প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে দুধ কখন ও কতোটা খেলে উপকার হবে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনি দুধ কোন সময় খাচ্ছেন ও কতোটুকু খাচ্ছেন, তা জানা জরুরি। সময় ধরে এবং পরিমাপ মতো দুধ খেলে তবেই তা শরীরের উপকারে লাগবে।

পুষ্টিবিদেরা সব সময় দুধকে সুষম খাবারের তালিকাতেই রাখেন। সদ‍্যোজাত শিশু হতে বয়স্ক মানুষ, দুধ সকলের জন্যই উপকারী। যদি না দুধে অ্যালার্জি থাকে বা দুধ খেলে গ্যাস হয়। এই বিষয়ে পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলেছেন, “দুধ কোন সময় খাচ্ছেন ও কতোটুকু, তা জানা জরুরি। কারণ অনেকেই দুধ সকালে খেয়ে ফেলেন, তারপরেই গলা-বুক জ্বালা শুরু হয়। যাদের গ্যাসের ধাত, তাদের সকালে দুধ না খাওয়াই ভালো। বরং দুধ খেতে হবে রাতে। সেই ক্ষেত্রে ঠাণ্ডা দুধ খেলেই উপকার বেশি পাবেন।” তার মতে, শিশুদের জন্য আবার দুধ খাওয়ার আদর্শ সময়ই হলো সকালবেলা। তবে রাতে ঘুমোনোর আগে দুধ খেলে অনিদ্রার সমস্যা যেমন দূর হবে, ঠিক তেমনি শরীর অনেক বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম শোষণ করতে পারবে।

ক‍্যালশিয়াম, ফসফরাস, ভিটটামিন, পটাশিয়াম, ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ দুধ তখনই শরীরের উপকারে লাগবে যখন সেটি সঠিক সময় ও যথাযথ পরিমাণে খাওয়া হবে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এমনটিই দাবি করেছেন। ‘নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন’ বিজ্ঞান পত্রিকায় এই বিষয়ে রিপোর্টও ছাপা হয়। বিজ্ঞানী ওয়াল্টার উইলেটের মত হলো, একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী কিংবা পুরুষ দিনে যদি পরিমাপ মতো দুধ খান, তাহলে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি তো হবেই না, বরং বিবিধ শারীরিক সমস্যা থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে। ভারতের মতো দেশের হিসেবে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা দিনে ২-৩ কাপ দুধ খেতে পারেন, তবে এর বেশি নয়। একজন পুরুষ সেখানে ৩-৪ কাপ দুধ খেতেই পারেন। তবে যদি দুগ্ধজাত দ্রব্য, যেমন পনির, ছানাও খান, তাহলে দিনে ২ কাপের বেশি দুধ খাওয়া চলবে না।

Related Post

শিশুদের ক্ষেত্রে এই পরিমাপ ভিন্ন। ১২ হতে ২৪ মাসের শিশু দিনে ২-৩ কাপ দুধ খেতেই পারে। ২ হতে ৫ বছরের শিশু দিনে দুই থেকে আড়াই কাপের বেশি দুধ খাওয়া যাবে না। আবার ৫ হতে ৮ বছর বয়সের শিশুরাও দিনে আড়াই কাপের মতো দুধ খেতেই পারে। ৯ বছরের উপরে দিনে ৩ কাপের মতো দুধ খাওয়া যেতে পারে। আর যদি গরুর দুধে অ্যালার্জি থাকে, তাহলে উদ্ভিদজাত দুধ খাওয়া যেতেই পারে। বিভিন্ন ধরনের বাদাম, ওট্‌স, নারকেল এবং সয়াবিন থেকে এই দুধ পাওয়া যায়। আমন্ড মিল্ক, কোকোনাট মিল্ক, ওট্‌ মিল্ক ও সয়া মিল্ক সবচেয়ে বেশি পরিচিত। প্রাণিজ দুধের বিকল্প হিসেবে বেছে নেওয়া যেতে পারে এই দুধগুলো। তবে শিশুদের দুধ খাওয়ানোর পূর্বে দেখে নিতে হবে, তারা দুধ হজম করতে পারছে কি-না। যদি দুধ খেলেই বমি ভাব আসে বা গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে দুধ না খাওয়ানোই ভালো। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on জানুয়ারী ৬, ২০২৫ 3:59 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

নতুন বছর ২০২৫ সালে হোয়াটসঅ্যাপের উপহার একগুচ্ছ ফিচার

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মেসেজিং এন্ড কলিং প্ল্যাটফর্ম হলো…

% দিন আগে

নুহাশ হুমায়ূন ‘বেসুরা’য় ব্যতিক্রমি চরিত্রে জয়া আহসান!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নুহাশের চলচ্চিত্র মানেই এক অন্যরকম অনুভূতি। আর সেই চলচ্চিত্র ‘বেসুরা’য়…

% দিন আগে

গাজার মতোই পশ্চিম তীরকেও ধ্বংসস্তূপে পরিণত করতে চায় ইসরায়েল: হারেৎজ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজার মতোই অধিকৃত পশ্চিম তীরকেও ধ্বংসস্তূপে পরিণত করতে চাই ইসরায়েলি…

% দিন আগে

সোনা ভেবে রাস্তা থেকে পাথর কুড়িয়ে এনেছিলেন: ১৫ বছর পর আসল সত্যি জেনে চক্ষু চড়কগাছ!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সোনা ভেবে রাস্তা থেকে পাথর কুড়িয়ে এনেছিলেন এক ব্যক্তি। ১৫…

% দিন আগে

নোয়াখালীর ঐতিহাসিক বজরা শাহী মসজিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৬ পৌষ ১৪৩১…

% দিন আগে

শীতে কোন পদ্ধতিতে মুখে মধু মাখবেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতে মধু মাখলে বেশ উপকার পাওয়া যাবে। যে কারণে এই…

% দিন আগে