ঈশ্বরদী প্রতিনিধি ॥ পদ্মায় নদী ভাঙ্গনের ফলে ঈশ্বরদী শহর হুমকির মুখে। প্রতিবছরই পদ্মার এই কড়াল গ্রাসে বিলীন হচ্ছে শত শত গ্রাম।ঈশ্বরদী শহর থেকে খুব নিকটে অবস্থিত সাঁড়া ইউনিয়ন। এটি একটি ইউনিয়ন হলেও ঈশ্বরদী পৌর এলাকা থেকে খুব বেশি দূরে নয়। অথচ এই সাঁড়া ঘাটে নদী ভাঙ্গনে শত শত ঘর বাড়ি বিলিন হয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে দেখার কেও নেই।
সাঁড়া ইউনিয়নের লোক সংখ্যা মাত্র ৩০ হাজারের মতো। সাঁড়া ঈশ্বরদী উপজেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন। ঐতিহ্যবাহী এই সাঁড়া ইউনিয়নটি আজ পদ্মার কড়াল গ্রাসে বিলিন হতে চলেছে। হাজার হাজার ঘর বাড়ি ইতিমধ্যে বিলিন হয়ে গেছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো শুষ্ক মৌসুমে কোনদিন নদী ভাঙ্গে এমন ইতিহাস নেই। অথচ সাঁড়া নদী ভাঙ্গন সেই নিয়মকেও হার মানিয়েছে। এই শুষ্ক মৌসুমেও নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। গত ১ মাসের মধ্যে ৩৭৫টি ঘর বাড়ি ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। এভাবে প্রতিনিয়ত ঘরবাড়ি, স্কুল-কলেজ ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। এভাবে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে শুধু সাঁড়া নয়, ঈশ্বরদী শহরও হুমকির মধ্যে পড়বে। কারণ ঈশ্বরদী শহর থেকে সাঁড়া ঘাটের নদী ভাঙ্গন এলাকা বেশি দূরে নয়।
ভাঙ্গনের ফলে এখানকার শুধু ঘরবাড়ি নয়, স্কুল কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা কোন কিছুই যেনো এই কড়াল গ্রাসের থাবা থেকে রেহায় পাচ্ছে না।
ঈশ্বরদীকে জেলা করার দাবি ঈশ্বরদীবাসী দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছেন। সেই ঈশ্বরদীকে জেলা করতে গেলে যেসব এলাকায় জেলখানা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদালত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেই পিয়ারপুর, মাঝদিয়া এলাকা নদী ভাঙ্গন এলাকার একেবারে সন্নিকটে। যে কারণে এই নদী ভাঙ্গন শুধু সাঁড়া ইউনিয়ন নয়, পুরো ঈশ্বরদীর ভবিষ্যত নির্ভর করছে। ঈশ্বরদীকে জেলা করার যে দাবি সেই দাবির ক্ষেত্রে এক বড় অন্তরায় হয়ে দেখা দেবে এই নদী ভাঙ্গন। তাই ঈশ্বরদীবাসী মনে করে সাঁড়ার ভাঙ্গন রোধ করা আজ আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। যেভাবেই হোক এই নদী ভাঙ্গন রোধ করতেই হবে। তবে এখানে একটি আশার কথা হলো আমাদের স্থানীয় সাংসদ শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর প্রচেষ্টা। তিনি এই নদী ভাঙ্গন রোধে ইতিমধ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আবেদন নিবেদন করেছেন ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। ইতিমধ্যে অনেক দূর এগিয়েও গেছে। তিনি জানান বর্তমানে এটি প্রক্রিয়াধিন রয়েছে। যত শীঘ্রই সম্ভব নদী ভাঙ্গন রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই কড়াল গ্রাস থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষার প্রচেষ্টার কথা জানান। তিনি বলেন, এই নদী ভাঙ্গন রোধ করা না গেলে, ঈশ্বরদী শহর হুমকির মধ্যে পড়বে।
শামসুর রহমান শরীফ ডিলু এমপি আরও বলেন, আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। নদী ভাঙ্গন রোধ আমরা করবোই। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, বর্তমানে এটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নদী ভাঙ্গনের ব্যাপারে সরকারের উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত অবগত রয়েছে। বর্তমানে এটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। এই প্রকল্প শীঘ্রই একনেক এ যাবে। তারপর যত দ্রুত সম্ভব এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু এটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাই অগ্রাধীকার ভিত্তিতে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
শামসুর রহমান শরীফ ডিলু এমপি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঈশ্বরদীর উন্নয়নে অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের আর্থিক সংকট রয়েছে। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি এলাকার উন্নয়ন করার জন্য।
