তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে দূষণমুক্ত করতে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা অনেকেই জানি পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি ব্যবহারের পথে বাস্তব জগতে নানা বাধা বিদ্যমান। সহজেই সেইপথে এগোনোর কোনো সমাধানের সূত্র বিশাল এক পরিবর্তন আনতে পারে। দক্ষিণ আমেরিকায় এমনই এক প্রকল্পকে ঘিরে আশার আলো দেখা গেছে।

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে দূষণমুক্ত করতে 1তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে দূষণমুক্ত করতে 1

চিলের আটাকামা মরুভূমিতে সেরো দোমিনাদোর নামে টাওয়ারের ওপর ১০,৬০০ আয়না সূর্যের আলো নিক্ষেপ করে। সেই আলো প্রায় ১০ হাজার সূর্যের শক্তির সমান। সোলার প্যানেলের বদলে আয়না সূর্যের আলো একত্র করে গলানো লবণও উত্তপ্ত করছে। পাম্পের সাহায্যে সেই মিশ্রণ টাওয়ারের উপর পাঠানো হয়। তাপমাত্রা ৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি ছুঁতে পারে।

এই প্রণালীর বৈশিষ্ট্যই হলো- লবণ সেই উত্তাপটি ধারণ করতে পারে ও এভাবে টাওয়ারের নিচে টার্বাইনগুেলোর মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। এমনকি আকাশে সূর্যের আলো না থাকলেও সেই প্রক্রিয়াটি চলতে পারে।

Related Post

সেরো দোমিনাদোরের প্রতিনিধি ইবান আবেইয়া বলেছেন, এটা এমন এক প্রযুক্তি, যার সাহায্যে আমরা দীর্ঘ সময়ের জন্য জ্বালানি ধারণ করতেও পারি। দিনে ২৪ ঘণ্টা, সপ্তাহে ৭ দিন সেই শক্তি কাজেও লাগাতে পারি। সেই প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা বিশেষ করে গ্যাস এবং কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানির বিরুদ্ধে সংগ্রামও শুরু করতে পারি।

পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির তুলনায় জীবাশ্ম জ্বালানির একমাত্র সুবিধাও হলো তরল লবণ কেড়ে নিতে পারে। গ্যাস এবং কয়লার মতো সেটিও স্থিতিশীল এবং নিয়ন্ত্রণযোগ্য জ্বালানির উৎস, যা প্রকৃতির অস্থিরতায় ভারসাম্যও আনতে সক্ষম। লবণের মিশ্রণের অনুপাতের উপর সেই সাফল্যও নির্ভর করে।

আন্তোফাগাস্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে গবেষকরা এখনও আদর্শ মিশ্রণ তৈরির লক্ষ্যে পরীক্ষানিরীক্ষা করা হচ্ছে। স্টোরেজ ক্ষমতার আরও উন্নতি করাই তাদের মূল লক্ষ্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি মাউরো এনরিকেস বলেছেন, বর্তমানে এমন একটি মিশ্রণ ব্যবহার করা হচ্ছে, যাকে সোলার সল্ট বলা হয়ে থাকে। এরমধ্যে সোডিয়াম নাইট্রেট ও পটাসিয়াম নাইট্রেটও রয়েছে। উত্তাপ সঞ্চয়ের জন্য সেটি অবশ্য উপযুক্ত। সৌর শক্তি না থাকলেও ২৪ ঘণ্টাজুড়ে সেই লবণ শক্তির জোগানও দিতে পারে।

গ্রিন এনার্জি এখন পর্যন্ত অর্থনৈতিক গুরুত্বহীন অঞ্চলকেও সোনার খনিতে রূপান্তরিত করতে সক্ষম। এমনকি বিশ্বব্যাপী শক্তির ভারসাম্যেও পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। অনাড়ম্বর এক কন্টেইনার চিলেকে গ্রিন এনার্জির ক্ষেত্রে শীর্ষে পৌঁছাতে সাহায্য করতে পারে। ছোট হলেও এটিই হলো বিশ্বের একমাত্র ভ্রাম্যমাণ হাইড্রোজেন উৎপাদন কেন্দ্র। সেই পরীক্ষামূলক কেন্দ্রটিকে মরুভূমির মধ্যে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বড় কারখানার জন্য আদর্শ জায়গার সন্ধান চালানো হচ্ছে। সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গার সন্ধানও চলছে।

সিসিটেম প্রকল্পের প্রধান লিন্ডলে ম্যাক্সওয়েল বলেন, আমাদের প্রধান কাজই হলো এমন এক মানচিত্র তৈরি করা, যারমধ্যে উচ্চ মানের দক্ষতাসম্পন্ন হাইড্রোজেন উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত স্থান চিহ্নিত থাকবে। সেখানে এমন একটি জোন আঁকা থাকবে, যার মধ্যে হাইড্রোজেনের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন বিশেষভাবে কার্যকরও হবে। পানি ভেঙে অক্সিজেন এবং হাইড্রোজেন তৈরি করতে হলে শুধু অনেক জ্বালানিরই প্রয়োজন হয় না। সব জায়গায় বাতাস এবং পানি মোটেও একই রকমের নয়।

ম্যাক্সওয়েল মনে করিয়ে দেন যে, বাতাসের চাপ, তাপমাত্রা এবং জলবায়ু পরিস্থিতি সেই প্রক্রিয়ার দক্ষতার উপরেও প্রভাব রাখে। চিলেতে এখনও পর্যন্ত বিদ্যুতের সিংহভাগ কয়লা চালিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে আসে। ভবিষ্যতে কয়লা ছাড়া সেগুলো চালানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।

তবে চিলের পরিবেশ বাকি বিশ্বের সঙ্গে কিন্তু হুবহু মেলে না। এর পরেও সেখানে নতুন করে ভাবনার যে প্রক্রিয়া চলছে, তার কারণে বিশাল মাত্রায় বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, প্রযুক্তিগত সমাধান সূত্র ও অবশ্যই বিনিয়োগের সম্ভাবনার দ্বারও খুলে যাচ্ছে। দক্ষিণ আমেরিকার বাইরেও এর প্রভাব পড়তে বাধ্য বলে মনে করা হচ্ছে।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on ডিসেম্বর ৫, ২০২৪ 5:37 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

তীব্র গরমে পাকা পেঁপে খেলে যে উপকার পাবেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পানিশূন্যতা অর্থাৎ ডিহাইড্রেশন, পেটের গোলমাল, ত্বকের সমস্যা- সব মিলিয়ে নাজেহাল…

% দিন আগে

জেমিনি চ্যাটবটে এবার যুক্ত হচ্ছে সার্কেল টু সার্চের মতো সুবিধা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের দ্রুত তথ্য খোঁজার সুযোগ দেওয়ার জন্য সম্প্রতি ‘সার্কেল…

% দিন আগে

দীঘির সঙ্গে অভিনয় করছেন ইমন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই প্রথমবারের মতো সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করতে চলেছেন মামনুন ইমন…

% দিন আগে

অফিসে জুতো পরা বারণ: যততত্র ছড়িয়ে রয়েছে পোষ্যের মল-মূত্র!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একটি সংস্থায় কাজ করতে হলে কর্মীদের মেনে চলতে হয় বিদ্‌ঘুটে…

% দিন আগে

অসম্ভব সুন্দর এক প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২…

% দিন আগে

খালি পেটে ব্যায়াম করলে কী ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে পারেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা সবাই জানি শরীরচর্চা করলে শরীর ফিট থাকে। ওজনও তখন…

% দিন আগে