ঢাকা টাইমস্ রিপোর্ট ॥ সামপ্রতিক সময়ে রেলওয়ে যাত্রী পরিবহনে উৎসাহ বেড়েছে। অপরদিকে মালামাল পরিবহনে নানা সমস্যার কারণে ব্যবসায়ীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, কমলাপুর অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) পরিচালনায় রেলওয়ে ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে চরম মতবিরোধ চলছে। আইসিডির আয় বণ্টন ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের মতবিরোধে মালামাল ওঠানামা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মাসের পর মাস মালামাল আটকে থাকায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। আইসিডির কর্মকাণ্ডে অচলাবস্থা, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে রেলপথে মালামাল পরিবহনে অনীহা বাড়ছে ব্যবসায়ীদের। অনেক ব্যবসায়ী এখন রেলপথে মালামাল পরিবহন না করে স্থলপথে পরিবহন করছেন। দু’পক্ষের ১৪ বছরের চুক্তি শেষে এক বছর বাড়ানো হলেও নতুন করে চুক্তি করা নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে। ২০১১ সালের ২৭ নভেম্বর আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় যোগাযোগমন্ত্রী ও নৌপরিবহনমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুই মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ১০ বছরের (২০১২-২০২২) জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নতুন করে একটি খসড়া চুক্তি করেন। তবে হিস্যা নিয়ে বিরোধ থাকায় রেলপথ মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত চুক্তিতে সই করেনি। রেলপথ মন্ত্রণালয় সই না করলেও এ বছরের জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষই কমলাপুর আইসিডি পরিচালনা করছে। খবর পত্রিকা সূত্রের।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ১৪ বছরের চুক্তি করে রেল মন্ত্রণালয়। ২০১০ সালে এ চুক্তি শেষ হলে তা এক বছর বাড়ানো হয়। এ চুক্তির শেষে রেলওয়ের এককভাবে কমলাপুর আইসিডি পরিচালনা করার কথা ছিল। রেল মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ বর্তমানে অনৈতিকভাবে আইসিডি পরিচালনা করছে। আইসিডির লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ নয়, ৭৫ থেকে ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ রেলের পাওয়ার কথা। তারা বলেন, রেল মন্ত্রণালয় এককভাবে এটি পরিচালনা করতে পারে। এতে রেলওয়ের লোকসান যেমন কমবে, তেমনি কর্মসংস্থান ও রাজস্ব বাড়বে। রেলওয়ের নিজস্ব জমির ওপর কমলাপুর আইসিডি প্রতিষ্ঠিত। আইসিডির দফতর, গুদামঘর, ইলেকট্রিক্যাল ও অন্য সব স্থাপনাও রেলওয়ের সম্পত্তি। বিদ্যমান রাজস্ব ভাগাভাগির হার রেলওয়ের জন্য মোটেও অনুকূল নয়, বরং ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের চুক্তিতে সব খরচ বাদে আয়ের ৬৫ শতাংশ পেত রেলওয়ে। বাকি ৪৫ শতাংশ পেত বন্দর কর্তৃপক্ষ। ২০১২ সালের চুক্তিতে বলা হয়েছে, সব খরচ বাদে অবশিষ্ট আয়ের ৫০ শতাংশ পাবে রেলওয়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এটা মেনে নেয়া যায় না। তিনি বলেন, রেল মন্ত্রণালয় গঠিত হওয়ায় রেলওয়েতে যেমন জবাবদিহিতা বেড়েছে, তেমনি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও কর্মদক্ষতা দেখাতে তৎপর হয়ে উঠেছেন। এ চুক্তি বাতিল করে রেল কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়ে আইসিডি পরিচালনা করা সম্ভব। এতে রেলওয়ের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় বাড়বে। সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান কেন ১৫ শতাংশ কম অর্থে নতুন করে ১০ বছরের চুক্তি করেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা গেছে, আইসিডিতে অনিয়মের কারণে মালামাল পরিবহনে