মাথা ব্যথার জন্য আপনাকে যা করতে হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাথা ব্যথা একটি সাধারণ বিষয় তবে অস্বস্তিকর শারীরিক সমস্যা, যা প্রায় প্রত্যেক মানুষই জীবনের কোনো না কোনো সময় অনুভব করেন।

এই মাথা ব্যথা কখনও স্বল্প সময়ের জন্য থাকে, আবার কখনও দীর্ঘস্থায়ী আকারও ধারণ করতে পারে। মাথা ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন- মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব, ডিহাইড্রেশন, দৃষ্টিজনিত সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, মাইগ্রেন বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা। তবে সঠিক জীবনযাপন এবং কিছু কার্যকর উপায় অনুসরণ করলে মাথা ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। ঘুমের অভাব মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রে চাপ সৃষ্টি করে, যা মাথা ব্যথার প্রধান কারণগুলোর একটি। প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। একইভাবে মানসিক চাপ বা উদ্বেগও মাথা ব্যথা বাড়ায়, তাই নিয়মিত ধ্যান, যোগব্যায়াম বা হালকা ব্যায়াম করলে মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়।

Related Post

পর্যাপ্ত পানি পান করা মাথা ব্যথা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শরীরে পানির অভাব বা ডিহাইড্রেশন হলে রক্তের ঘনত্ব বেড়ে যায়, ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমে গিয়ে ব্যথা শুরু হয়। তাই প্রতিদিন অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনাও দরকার। অতিরিক্ত চা, কফি, জাঙ্ক ফুড বা প্রক্রিয়াজাত খাবার মাথা ব্যথা বাড়াতে পারে। বরং তাজা ফলমূল, সবজি, বাদাম, ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ মাছ এবং আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। এসব খাবার রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং প্রদাহ কমায়।

স্ক্রিন টাইম বা মোবাইল এবং কম্পিউটার ব্যবহার সীমিত করা দরকার। দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের পেশি ক্লান্ত হয়ে মাথা ব্যথা হতে পারে। কাজের ফাঁকে চোখ বন্ধ করে ৫–১০ মিনিট বিশ্রাম নেওয়া কার্যকর।

প্রাকৃতিক উপায় ব্যবহার করেও মাথা ব্যথা কমানো যায়। যেমন- কপালে ঠান্ডা পানি বা বরফের প্যাক লাগানো, হালকা মালিশ করা, পুদিনা বা আদা চা পান করা। এইসব উপাদান স্নায়ু শিথিল করে ব্যথা উপশমে সাহায্য করে।

যদি মাথা ব্যথা নিয়মিত বা তীব্র আকারে দেখা দেয় এবং চোখে ঝাপসা দেখা, বমি বা মাথা ঘোরা মতো উপসর্গ থাকে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এটি মাইগ্রেন, সাইনাস বা উচ্চ রক্তচাপের ইঙ্গিত হতে পারে।

তাই বলা যায়, মাথা ব্যথা একেবারে অবহেলা করার মতো বিষয় নয়। সঠিক বিশ্রাম, খাদ্যাভ্যাস, মানসিক প্রশান্তি এবং পর্যাপ্ত পানি গ্রহণের মাধ্যমে এটি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। নিয়মিত সুস্থ জীবনযাপনই মাথা ব্যথা প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on অক্টোবর ১৫, ২০২৫ 2:26 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

View Comments

Recent Posts

দীপিকা ছেলের জন্য সুস্থ হয়ে উঠতে চান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতীয় অভিনেত্রী দীপিকা কক্কর যে কোনো মূল্যেই হোক না কেনো…

% দিন আগে

নাখোশ ইউরোপ: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে খুশি রাশিয়া

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদিত নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলকে…

% দিন আগে

কানাডায় বরফের নিচে আয়োজন হলো পার্টি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কানাডার কুইবেকে কিছু তরুণ বরফে জমে যাওয়া হ্রদের নিচে ডুব…

% দিন আগে

বরফে আচ্ছাদিত রাস্তা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…

% দিন আগে

শীতে ঠোঁট ফাটা হতে রক্ষা পেতে করণীয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…

% দিন আগে

নাসার রোভার মঙ্গল গ্রহে বজ্রপাতের সম্ভাব্য শব্দ ধারণ করলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা পরিচালিত পারসিভিয়ারেন্স রোভার সম্প্রতি…

% দিন আগে