দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মোডাস অপারেন্ডি নামক ডায়মন্ডের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান মনে করেন নকল আর সিনথেটিক ডায়মন্ডের জন্য এখনই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কেননা সিনথেটিক আর নকল ডায়মন্ডের জন্য প্রতিবছর অনেক বিনিয়োগ অর্থ ক্ষতির মুখে পড়ে।
২০১২ সালের মে মাসে একজন অপ্রত্যাশিত ডায়মন্ড মার্সেন্ট ৬০৫ ডায়মন্ড নিয়ে আসেন এবং তিনি দাবি করেন এগুলো সবগুলোই প্রাকৃতিক। তিনি বিশ্বাস করতেন ডায়মন্ডগুলোর প্রতিটি ০.৩০ ক্যারট থেকে শুরু করে ০.৭০ ক্যারট ওজনবিশিষ্ট। পরীক্ষা করার জন্য এগুলো পাঠানো হয় আন্তর্জাতিক হীরাবাছাই ইন্সটিটিউটে। পরীক্ষার পর দেখা যায় ৪৬১টি ডায়মন্ডই সিনথেটিক ডায়মন্ড। ডায়মন্ড বাছাই কেন্দ্রে সাধারণত কোয়ার্টার ক্যারটের চেয়ে বড় ডায়মন্ডগুলো পরীক্ষা করা হয়। কারণ এই ওজনের ডায়মন্ড পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। সিনথেটিক ডায়মন্ডগুলো প্রায় এই ওজনের হয়ে থাকে এবং এগুলো “মেলি” নামে পরিচিত। কোন ধরনের ভালো পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা ছাড়াই প্রায় এগুলো গ্রাহকদের কাছে পৌছে যায়। ফলে সারাবিশ্ব ব্যাপী এই ওজনের ডায়মন্ড পরীক্ষা রুটিনমাফিক করা হয়। কিন্তু এর চেয়ে ছোট ওজনের ডায়মন্ডগুলো পরীক্ষা করা হয় না কেননা ডায়মন্ডের এই পরীক্ষাটি বেশ ব্যয়বহুল যা এই ছোট ডায়মন্ডগুলোর জন্য লাভজনক নয়। ফলে এই ছোট ডায়মন্ডগুলো হীরার বাজারে বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।
সিনথেটিক ডায়মন্ড উৎপাদনও ব্যয়বহুল। ফলে গত কয়েক বছর যাবত সিনথেটিক ডায়মন্ডের চেয়ে ইমিটেশন কিংবা নকল ডায়মন্ডের অবৈধ ব্যবসা সারাবিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। এই নকল অথবা সিনথেটিক ডায়মন্ডগুলোর ক্রেতারা বেশিরভাগই দুর্বল ভোক্তা যারা ডায়মন্ড সনাক্ত করতে পারেন না। এতে করে ছোট কোয়ার্টার ক্যারটের ওজনের ডায়মন্ডগুলো বেশ সস্তাও, ফলে ভোক্তারা এর ধোঁকার শিকার হচ্ছে। সিনথেটিক ডায়মন্ড আর নকল ডায়মন্ডের মধ্যে মূল পার্থক্য হলো সিনথেটিক ডায়মন্ড তৈরির সময় এর সাথে ছোট ছোট কিছু আসল ডায়মন্ড যুক্ত করে দেওয়া হয় ফলে সিনথেটিক ডায়মন্ড সনাক্ত করতে বেশ কিছু পন্থা অবলম্বন করতে হয়। সিনথেটিক ডায়মন্ডের উৎপাদন ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে এর উৎপাদনও কম। প্রতিবছর প্রায় ৫ লক্ষ ক্যারট সিনথেটিক ডায়মন্ড উৎপাদন করা হয়। যা বাজারে অবৈধভাবে ছড়িয়ে পড়া নকল ডায়মন্ডের চেয়ে ০.৫ শতাংশ কম। এই ডাটাটি প্রকাশ করে জুয়েলারী ব্যবসার বিশ্ব বিখ্যাত পরিসংখ্যান বিভাগ কিম্বারলি প্রসেস।
আনুপাতিক হারে বিশ্ব বাজারে থাকা আসল ডায়মন্ডের চেয়ে সিনথেটিক ডায়মন্ড অনেক কম কিন্তু এই অবস্থা তৈরির কারণ নিত্য নতুন ডায়মন্ড সনাক্তকারী প্রযুক্তি যার মধ্যে বেশ আধুনিক সংযোজন এএমএস মেশিন। এএমএস হলো অটোমেটেড মেলি স্ক্রিনিং ডিভাইস। ডী বীয়ার্স নামের ফ্রান্সের একটি ডায়মন্ড কোম্পানী জানায় এএমএস দ্বারা বেশ ভালোভাবেই ০.২ ক্যারটের নিচের মেলি ডায়মন্ড বা সিনথেটিক ডায়মন্ড সনাক্ত করা যায়। এএমএস মেশিনের দ্বারা হাজার হাজার মেলি ডায়মন্ডের মধ্য থেকে বিশুদ্ধ ডায়মন্ড বের করা সম্ভব। একজন টেকনিশিয়ান এএমএস মেশিনের মধ্যে একটি ডায়মন্ডকে রাখেন। তারপর এর স্ক্রিনিং ব্যবস্থাটি চালু করা হয়। টেকনিশিয়ান কম্পিউটারের মনিটরে ডায়মন্ডের অন্তর্গঠন পরিলক্ষন করেন। এএমএস মেশিনের মাধ্যমে একঘন্টায় প্রায় ৩৬০টি ডায়মন্ড পরীক্ষা করা যায়। অর্থাৎ একটি ডায়মন্ড সনাক্ত করতে লাগে মাত্র ১০ সেকেন্ড। এর অপটিক্যাল ফাইবার প্রোবের মাধ্যমে ডায়মন্ড পাথরের ভেতরে থাকা অপদ্রব্য সনাক্ত করতে পারে। কয়েকবছর আগেও ডায়মন্ড ডিটেকশনের জন্য বিশালাকার ল্যাবরেটরী ব্যবহার করতে হতো। যেখানে ম্যানুয়ালী অপারেট করা যায় এমন যন্ত্রাংশ দিয়ে ডায়মন্ডের নকল কিংবা আসল সনাক্তকরণ করা হতো।
আগামী মাস থেকে এএমএস মেশিন বাজারে প্রচলিত হচ্ছে। ফলে ডায়মন্ড কোম্পানীগুলোকে অধিক অর্থ ব্যয় করে আর ডায়মন্ড সনাক্ত করতে হবে না। এছাড়াও খুব সহজেই ডায়মন্ড সনাক্ত করা যাবে বলে কোম্পানীগুলো গ্রাহকের আস্থা ধরে রাখতে পারবে এবং ক্রেতারাও নকল কিংবা সিনথেটিক ডায়মন্ড দ্বারা প্রতারিত হবেন না।
তথ্যসূত্রঃ ফিনান্সিয়ালটাইমস
This post was last modified on এপ্রিল ২১, ২০১৪ 5:30 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড এবং লেবাননজুড়ে ভয়াবহ হামলা চলমান রেখেছে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…