিম, দুগ্ধজাত খাবার ও দানাশস্য খান, তাহলে অনায়াসে এই ভিটামিনের ঘাটতি মিটে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ম্যাগনেশিয়াম কমলে বিপদ

শরীরের শত শত কাজে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে ম্যাগনেশিয়াম। এমনকি এনার্জি তৈরি ও পেশির কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণেও এর বিরাট ভূমিকা বিদ্যমান। যে কারণে শরীরে এই খনিজের অভাব হলে বিরাট সমস্যাও হয়। আর তখন পিছু নিতে পারে একাধিক সমস্যা। তাই সবুজ শাক, আমন্ড, অ্যাভোকাডোর মতো ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া শুরু করুন।

ফোলেটের অভাব

ফোলেট কিংবা ভিটামিন বি৯ ডিএনএ তৈরি এবং নতুন কোষ তৈরির কাজে বিরাট ভূমিকা পালন করে। শুধু তা-ই নয়, এই ভিটামিন মনোযোগ ধরে রাখতে ভীষণই সাহায্য করে। তবে এই প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যেই লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। তথ্যসূত্র: এই সময়।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪ 3:30 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

বাংলাদেশের বাজারে এলো টেকনো স্পার্ক ৩০সি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ উদ্ভাবনী প্রযুক্তির শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড টেকনো তরুণ ব্যবহারকারীদের জন্য সেরা ইন-ক্লাস…

% দিন আগে

বিশ্বের সবচেয়ে বড় হ্যাকাথন: বাংলাদেশ পর্ব আয়োজন করলো বেসিস

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ১১তম বারের মতো বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস…

% দিন আগে

অপু বিশ্বাস এবার ইউটিউব চ্যানেলে উপস্থাপক!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস এবার নতুন এক পরিচয়ে হাজির…

% দিন আগে

পাকিস্তানে বন্দুকযুদ্ধ: ৬ সেনা ও ৬ সন্ত্রাসী নিহত

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পাকিস্তানের উত্তর ওয়াজিরিস্তানের স্পিনওয়াম এলাকায় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে একজন লেফটেন্যান্ট…

% দিন আগে

ইরানের হামলার সময় বাঙ্কারের মধ্যে ইসরায়েলি জুটির বিয়ে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একদিকে ইরানের হামলা আর অন্যদিকে জীবন বাঁচাতে বাঙ্কারে আশ্রয়। তবে…

% দিন আগে

সুন্দরবনের প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২১ আশ্বিন ১৪৩১…

% দিন আগে