মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারির বাংলাদেশ সফর ॥ দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার উন্নতি ঘটতে পারে

ঢাকা টাইমস্‌ রিপোর্ট ॥ বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বড়ই নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। আর ঠিক এরকম একটা পরিস্থিতিতে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সফর বেশ গুরুত্ব বহন করছে বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছেন। এতে দেশের বড় দুটি দলের নীতিগত কিছু পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

জানা গেছে, হিলারি ক্লিনটনের সফর নিয়ে সন্তুষ্ট বিএনপি। দলটির নেতাদের মতে, সফরে দুই দেশের মধ্যে ‘পার্টনারশিপ ডায়ালগ’ সই হলেও প্রকৃতপক্ষে মূল ফোকাস হয়েছে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ, যা এতদিন অভিযোগ আকারে বলে এসেছে বিএনপি। দলটি মনে করে রাজনৈতিক সংকট নিরসনের এজেন্ডা নিয়েই বাংলাদেশে এসেছেন হিলারি। নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচন হবে না- এ বার্তাই তিনি দিয়ে গেছেন। বিশেষ করে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন, ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা, পোশাক শ্রমিক অধিকার সংগঠনের নেতা আমিনুল ইসলাম হত্যাকাণ্ড, আইনের শাসন অক্ষুণ্ন রেখে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখাসহ হিলারির মুখ থেকে উঠে আসা অধিকাংশ ইস্যুই বিএনপির; যা হিলারির মাধ্যমে উত্থাপিত হয়েছে। আর এসব সমস্যা সমাধানে গণতন্ত্রের স্বার্থে দুই দলকে সংলাপে বসার তাগিদ দিয়েছেন হিলারি- যা পক্ষান্তরে সরকারকেই চাপের মধ্যে ফেলছে বলে মনে করেন দলটির নেতারা।

অপরদিকে ড. ইউনূস ইস্যুতেও সরকারকে ‘একহাত নিয়েছেন’ বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আলোচনার একপর্যায়ে খালেদা জিয়াকে হিলারি ‘মাই পারসোনাল ফ্রেন্ড’ বলেও সম্বোধন করেন। ফলে হিলারির সফরের মধ্য দিয়ে সার্বিকভাবে বিএনপি লাভবান হয়েছে বলে মনে করে দলটি।

বৈঠকে উপস্থিত বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিরোধীদলীয় নেতার অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। তবে তিনি যেসব পয়েন্টে কথা বলেছেন সেগুলো নিয়ে বিএনপি এরই মধ্যে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। তাই হিলারির সফরের মধ্য দিয়ে বিএনপির দাবির যৌক্তিকতা প্রমাণ হল। তার মতে, আমরা বলার আগেই দেখা গেল পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে কনসার্ন। ফলে তার কাছে অভিযোগ আকারে কিছু বলতে হয়নি। বৈঠকে উপস্থিত থাকা আরেক নেতা বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সাবিহ উদ্দিন আহমেদের মতে, হিলারির সফরের মধ্য দিয়ে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটি বার্তা স্পষ্ট। দ্বিতীয়ত, গুম-হত্যা-নির্যাতনের রাজনীতিও যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায় না। ফলে তাদের এ অবস্থান বিএনপির পক্ষেই গেছে।

জানা গেছে, হিলারির সফরকে সামনে রেখে দলটির নেতারা কয়েকদিন আগেই ‘হোমওয়ার্ক’ করে রেখেছিলেন; যা খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠককালে স্ববিস্তার তুলে ধরা হয়েছে। যদিও বলা হয়েছে, নিজ দেশের সমস্যার কথা অভিযোগ আকারে তুলে ধরা ‘ইনডিসেন্ট মনে করে বিএনপি। তবুও বলতে হচ্ছে; দেশে আইনের শাসন নেই। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গুম এবং তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চলছে। একদলীয় নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারের গোপন ইচ্ছা রয়েছে বলেও হিলারিকে জানায় বিএনপি। সূত্রমতে, পরিস্থিতি টের পেয়ে ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা এবং পোশাক শ্রমিকনেতা আমিনুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে অবস্থান তুলে ধরার জন্য সরকারের পক্ষ থেকেও প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকারের এ ব্যাখ্যায় কোন সন্তুষ্টি হিলারির মুখ থেকে শোনা যায়নি। সরকারের তদন্তেও সন্তোষ প্রকাশ করেননি হিলারি। হিলারির সফর নিয়ে সরকার পক্ষের কোন উচ্ছ্বাসও লক্ষ্য করা যায়নি।

ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে হিলারি গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। নাম নিয়ে তিনি বলেন, মি. আলীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা দ্রুত তদন্ত করে অপরাধীদের খুঁজে বের করার জন্য এরই মধ্যে সরকারকে বলেছি। এ সময় ইলিয়াস আলীকে একজন ‘প্রমিন্যান্ট পলিটিক্যাল অর্গানাইজার’ বলে আখ্যায়িত করে হিলারি বলেন, গণতন্ত্রের স্বার্থে এ-জাতীয় ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না। ইলিয়াসের ছোট মেয়ে সাইয়ারাকে দেখে হিলারি দুঃখ প্রকাশ করে তাকে সহানভূতি জানান। হিলারি বলেন, গুম-হত্যার রাজনীতি যুক্তরাষ্ট্র বন্ধ দেখতে চায়। নির্বাচন প্রশ্নে সংলাপের বিকল্প নেই জানালে খালেদা জিয়া বলেন, তিনি শুরু থেকেই সংলাপের পক্ষে এবং এরই মধ্যে এ ব্যাপারে বিএনপি তার অবস্থানের কথা জানিয়েছে। রাষ্ট্রপতির কাছেও সংলাপের দাবি তোলা হয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ রকম একটি পরিস্থিতিতে হিলারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া, নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুস, ফজলে হাসান আবেদ সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আর এসব বৈঠক থেকে তাঁর যে মতামত বেরিয়ে এসেছে তা থেকে বোঝা যায়, তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল আছেন। হিলারি সরকার এবং বিরোধী দল উভয়কেই যে বার্তা দিয়ে গেছেন, তাতে স্পষ্ট বোঝা যায়, রাজনৈতিক হানাহানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাইনা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাই, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন যা সকল দল অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে।

এহেন পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারির সফর বাংলাদেশের রাজনীতি তথা আপামর জনসাধারণের জন্য একটি শুভ বার্তা বলে কূটনৈতিক মহলে আলোচিত হচ্ছে। কারণ সামপ্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতি অত্যান্ত সংঘাতময় হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতি থেকে সাধারণ জনগণ নিস্তার পাওয়ার জন্য উদ্বিগ্ন দিন কাটাচ্ছে। আর ঠিক সেই সময় বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর একটি রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারির বাংলাদেশ সফর এদেশের জনগণকে স্বস্থির বার্তা নিয়ে এসেছে বলে সকলের ধারণা।

স্টাফ রিপোর্টার

View Comments

  • Being a die hard patriot fan, it is hard for me to acknowledge when they get flat out dominated in every singe aspect of the game. But I must tip my cap to Drew Brees, Sean Payton, and the rest of the New Orleans Saints. Last night represented one of the greatest games i have witnessed a quarterback play. This is saying a lot, seeing how i witness Tom Brady and Peyton Manning play every week.
    The Patriot's defense would be the easiest to blame, but do they really deserve it? I thought they played pretty well, but there just isnt any possible way to defend against a perfectly thrown ball. And 18 out of 23 times last night, Brees delivered a perfectly thrown ball.
    If Patriots fans want someone to blame, i suggest the coaching staff. Where was the pressure on brees? It seemed like he had an eturnity to scan the feild, pump fake one way, look to his 3rd or even 4th receiver, and deliver a strike downfeild without being touched every play. Clearly we couldn't even stop the saints offense when we werent sending pressure, so why not take a shot at pressuring Brees and causing a turnover. on the other sideline, Sean Payton coached a brilliant game defensively, rotating fom man to man, to a 2 man rush, to a 3 man rush, rolling to zone coverage. Brady had no idea what to expect.

  • Get mostly since on obtain the optimum ease and comfort. It possesses a stacked three-inch heel and it is perfect for any circumstance. Protect these for almost any certain day to the city should you never truly feel like sporting additional tall pumps together with a dress. You'll be in a position to even now seem revolutionary whilst sporting because of the reality with each other with skinny jeans. Place on the natural leather hat to complete the appearance.

Recent Posts

এবার চীনও ইলন মাস্কের স্টারলিংকের আদলে স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক তৈরি করতে যাচ্ছে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমানে পুরো বিশ্বই প্রযুক্তির উৎকর্ষে আবর্তিত হচ্ছে। বিশেষ করে স্যাটেলাইট…

% দিন আগে

‘ওম্যান অব দ্য ইয়ার’ দক্ষিণী তারকা সামান্থা রুথ প্রভু!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘ওম্যান অব দ্য ইয়ার’ এবার ভারতীয় সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য…

% দিন আগে

ঐক্য সম্মেলনে ইরানের জাতীয় সংগীতে দাঁড়ালেন না আফগান মন্ত্রী: কিন্তু কেনো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঐক্য সম্মেলনে ইরানের জাতীয় সংগীতে দাঁড়ালেন না আফগান মন্ত্রী: কিন্তু…

% দিন আগে

ট্রেনের দরজায় ঝুলে কেরামতি: রিল বানাতে গিয়ে লোহার স্তম্ভে বাড়ি খেলেন এক তরুণী!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চলন্ত ট্রেনের পাদানিতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক তরুণী। পাদানিতে দাঁড়িয়ে ট্রেনের…

% দিন আগে

এই খাড়া পাহাড়গুলো দেখতে কেমন লাগছে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৬ আশ্বিন ১৪৩১…

% দিন আগে

রোগা হওয়ার জন্য জগিং শুরু করেছেন: কয়েকটি ভুলে সব পরিশ্রমই বৃথা যেতে পারে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গুণীজনরা বলে থাকেন, ছোট ছোট লক্ষ্য আপনাকে স্থির করতে। সেই…

% দিন আগে