শামসুর রহমান শরীফ ডিলু বলেন, আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার এই পর্যায়ে এসে অনেকেই ব্যঙ্গ করেন। কিন্তু একদিন আসবে যখন এই ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল জনগণ ভোগ করবে। তখন আওয়ামীলীগের সরকারের কথা জনগণের মনে পড়বে। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল এখন জনগণ পেতে শুরু করেছে। এখন জনগণ ঘরে বসে এস.এস.সি, এইচ.এস.সিসহ বিভিন্ন পরীক্ষার রেজাল্ট পাচ্ছেন। মানুষ এখন ঘরে বসে বিদ্যুৎ বিল দিতে পারছেন। এভাবে জনগণ যখন সবকিছু হাতের নাগালে পাবে তখন বুঝবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ কি।
তিনি সবশেষে সাঁড়ার নদী ভাঙ্গন রোধে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
ঈশ্বরদীতে পদ্মা নদীর ভাঙন তিন যুগ ধরে চলছে এই অবস্থা। অথচ স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কোন বাস্তব উদ্যোগ এখনও নেয়া হয়নি। ঈশ্বরদীর সাঁড়া ইউনিয়নে পদ্মা নদীতে বন্যার পানি বাড়ছে। আর নদীর তীরের আড়ামবাড়িয়াসহ ৭টি গ্রামের মানুষের এখন নির্ঘুম রাত কাটছে। বাড়ছে ভাঙন আতংক। গতবার এ ইউনিয়নের পালপাড়াসহ ১০টি গ্রামের শতাধিক বাড়িঘর গাছপালা বসত ভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তাই এবারও শুরু হয়েছে আড়ামবাড়িয়া গ্রামের মানুষের নদী ভাঙনের আতংক।
এলাকাবাসী জানান, সাঁড়া ইউনিয়নের কোমরপুর থেকে সাঁড়া ঝাঁউদিয়া গ্রাম পর্যন্ত দীর্ঘ পাঁচ কিলোমিটার পদ্মা নদীর বাম তীর এবারের বন্যায় ভাঙনের আশংকা করছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সাঁড়ার আড়ামবাড়িয়া। ইউপি চেয়ারম্যান জার্জিস হোসেন জানান, দীর্ঘদিন থেকে পদ্মা নদীর বাম তীরে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গত এক দশকে এই ভাঙন আরও তীব্রতর হয়। নদী ভাঙনের ফলে সাঁড়া ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের কাঁচা-পাকা বসতবাড়ি, স্কুল, মসজিদ-মন্দির, ব্রিজ, কার্লভাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কুঠির শিল্প, বরফকল, ফসলি জমিসহ প্রায় পাঁচশ’ একর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এর ফলে ভাঙনকবলিত তিনশ’ পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে।
চেয়ারম্যান জানান, পদ্মা নদীর বাম তীর ঘেঁষে আড়ামবাড়িয়া গ্রামে কয়েকশ’ বছর ধরে রয়েছে পালদের বসবাস। গত বছর ভয়াবহ ভাঙনে সেই পালপাড়া নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এবার পালপাড়ার তীর ঘেঁষে গ্রামের মানুষের ঘুম বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকে অন্যত্র আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছেন। চেয়ারম্যান আরও জানান, সাঁড়া, কোমরপুর, আড়ামবাড়িয়া, শেখেরচক, গোপালপুর, মাঝদিয়া, ঝাউদিয়াসহ নদীর বামতীরে অবস্থিত দশটি গ্রাম বর্তমানে হুমকির মধ্যে পড়েছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পদ্মা নদী ভাঙতে ভাঙতে বর্তমানে আড়ামবাড়িয়া বাজারের কাছাকাছি চলে এসেছে। নদীর মাত্র ২০ গজ দূরে রয়েছে আড়ামবাড়িয়া উচ্চ ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। গ্রামবাসীদের চোখে-মুখে ভাঙনের আতংক। তারা জানান, প্রতি বছর নদীতে পানি বাড়া এবং পানি কমার সময় নদীতে ভাঙন শুরু হয়। সাঁড়া ইউনিয়ন সূত্রে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার সীমানা পর্যন্ত রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় গত অর্থবছরে স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে।
আমরা আশা করি নদী ভাঙ্গন রোধে যে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করে সাঁড়াকে রক্ষা করতে হবে। পদ্মার কড়াল গ্রাস থেকে সাঁড়াকে রক্ষা করতে না পারলে ঈশ্বরদী শহর যেমন হুমকির মধ্যে পড়বে তেমনি অত্র অঞ্চলের উন্নয়নও বাধাগ্রস্থ হবে। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সাঁড়ার ভাঙ্গন রোধে প্রয়োনজীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে এলাকার শত শত ঘর-বাড়ি ও হাজার হাজার মানুষের সহায় সম্বল রক্ষা করতে সক্ষম হবেন।
