ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাবির অধ্যাপকদের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযোগ আসছে ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনের কিন্তু অভিযোগ অনেক সময় প্রমাণিত হলেও কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
ছাত্রীরা বলেছে, ‘হঠাৎ করে দরজা আটকে দিয়ে তিনি আমার কাছে এসে কাঁধে হাত রাখেন। আমি দাঁড়িয়ে যাই। উনি আমার গালে হাত দিয়ে কাছে টানতে চান এবং আমাকে আদর করার চেষ্টা করেন। আমি অসম্মতি জানালে আমাকে জোর করার চেষ্টা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের এক ছাত্রী এভাবেই বিভাগের শিক্ষক ড. কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্রীরা নিরাপদ নন। শিক্ষক কর্তৃক নানাভাবে হয়রানির শিকার হন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়ন হয়। অভিযোগও পড়ে কিন্তু কোন বিচার হয় না।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১০ বছরে কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ব্যবস্থা না নেয়ায় কয়েক জন ছাত্রী অভিমানে বিশ্ববিদ্যালয়ও ছেড়ে দিয়েছেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপক্ষে ১৫ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। যা অতীতের সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষকরা ছাত্রীদের সঙ্গে নানা কৌশলে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে টিউটোরিয়াল, ইনকোর্স ও অ্যাসাইনমেন্টের নম্বরকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন। প্রথমে প্রেম। এরপর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও স্থাপন করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়ের নামে নানাভাবে কালক্ষেপণ করেন। উপায়ন্তর না দেখে অসহায় ছাত্রীরা কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন। কেউ কেউ আত্মহত্যা পর্যন্ত করেন। শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে বিয়ে না করায় সম্প্রতি কুয়েত মৈত্রী হলের এক ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। শিক্ষকদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে ২০ নম্বরের মধ্যে শূন্য নম্বর দেয়ারও হুমকি এমনকি ফাইনাল পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়ারও হুমকি দেন। এভাবেই ছাত্রীদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। কখনো বই দিয়ে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি, নোট করে দেয়ার কথা বলেও হয় যৌন নিপীড়ন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের একজন ছাত্রী বিভাগেরই এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ভিসির কাছে যে অভিযোগ করেছেন তার এক পর্যায়ে লেখা আছে ‘তিনি বইটি নিয়ে টেবিল ঘুরে এসে আমার হাতে দিলেন। আমি বইটি হাতে নেয়ার সাথে সাথেই তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেন।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধে একটি কমিটি আছে। এ কমিটির কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কমিটিরই একজন সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম। কমিটি গঠনের পর প্রায় ২ বছর হলেও আজ পর্যন্ত কোন বৈঠক হয়নি। অথচ কমপক্ষে ১৫ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ছাত্রীরা। সুস্পষ্ট অভিযোগ থাকার পরও অব্যাহতি দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যেসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তাদের স্ত্রী-সন্তান সবই আছে। অনেকে সময় স্ত্রীকে বাসার বাইরে পাঠিয়ে দিয়ে ছাত্রীদের মাসের পর বাসায় রাখার ঘটনাও ঘটেছে। পরিসংখ্যান, প্রাণ পরিসংখ্যান ও তথ্য পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জাফর আহমেদ খানের বিরুদ্ধে পরকীয়া, নিপীড়ন ও যৌতুকের অভিযোগ আনেন তারই স্ত্রী। তিনি জাফরের বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। জুনে তার বিরুদ্ধে স্ত্রী এ অভিযোগ করেন। স্ত্রী রেবেকা পারভীন মানবজমিনকে বলেন, প্রথমদিকে বিষয়টি আমি পারিবারিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু পরনারীতে আসক্তের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। বাসায় ছাত্রীদের নিয়ে রাখতেন বলেও জানান তিনি। প্রতিবাদ করলে তার উপর নেমে আসতো নির্যাতনের খড়গ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দুঃখজনক এবং হতাশাজনক। তিনি বলেন, সব নিপীড়নের ঘটনায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হবে। এজন্য তদন্ত কমিটিগুলোকে আরও কার্যকর ও সক্রিয় হওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ভিসি বলেন, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি এসব বন্ধ করতে। যৌন হয়রানির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ হাসানকে ৩০শে জুন বিভাগের একাডেমিক কমিটি এ অধ্যাপকের জন্য বিভাগের সকল ক্লাস এবং বর্ষের ক্লাস নেয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ছাত্রীদের যৌন হয়রানি এমনকি অবৈধ সম্পর্কে উৎসাহিত করার অভিযোগ করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিভাগের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ পর্যন্ত করতে হয়েছে। তারপরও কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
২০১০ সালে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলা হয়। শিক্ষার্থীদের লাগাতার অন্দোলনের মুখে তিনি চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর তার বিরুদ্ধে আর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তিনি ছাত্রীদের ক্লাসের মধ্যেই ‘পাখি’ বলে সম্বোধন করতেন। এমনকি বিভিন্ন অশ্লীল মেসেস দিতেন। শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানির লজ্জা সহ্য করতে না পেরে ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের একজন প্রথম বর্ষের ছাত্রী বিভাগ ছেড়ে যান। বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু মুসা আরিফ বিল্লাহ ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে কলাভবনে বান্ধীবের সামনেই প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীকে চুমু দেন। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তদন্তের স্বার্থে তাকে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ওই ছাত্রী ইতিমধ্যে বিভাগ ছেড়ে চলে গেছেন।
