ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের কনডেম সেলে দুঃসহ জীবন কাটছে। রায় হয়ে যাওয়ার পরও বছরের পর বছর দণ্ডপ্রাপ্তদের মানবেতন জীবন যাপন আইনের চোখে কতখানি অপরাধ তা ভেবে দেখা দরকার।
জানা গেছে, চূড়ান্ত বিচারের আশায় কারাগারে সহস্রাধিক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বছরের পর বছর অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। আইনি জটিলতার কারণে তাদের বিচার প্রক্রিয়া শেষ হচ্ছে না। ফলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কারাবন্দি আসামিদের কনডেম সেলের দুঃসহ জীবনের ইতি ঘটছে না সহজেই। আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা আহসানউল্লাহ মাস্টারকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল ২০০৪-এর ৭ মে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করে ২০০৫ সালের ১৫ মে। রায়ে ২২ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। এদের মধ্যে ১৮ জন আসামি কারাগারে আটক রয়েছেন। আইন অনুযায়ী শুনানির জন্য মামলাটি ২০০৫ সালেই হাইকোর্টে আসে। এরপর কেটে গেছে ৭ বছরেরও বেশি সময়। এখন পর্যন্ত এ মামলার ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ডাদেশ) শুনানি হয়নি। এরকম পাঁচ শতাধিক ডেথ রেফারেন্স মামলা বছরের পর বছর নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। বিচারের ক্ষেত্রে এ ধরনের দীর্ঘ প্রক্রিয়া ন্যায় বিচারকে ব্যাহত করে বলে মনে করেন অনেকেই। নিম্ন আদালত থেকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়ার পর তা নিশ্চিত করার জন্যে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পাঠানো হয়। জানা গেছে, ১৪ জুন পর্যন্ত হাইকোর্টে ৫২৭টি ডেথ রেফারেন্স মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে। এর মধ্যে ২০০৫ সালের আগের কোন ডেথ রেফারেন্স মামলা হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় নেই। ২০০৫ সালে একটি মামলাই শুনানির অপেক্ষায় আছে। আর সেটি হলো আলোচিত আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স।
জানা যায়, ২০০৬ সালে হাইকোর্টে পাঠানো ডেথ রেফারেন্স শুনানির অপেক্ষায় আছে ৪৫টি, ২০০৭ সালে পাঠানো ডেথ রেফারেন্স শুনানির অপেক্ষায় আছে ৯১টি, ২০০৮ সালের পাঠানো ডেথ রেফারেন্স ৮০টি। ২০১০, ১১ ও ১২ সালে পাঠানো একটি ডেথ রেফারেন্সেরও নিষ্পত্তি হয়নি। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রায় প্রতি বছরই ডেথ রেফারেন্স মামলা যেহারে পাঠানো হয়, নিষ্পত্তি হয় তার চেয়ে কম হারে। এর পেছনে এ ধরনের মামলা নিষ্পত্তিতে কমসংখ্যক বেঞ্চ থাকা এবং পেপার বুক তৈরির ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতাকে দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে সম্প্রতি এ ধরনের মামলা নিষ্পত্তিতে বেঞ্চের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে চারটি বেঞ্চ এ ধরনের মামলা নিষ্পত্তি করছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ কারণে ডেথ রেফারেন্স মামলার জট আর না বাড়লেও এ জট কমেনি।
একটি রিপোর্টে বলা হয়, দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময়ে এ ধরনের মামলা নিষ্পত্তির চিত্র থেকে দেখা যায়, ২০০০ সালে হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ডাদেশ মামলা আসে ৪১টি। ওই বছর নিষ্পত্তি হয় ৪৪টি মামলা। ২০০১-এ মৃত্যুদণ্ডাদেশ মামলা আসে ৫৩টি, নিষ্পত্তি হয় ৩টি। ২০০২-এ মৃত্যুদণ্ডাদেশ মামলা আসে ৬৪টি, নিষ্পত্তি হয় ৩৭টি। ২০০৩-এ মৃত্যুদণ্ডাদেশ মামলা আসে ৬৬টি, নিষ্পত্তি হয় ৪৫টি। ২০০৪-এ মৃত্যুদণ্ডাদেশ মামলা আসে ১৭৬টি, নিষ্পত্তি হয় ১০০টি। ২০০৫-এ হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ডাদেশ মামলা আসে ১৭৫টি, নিষ্পত্তি হয় ৪৫টি। ২০০৬-এ মৃত্যুদণ্ডাদেশ মামলা আসে ১১২টি। ওই বছর নিষ্পত্তি হয় ৬৪টি। ২০০৭-এ মৃত্যুদণ্ডাদেশ মামলা আসে ১০২টি, নিষ্পত্তি হয় ৪৮টি। ২০০৮-এ মামলা আসে ১৩৭টি, নিষ্পত্তি হয় ১৩২টি। ২০০৯-এ আসে ৮৩টি, নিষ্পত্তি হয় ৫১টি। ২০১০-এ মৃত্যুদণ্ডাদেশ মামলা আসে ৭৬টি, নিষ্পত্তি হয়েছে ৪১টি। ২০১১ সালে ডেথ রেফারেন্স মামলা আসে ৬৭টি, নিষ্পত্তি হয় ৪৬টি। ২০১২ সালের ১৪ জুন পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ডাদেশ মামলা এসেছে ৩৩টি, নিষ্পত্তি হয়েছে ২১টি।
