দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শ্রীমঙ্গোলের বাইক্কা বিলের পাখি অভয় আশ্রমের দায়িত্বে আছেন মিরাজ মিয়া। নিজের জীবন দিয়ে হলেও বিল পাখি এবং বিলের মাছ রক্ষা করা তাঁর পণ। মিরাশ মিয়ার নিবেদিত প্রাণ প্রকৃতি প্রামের কথাই উঠে আসবে আমাদের এই প্রতিবেদনে।
মিরাশ মিয়া একজন সাধারণ মানুষ, প্রথম জীবনে নিজে ছিলেন স্কুল শিক্ষক। পারিবারিক জীবনে নিজে ৩ সন্তানের জনক। তবে দীর্ঘদিন পরিবারের কাছে তাঁর যাওয়া হয়না, স্ত্রী সন্তান রেখে দূরে বিলের ওয়াচ টাওয়ারেই রাত কাটে।
১৯৮৪ সাল থেকে মিরাশ মিয়ার পাখিদের সাথে নিজের জীবনকে বেঁধে ফেলার কাহিনী শুরু। ঠিক কবে থেকে একটু একটু করে নিজেকে পাখিদের সাথে অমূল্য বাঁধনে জড়িয়েছেন মিরাশ মিয়া তা তিনি নিজেও ঠিক বলতে পারেন না। ১৯৮৪ সাল থেকেই মিরাশ মিয়া এবং আরও ৪,৫ জন মানুষ মিলে বাইক্কার বিলে গড়ে তুলেন ৩৫ হাজার হিজল তমালের বিশাল বাগান। এসব গাছে দেশ বিদেশের অতিথি পাখিরা এসে বাসা করে। বিলের মাছ খায়। চড়ে বেড়ায় বিল থেকে গাছে গাছে।
মিরাশ মিয়া বলেন, আসলে আমরা কয়েকজন মিলে বাইক্কার বিলকে মাছেদের অভয় আশ্রম করে তুলেছি, ফলে এখানে মাছ আছে আর মাছের টানে আসে অসংখ্য পাখি। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে মাছ ঠিক থাকলে পাখি ঠিক থাকেনা। হাজার হাজার পাখি আসে আমাদের বিলে তারা এখানে তো শুধু থাকেনা! আসে আবার পাশের এলাকায়ও যায়। সেখানে ওতপেতে থাকা শিকারিরা তাদের মেরে ফেলে। আমরা বিলের আশেপাশে পাখিদের নিরাপত্তা দিলেও বিলের বাইরে তারা খুব অনিরাপদ।
মিরাশ মিয়া আরও বলেন, “পাখিরা অনিরাপদ কারণ প্রশাসন এখানে কিছুই বলেনা, বলবেই বা কেন? এসব পাখি তো প্রশাসনের উপর মহলের পাতিলেই চলে যায় সর্বশেষ। সরকার যদি এসব পাখি রক্ষায় মনোযোগী হত তাহলে এরা এখানে নিরাপদ থাকতো। এদিকে চোরা মাছ শিকারিরাও মাছ ধরে নেয় সুযোগ পেলেই, ফলে পাখিরা খাবার সংকটেও আছে।
মিরাশ মিয়ার সংসারে রয়েছে ভীষণ অভাব। আর এই অভাবের তাড়না তাকে পাখি প্রেম থেকে পিছু হটাতে পারেনি। পাখিরা তাকে ভীষণ মায়ায় বেঁধেছে। সারাক্ষণ খুঁজতে থাকেন নতুন কোন অতিথি এসেছে কিনা। সব পাখির ইতিহাস মিরাশ মিয়ার মুখস্ত।
মিরাশ মিয়া জানান, বাইক্কার বিলে অসংখ্য প্রজাতির পাখি আসে। এখন পর্যন্ত এই বিলে ১৬৬ প্রজাতির পাখি এসেছে। এবার ২২-২৩ হাজারের উপরে পাখি এসেছে। এসব পাখি দল বেঁধে আসে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে। এরা আমাদের অথিতি, আমাদের দেশে আশ্রয় পেতে বিরূপ আবহাওয়ার দেশ থেকে আসে। কিন্তু আমরা যদি তাদের উত্তপ্ত করি তবে তারা হয়তো পরের বছর আর আসবেনা। এরা আমাদের প্রকৃতির জন্য অত্যন্ত ভালো।
মিরাশ মিয়া বলেন, দিন দিন আমাদের বাইক্কা বিলে পাখির প্রজাতি সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি বছর নতুন নতুন প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। তবে পাখির সংখ্যা সেভাবে বাড়ছেনা। এটা আমাদের কারণেই হচ্ছে। আমরা অনিরাপদ করে তুলেছি তাদের বিচরণক্ষেত্র।
শীতকালে মিরাশ মিয়া এবং বাকি রক্ষীরা ঘুমান না। তাঁরা পালা করে বিনিদ্র রাত কাটান। তাঁরা বলেন, আমাদের জীবন থাকতে বাইক্কা বিলের সীমানায় কোন পাখি শিকার করতে দেয়া হবেনা। এটা পাখির অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র। আমরা পাখির জন্য এই যায়গা নিরাপদ রাখতে চাই। পাখিরা আমাদের ভালোবেসে এদেশে আসে আমরাও তাদের ভালোবাসা দিতে চাই।
সৌজন্যে: বাংলানিউজ২৪.কম
This post was last modified on জানুয়ারী ১৬, ২০১৫ 1:25 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিজেকে চাঙ্গা রাখার কোনও চেষ্টাই করা হয় না। শীতে ঠাণ্ডার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইসলামিক সঙ্গীত জগতে এক নয়াদিগন্তের সূচনা করলেন হোসাইন নূর। তার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দু’টি কচ্ছপ নিয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছেন এক তরুণী। কচ্ছপ…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৭ পৌষ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিটনেস প্রশিক্ষকরা বলেছেন, হাঁটাহাঁটি, দৌড়ানো, জগিং, সাইকেল চালানো কিংবা সাঁতার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রায় একযুগেরও বেশি সময় পর মৌলিক গান নিয়ে মিউজিক ডোমেইনে…