গত ৭ই মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক নূরউদ্দিন আলোর বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। এ বছরই নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন এক ছাত্রী। ২০০৯ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন মোল্লার বিরুদ্ধে এক ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন। ওই শিক্ষককে এক বছর একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। অভিযোগের কারণে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে সদস্য হিসেবে নিয়োগ পেলে পরে তাকে বাদ দেয়া হয়। ২০১১ সালে উর্দু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ইসরাফিলের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন এক শিক্ষার্থী। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে সাময়িক সময়ের জন্য বিভাগের কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ওই বছরেরই জুন মাসে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক মুহিত আল রশিদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন বিভাগেরই এক ছাত্রী। একই বছরে পরিসংখ্যান বিভাগের প্রভাষক এহসান উদ্দীনের বিরুদ্ধে ছাত্রী লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠলে বিভাগের কার্যক্রম থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এমরান হোসেনের বিরুদ্ধে এক ছাত্রী যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তোলেন। ২০০৭ সালে মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন এক শিক্ষার্থী। অভিযোগের ভিত্তিতে ওই শিক্ষককে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয় কর্র্তৃপক্ষ। তবে সমপ্রতি তিনি কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। এ নিয়ে সিন্ডিকেট বৈঠকে তুমুল হৈচৈ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা যায়, এপ্রিল ও জুন মাসেই কমপক্ষে ৫০ জন ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন। পর্নো ভিডিওসহ আপত্তিকর নানা ছবিসহ অভিনব কায়দায় ছাত্রীদের প্রতারণা করার অভিযোগও রয়েছে।
অকার্যকর কমিটি
শিক্ষাঙ্গনে যৌন নিপীড়নের ঘটনা তদন্তে ২০০৯ সালে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে-উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন বিরোধী তদন্ত কমিটি গঠন করার নির্দেশনা দেয় হাইকোর্ট। ৫ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ এফ এম মেজবাহউদ্দীন, সৈয়দ রেজাউর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান (সদস্য সচিব), এ কমিটি গঠনের পর কোন বৈঠক আজ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়নি বলে জানান কমিটির সদস্য সচিব। আর একে নামকা ওয়াস্তে কমিটি বলে আখ্যায়িত করেছেন একমাত্র নারী সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম। তিনি বলেন, ছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপদ নয়। তারা শিক্ষকদের দ্বারাও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। অভিযোগও হচ্ছে। কিন্তু তারা বিচার পাচ্ছেনা। তিনি বলেন, এ কমিটি থাকা আর না থাকা একই কথা।
তদন্তের নামে যা হয়: বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে সাময়িক সময়ের জন্য অব্যাহতিও দেয়া হয় সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে। কিন্তু তদন্ত কমিটির রিপোর্ট যেমন প্রকাশ করা হয়না তেমনি স্থায়ীভাবে একাডেমিক ও আইনি শাস্তি নিশ্চিত করা হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. আমজাদ আলী বলেন, যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তদন্ত করতে হিয়ে আমরা অনেক সময় উপযুক্ত প্রমাণ পাই না। এছাড়া এ ধরনের ঘটনা তদন্তে সময় বেশ লাগে। সামপ্রতিক সময়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের ঘটনা বাড়ছে বলে স্বীকার করে তিনি বলেন, শিক্ষার প্রধানতম উদ্দেশ্য নৈতিকভাবে বলীয়ান নাগরিক তৈরি করা। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের ঘটনা আশঙ্কাজনক। বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের নৈতিক অধঃপতন জাতিকে হতাশা করে। সৌজন্যে: বিডিনিইজডটকম।
This post was last modified on জুলাই ২৮, ২০১২ 1:50 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছোট বেলায় কিশোর পত্রিকার পাতায় আমরা অনেকেই এমন খেলা খেলেছি।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি করলা খেলে সুস্থ থাকে শরীর। তবে সঙ্গে বা…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই বছরের জুন মাসে শেষ হচ্ছে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সার্ভিস…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শাহ আবদুল করিম এবং হাসন রাজার ভাটির দেশ থেকে ইট-পাথরের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি দেখে নিজেদের দিকে তাকালে ‘লজ্জা’ পান বলে…
View Comments
fdpCpS Really appreciate you sharing this post.Thanks Again. Awesome.
Thank you for any other magnificent post. The place else may anyone get that type of info in such a perfect method of writing? I have a presentation subsequent week, and I'm at the search for such information.
nice site, so jealous right now
Thanks so much for providing individuals with an exceptionally wonderful chance to check tips from this web site. It is usually so sweet plus packed with a great time for me personally and my office friends to visit your site not less than 3 times in one week to read through the fresh tips you have got. And of course, I am just always fulfilled with your impressive inspiring ideas you give. Selected two ideas in this article are in reality the finest I have had.
HOMAFF oeyapomjgixy, [url=http://rxilrrmhsdby.com/]rxilrrmhsdby[/url], [link=http://rbdzcdwhayza.com/]rbdzcdwhayza[/link], http://gkhqxkowsmcz.com/
I haven’t checked in here for a while since I thought it was getting boring, but the last few posts are good quality so I guess I will add you back to my daily bloglist. You deserve it my friend :)