This post was last modified on জুলাই ৩০, ২০১২ 4:05 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রোগা হওয়ার জন্য অনেকেই দিনে ২ থেকে ৩ বার এই…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আঞ্চলিক রাউন্ডে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করায় ওয়ার্ল্ড স্কলার্স কাপের গ্লোবাল রাউন্ডের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের তথ্যপ্রযুক্তিখাতের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার এমন একটি ল্যাপটপ বাজারে এলো যা একইসঙ্গে একাধিক কাজ…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকাই সিনেমার বর্তমান সময়ের নায়িকা মিষ্টি জান্নাত অভিনীত বেশ কয়েকটি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে আবারও মিশরের কায়রোতে পৌঁছেছেন ইসরায়েলের…
View Comments
Very nice post, Thanks for this publishing. Really help me a lot.
I would like to thank you for the efforts you have put in writing this website. I really hope to check out the same high-grade blog posts from you later on as well. In fact, your creative writing abilities has encouraged me to get my very own website now ;)
This is getting a bit more subjective, but I much prefer the Zune Marketplace. The interface is colorful, has more flair, and some cool features like 'Mixview' that let you quickly see related albums, songs, or other users related to what you're listening to. Clicking on one of those will center on that item, and another set of "neighbors" will come into view, allowing you to navigate around exploring by similar artists, songs, or users. Speaking of users, the Zune "Social" is also great fun, letting you find others with shared tastes and becoming friends with them. You then can listen to a playlist created based on an amalgamation of what all your friends are listening to, which is also enjoyable. Those concerned with privacy will be relieved to know you can prevent the public from seeing your personal listening habits if you so choose.
Wow ! remarkable job! i would like to read your post oftentimes.Its make me to clutches more information. Thank You !
It's perfect time to make some plans for the future and it is time to be happy. I have read this post and if I could I desire to suggest you some interesting things or suggestions. Maybe you could write next articles referring to this article. I want to read more things about it!
While browsing Yahoo I discovered this page in the results and I didn't think it fit
hello!,I like your writing very much! share we communicate more about your post on AOL? I need a specialist on this area to solve my problem. May be that's you! Looking forward to see you.
Thanks for this post, I am a big fan of this web site would like to continue updated.
you're in point of fact a good webmaster. The site loading pace is amazing. It seems that you are doing any unique trick. Furthermore, The contents are masterwork. you've done a excellent activity on this matter!
I needed to post you that very small word just to say thanks a lot again about the gorgeous thoughts you have shared on this website. It is simply seriously open-handed of people like you to deliver unreservedly precisely what a few people might have offered for sale for an electronic book to get some dough on their own, mostly now that you could have tried it in case you considered necessary. These tricks also acted to become fantastic way to understand that many people have similar passion much like my very own to realize somewhat more in regard to this matter. I know there are a lot more pleasant times up front for those who see your site.