দীর্ঘসময় লাগছে। আগে যে মালামাল ১০ ঘণ্টায় পরিবহন করা যেত এখন তাতে সময় লাগছে ২০ থেকে ২৫ ঘণ্টা। কখনও কখনও ৩০ থেকে ৩৫ ঘণ্টাও লাগছে। মালামালভর্তি একটি কনটেইনার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পাঠাতে রেলকে ভাড়া দিতে হয় তিন থেকে ছয় হাজার টাকা। অপরদিকে আইসিডিতে একটি কনটেইনার ওঠাতে বা নামাতে দিতে হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। চরম অনিয়মে বন্দর থেকে দ্রুত কনটেইনার আনা-নেয়া ব্যাহত হচ্ছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া আইসিডিতে মালামাল পৌঁছলেই ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি শুরু হয়। নানাভাবে নাজেহাল হন তারা। কনটেইনার ওঠানো ও নামানোর কাজে নিয়োজিত ভেলমেটের সমস্যা হরহামেশা থাকে। অবশ্য টাকা দিলেই সব দ্রুত ঠিক হয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকায় মালামাল আনতে সময় লাগত ৭ থেকে ১০ দিন। কিন্তু এখন সময় লাগছে দ্বিগুণেরও বেশি। অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যবসায়ীরা এখন রেলপথে মালামাল পরিবহন না করে স্থলপথে পরিবহন করছেন।
কমলাপুর আইসিডিতে কর্মরত ডিটিএম আহমেদুল করিম চৌধুরী জানান, আইসিডিতে কোন দুর্নীতি কিংবা অনিয়ম হচ্ছে না। তবে নতুন করে ১০ বছর মেয়াদি চুক্তিতে রেলওয়ের চূড়ান্ত স্ব্বাক্ষর না হওয়ায় দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কিছুটা জটিলতা দেখা দিচ্ছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ওয়াগন ও ইঞ্জিন সংকট থাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে দৈনিক দুটি ট্রেন পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চট্টগ্রাম প্রান্তে আমদানি পণ্য বোঝাই কন্টেইনারের জট ও ঢাকা প্রান্তে খালি কন্টেইনারের জট লেগে থাকছে। এছাড়া ট্রেন চলাচলের সুনির্দিষ্ট সময়সূচি রক্ষা করতে না পারায় অর্থাৎ গ্যারান্টিড সার্ভিসের অভাবে আইসিডির ওপর ব্যবহারকারীরা বিশেষত তৈরি পোশাক রফতানীকারকরা আস্থা হারিয়ে ফেলছেন। তিনি বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ লাভের আশায় নয়, সেবার মনোভাব নিয়েই এ আইসিডিতে কাজ করছেন।
রেলওয়ে মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোঃ আবু তাহের বলেন, আগের চুক্তিতে ৬৫ শতাংশ অর্থ রেল পেত। নতুন চুক্তিতে ৫০ শতাংশ অর্থ রেলওয়ে পাবে বলে বলা হচ্ছে। রেল তার হিস্যা অনুযায়ী সবকিছু নেবে। হিস্যা ভাগাভাগি অযৌক্তিক হওয়ায় রেল চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করছে না। এ নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি করা দরকার। তা নাহলে রেলওয়ের আয় যেমন কমে যাবে তেমনি রেলওয়ের আয়ের একটি মাধ্যম নষ্ট হয়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি পাকা আম খেলে রক্ষে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই গ্রীষ্মে শুধুমাত্র শরীরই নয়, গরম হচ্ছে আমাদের স্মার্টফোনটিও। ফোন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক সময় ছোট পর্দার ব্যস্ত মুখ হিসেবে পরিচিত ছিলেন মোজেজা…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই জঙ্গলের মধ্যে নদী রয়েছে। রয়েছে সার দেওয়া গাছ। চারপাশে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমানে পড়াশোনার জন্য দিনের বেশির ভাগ সময় কম্পিউটারে চোখ রাখতে…
View Comments
These are some great examples. Thank you for sharing.
hey captain, i've an idea..
I just want to say I am just all new to weblog and really savored you're website. More than likely I’m going to bookmark your site . You certainly come with fabulous articles and reviews. Thanks a lot for revealing your website.