দীর্ঘ ৭৪ বছর পর একসঙ্গে ভয়ঙ্কর ৪ ঘূর্ণিঝড়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দীর্ঘ ৭৪ বছরের মধ্যে এবারই প্রথমবারের মতো নভেম্বর মাসে চারটি ভিন্ন ভিন্ন নামযুক্ত ঝড় একই সঙ্গে শক্তিশালী হচ্ছে। ১৯৫১ সালে ঝড় সংক্রান্ত রেকর্ড শুরু হওয়ার পর এইবার ধেয়ে আসছে এই ঘূর্ণিঝড়।

যৌথ টাইফুন সতর্কতা কেন্দ্রের স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায়, ৪টি ঝড় পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের বিশাল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত যা ভিয়েতনাম হতে গুয়াম পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে। এই ৪টি ভয়ঙ্কর ঝড়ের নাম- টাইফুন ইনশিং, টাইফুন তোরাজি, ক্রান্তীয় ঝড় উসাগি ও ক্রান্তীয় ঝড় ম্যানই। ১২ নভেম্বর জাপানের আবহাওয়া সংস্থা সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছরই ফিলিপাইন একাধিক ঝড়ের কবলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে, তবে গত মাসে ধারাবাহিক টাইফুনের তীব্র গতি পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলেছে ও হাজার হাজার মানুষ এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। ৭ নভেম্বর টাইফুন ইনশিং উত্তর-পূর্ব ফিলিপাইনে আঘাত হানে, যার বাতাসের গতিবেগ ছিলো আটলান্টিকের ক্যাটাগরি ৪ হারিকেনের সমান। তবে কোনো রকম প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। ঝড়টি প্রবল বৃষ্টিপাত, উত্তাল ঢেউ ও ভূমিধস ঘটিয়ে তারপর শেষ হয়। ফিলিপাইনের ওপর দিয়ে দক্ষিণ চীন সাগরে ঢুকে যাওয়ার পর ইনশিং পশ্চিম দিকে চীনের হাইনান প্রদেশের দিকে এটি এগিয়ে যায় ও তারপর ভিয়েতনাম অভিমুখে দক্ষিণে মোড় নেয়। বর্তমানে সেখানে প্রবল বৃষ্টিপাতও হচ্ছে।

Related Post

টাইফুন ইনশিংয়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত কাগায়ান এবং ইলোকো নর্তে অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের দেখতে গিয়েছিলেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র। “যদিও আমরা সত্যিই কৃতজ্ঞ যে কোনো ধরনের প্রাণহানি ঘটেনি, তবে এই ঝড়টি যে ধ্বংসযজ্ঞ রেখে গেছে তাতে ক্ষতি হয়েছে ঘরবাড়ি, বিদ্যালয় ও জীবন-জীবিকা, এগুলো আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সময় লাগবে।

১০ নভেম্বর কাগায়ানে খাবার এবং ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের সময় মার্কোস স্থানীয় বাসিন্দাদের বলেন যে, আমরা যখন পুনরুদ্ধারে মনোযোগ দিচ্ছি, তখনই আমরা আরেকটি সম্ভাব্য ঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি যা আমাদের দিকেও ধেয়ে আসতে পারে। পরেরদিনই টাইফুন তোরাজি লুজোনের অরোরা প্রদেশের পূর্ব উপকূলে আঘাত হানে। এই ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতি আটলান্টিকের ক্যাটাগরি ওয়ান হারিকেনের সমান।

ইতিপূর্বে আরও হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এখন একটি ক্রান্তীয় ঝড়ে রূপান্তরিত হওয়া তোরাজি দক্ষিণ চীন সাগর দিয়ে অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দুর্বল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি দক্ষিণ-পূর্ব চীনের কিছু অংশে ১০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত ঘটাতে পারে। তবে দেশটি আরও একটি শক্তিশালী ঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা মাত্র ৫ দিনের মধ্যে তৃতীয়। ট্রপিক্যাল স্টর্ম উসাগি হলো লুজোনের প্রায় ৭৫০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এবং ফিলিপাইনের দিকে ধেয়ে আসার সময় এটি একটি টাইফুনে পরিণত হওয়ার আশঙ্কাও করা হচ্ছে।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on নভেম্বর ১৩, ২০২৪ 10:56 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

ইলন মাস্ককে এক লাখ সরকারি চাকরি বাতিলের দায়িত্ব দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…

% দিন আগে

গোল্ডেন আউল: ৩১ বছর ধরে চলা গুপ্তধন অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে গত ৩১ বছর ধরে চলা ‘গোল্ডেন আউল’ বিতর্কের অবসান…

% দিন আগে

হৃদয় জুড়িয়ে যাওয়া মতো এক প্রকৃতি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২৯ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে

হার্টের জন্য অত্যন্ত উপকারী কাঁচকলা: কেনো খাবেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যদি আপনি হৃদরোগের থেকে দূরে থাকতে চান তাহলে ভরসা রাখতে…

% দিন আগে

শিক্ষার্থীদের অসামান্য অর্জনের স্বীকৃতি দিলো ব্রিটিশ কাউন্সিল

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্রিটিশ কাউন্সিলের আয়োজনে রাজধানী ঢাকার রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে গতকাল…

% দিন আগে

মিডরেঞ্জের সেরা পারফর্মিং স্মার্টফোন অনার এক্স৭সি বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাশ্রয়ী দামে শক্তিশালী ব্যাটারি, দ্রুত চার্জিং সুবিধা; সাথে দৃঢ়তা ও…

% দিন আগে