এক রিপোর্টে বলা হয়, স্বাধীনতার পর থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ৪৩০ জনের মতো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। বর্তমানে ১ হাজার ১৩ জন ফাঁসির আসামি সারাদেশের কারাগারগুলোর কনডেম সেলে আটক রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে ৮ থেকে ১০ বছর ধরে কনডেম সেলে আটক রয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে এক কারা কর্মকর্তা জানান, আইনি জটিলতার কারণে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসি কার্যকর করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, একজন আসামির ফাঁসি হওয়ার পরে তাকে দীর্ঘদিন কনডেম সেলে থাকতে হয়। কারণ, হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্সের শুনানিতে অনেক বিলম্ব হয়। অনেক সময় হাইকোর্টে শুনানি হওয়ার পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা খালাস পান, আবার সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবনও দেয়া হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে সরকার পক্ষ আপিল বিভাগে আপিল করে।
এভাবেই বিচার ব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রতার জন্য ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের কনডেম সেলে বছরের পর বছর মানবেতন জীবন যাপন করতে হয়। আমাদের দেশে মানবাধিকার নিয়ে সংগঠনগুলো সব সময় সোচ্চার ভূমিকা রেখে আসছেন। আইনের এই দীর্ঘসূত্রিতার বিষয়টি যাতে সহজে কম সময়ে আনা যায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে ভূমিকা রাখতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
This post was last modified on জুন ৩০, ২০১২ 6:15 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অন্তর্ভূক্তিমূলক থিয়েটার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শিল্পীদের নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা শাকিব খান। অপু বিশ্বাস ও বুবলীকে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজা উপত্যকায় গত ৬ মাসে নিহত শিশুদের সংখ্যা আঁতকে উঠার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার ব্যক্তিত্ব কীরকম তা বলে দিতে পারে আপনার আঙুলের আকৃতি!…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পেঁপেতে উপস্থিত ‘পেপসিন’ ও ‘প্যাপাইন’ নামক উৎসেচকগুলো পরিপাকে বিশেষ সহায়ক।…
View Comments
Always happy to recite amazing articles.. Desire be backside used for added for sure! Thank you for sharing
» Blog Archive » DSC00048 merely paramount like you say!
I finally darling your weblog and attain near your entire accept's to be precisely what I am frustrating in support of. can you submit visitor writers to engrave timetabled pleased to suit your wants? I wouldn't thoughts publishing a accept otherwise elaborating by quite a lot of the topics you enter in next of kin to here. Again, splendid blog!
Hello there, just become alert to your weblog through Google, and found that it is truly informative. I’m gonna watch out for brussels. I’ll appreciate when you proceed this in future. Numerous folks will likely be benefited out of your writing. Cheers!
I do enjoy the manner in which you have framed this specific problem plus it does present me personally some fodder for consideration. Nevertheless, from everything that I have experienced, I basically hope as other remarks pile on that people today keep on point and don't start upon a soap box associated with some other news du jour. Still, thank you for this excellent piece and although I can not agree with this in totality, I regard your point of view.
Thanks for sharing superb in rank. Your web-site is vastly cool. I am impressed by the info that you have resting on this locate. It reveals how nicely you perceive this subject. Bookmarked this web sheet, will extend rearward in support of added articles.
Relatively a interesting reading through, i have to confess that. I dont fully understand the reason why, yet just after i browse through the story on "Till 2012, 430 People Have Been Hanged Till Death After Liberation(1971). 1,013 To Be Hanged Criminals Passing Their Life Unbearably In Condemned Cells | The Dhaka Times" i really began to grow to be some nostalgic thoughts, middle ages style. I gonna take my day off from job right away and will watch Girl of Thrones again. All of this aged elegant ... My Lord, My Lady reminds myself to the good ole times when the entire world felt like to be far more normal and sincere then those times.
Great, thanks for sharing this article post.Much thanks again. Fantastic.
I loved your blog.Really looking forward to read more. Really Great.
Thanks for the article. Keep writing.