স্ত্রীকে ‘শিক্ষা’ দেওয়ার জন্য আয়ার সঙ্গে প্রেম! তারপর কী ঘটলো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মেয়েকে দেখাশোনা করার জন্যই বহাল আয়ার সঙ্গে ছদ্ম প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন জনৈক তরুণ। সরল তরুণী ভেবেছিলেন ধনী গৃহকর্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হলে ভবিষ্যৎ নিয়ে তাকে আর ভাবতে হবে না।

প্রাক্তন স্ত্রী’র সঙ্গে বিবাদ মেটানোর জন্য আয়ার সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করেছিলেন ওই ব্যক্তি। স্ত্রীর সঙ্গে পুনর্মিলনের পর আয়াকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন ওই যুবক। কিন্তু প্রেমে প্রতারিত হয়ে প্রতিশোধ নিলো আয়া। প্রাক্তন মালিককে ছুরি মেরে খুন করলেন ওই আয়া। এক তুতো ভাইয়ের সঙ্গে শলা করে দু’জনে মিলে আঘাত হানেন ওই তরুণের উপর। ছুরির আঘাতে মারাও যান তিনি। সম্প্রতি এই ঘটনাটি ঘটেছে চীনের এক শহরে। ধরা পড়ার পর তরুণী আয়া এবং তার ভাইয়ের উপর নেমে আসে শাস্তির খাঁড়া।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুসারে জানা যায়, শি নামে ওই মৃত তরুণ ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। স্নাতকোত্তর পড়ার সময় হি নামে জনৈকা তরুণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়। কয়েক বছর একসঙ্গে থাকার পর তারা বিয়ে করেন এবং একটি সন্তান জন্মায় তাদের। ব্যবসায়ে উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন ঘটে শির। স্ত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেন শি। সম্পর্কে অবনতি ঘটে এবং শেষে বিবাহবিচ্ছেদও হয় তাদের। মেয়ের হেফাজতও পান শি। মেয়েকে দেখাশোনা করার জন্য লি নামে এক তরুণীকে নিয়োগ করেন ওই ব্যবসায়ী।

বিবাহবিচ্ছেদের পর শি নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং স্ত্রীর সঙ্গে মিটমাট করার চেষ্টাও করতে থাকেন। তবে অহংবোধের কারণে স্ত্রীর কাছে এই প্রস্তাব রাখতে পারেননি তিনি। সেই কারণে তিনি স্ত্রীর মনে ঈর্ষা জাগানোর পরিকল্পনাও ফাঁদেন। মেয়েকে দেখাশোনা করার জন্য লি’য়ের সঙ্গে ছদ্ম প্রেমের সম্পর্কও গড়ে তোলেন। সরল লি ভেবেছিলেন যে, ধনী গৃহকর্তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হলে ভবিষ্যৎ নিয়ে তাকে আর ভাবতে হবে না। শি দ্রুত তার প্রেমেই পড়ে যান ও শীঘ্রই তাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠও হয়ে ওঠে।

শি প্রতিবেশীদের কাছে এবং নেটমাধ্যমে ছবি ছড়িয়ে দাবি করেন যে, তিনি লি’য়ের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন। এমনকি তারা একটি প্রাক্‌বিবাহের একটি ফটোশুটের ব্যবস্থাও করেন। এইসব কিছু করে প্রাক্তন স্ত্রী’র মনে ঈর্ষা জাগাতে সফলও হন তিনি। মেয়ের খোঁজ নেওয়ার অছিলায় শিয়ের বাড়িতে যাতায়াত শুরু করে দেন হি। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে সমস্ত ভুল বোঝাবুঝিরও অবসান ঘটে। এই দম্পতির পুনর্মিলন হয়। স্ত্রীকে ফিরে পেয়ে লি’কে কাজ থেকে বরখাস্ত করেন শি। তাকে এই নাটকের অংশীদার হওয়ার জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে কিছু অর্থও দিতে চান।

প্রেমে প্রতারিত হয়ে প্রতিশোধ নিতে লি এক সন্ধ্যায় লাঠি দিয়ে শি’য়ের মাথায় আঘাত করেন লি’য়ের ভাই। আর লি ছুরি নিয়ে আঘাত করেন। লি তদন্তকারীদের বলেন যে, তিনি কেবলমাত্র শি’কে শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন। লি’কে যাবজ্জীবন ও তার ভাইকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org