ঈদের বিশেষ নিবন্ধ: ছোটবেলার ঈদ

এম. এইচ. সোহেল ॥ ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদ এক সমবেত আনন্দ। ঈদের আনন্দ থাকে সবার মনে। ধনী, গরিব, ছোট, বড় সকলের মধ্যেই থাকে ঈদের আনন্দ। কিন্তু তারপরও মনে হয় ঈদের আনন্দ ছোটদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। অন্তত আমরা তাই দেখেছি। ছোটবেলায় ঈদের আনন্দ ছিল এক অন্যরকম।

ছোটদের ঈদ কেনো? বড়দেরই বা ঈদ নয় কেনো? এমন প্রশ্ন আসতে পারে। কিছুটা পার্থক্য রয়েছে ঈদ আনন্দের মধ্যে। বাস্তবিক জীবনের আলোকে আমরা এমনটিই দেখেছি। ছোটবেলার ঈদ ছিল এক অন্যরকম অনুভূতির। ঈদের আগে অর্থাৎ নতুন জামা কেনার আনন্দ। ঈদের আগে অর্থাৎ চাঁন রাতে ঈদের জন্য অপেক্ষা আরেক অনুভূতির ব্যাপার। আবার ঈদের সকালে আরেক অনুভূতি। যে অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

Related Post

ঈদের দিন সকালে নতুন পাজামা-পাঞ্জাবি পরে নামাজের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া, আবার নামাজ শেষে ঘরে ফেরা আরেক আনন্দ। তারপর রয়েছে ঈদের নামাজের পর বাড়ি ফিরে আব্বা-মাকে ও বড়দের সালাম করা। কারণ ছোটবেলায় ঈদের সালাম মানেই ছিল সালামি পাওয়ার এক অপার আনন্দ। নানা-নানি, মামা-মামি ও খালা-খালুসহ এমন সব আত্মীয়দের বাড়িতে গিয়ে সালাম করা আর সেমাই খাওয়া সে এক অন্যরকম অনুভূতি।

মানুষের আনন্দ লাভের অনুভূতি এক অন্যরকম অনুভূতি। আনন্দ বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। খেলাধুলা করার এক আনন্দ, বিয়ে-সাদি বা আত্মীয়দের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার এক আনন্দ। আবার ঈদের আনন্দ। ঈদের আনন্দ এক অন্যরকম অনুভূতির বহিপ্রকাশ।

এখন আমাদের বড়কালের সময় ঈদ নিয়ে এতো মাথা ব্যথা থাকে না। এখন আমরা আমাদের সন্তানদের মধ্যে দেখি সেই ছোটবেলার আনন্দগুলো। নতুন জামা কেনার জন্য উদগ্রীব হওয়া, পছন্দ মতো জামা কেনা এ সবই মনে করিয়ে দেয় আমাদের ছোটবেলার সেই ঈদের কথা।

ছোটবেলার ঈদের কথা মনে করিয়ে দেয় আজকের এই দিনে অনেকভাবেই। ছোটবেলায় আমরা ঈদে পিস্তল কিনতাম। ছোট সাদা রঙের এক ধরনের পিস্তল তখন পাওয়া যেতো। হোমিও প্যাথি ওষুধের ঢাকনার মতো গুলি ছিল সেসব পিস্তলে। পিস্তলের গুলির বারুদের গন্ধ এখনও যেনো নাকে লেগে আছে। ছোটবেলার ওই আনন্দ ছিল এক অন্য অনুভূতি। তবে আমাদের সময় ছোটবেলায় ঈদের যে আনন্দ ছিল এখন সেভাবে দেখা যায় না। এখন ফেসবুকে কথার ফুলঝুরি দিয়ে ঈদের সব আনন্দ একাকার হয়ে যায়। পাড়া-গাঁয়ের সেই ঈদের আনন্দ এখন আর চোখে পড়ে না।

ছোটবেলার সেই ঈদের আনন্দ এখন আর দেখা যায় না। এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় সবকিছু কেনো যেনো অন্য এক ধারায় বয়ে চলেছে। নদীর স্রোতধারা যেমন কখনও কখনও উল্টোপথে চলে তেমনই ঈদের আনন্দও এখন এক অন্যধারায় ধাবিত হচ্ছে। তবে যেভাবেই হোক আনন্দধারা কিন্তু এক ও অভিন্ন। এ ধারা বয়ে যাবে শত শত বছর ধরে বাঙালিদের মধ্যে। সকলকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা- ঈদ মোবারক।

This post was last modified on জুলাই ২৯, ২০১৪ 2:25 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

ভারতে গাধার দুধ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬ হাজার টাকা লিটার!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের সমাজে গাধা নামক প্রাণীটি কঠোর পরিশ্রমের রূপক হিসেবে প্রচলিত।…

% দিন আগে

চট্টগ্রামের একটি নৈসর্গিক প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ৫ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২২ বৈশাখ ১৪৩১…

% দিন আগে

সঠিক নিয়ম মানলে আম খেয়ে পেটের কোনো সমস্যা হবে না

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পরিমাণে একটু বেশি আম খেলেই গ্যাসের মতো সমস্যা হয় অনেকের।…

% দিন আগে

বাংলা ভাষার প্রথম স্মার্টওয়াচ এবার বাজারে এলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাজারে এলো বাংলা ভাষার স্মার্টওয়াচ। দেশীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আজওয়া টেকের…

% দিন আগে

আবারও অনিরুদ্ধর সিনেমায় অভিনয় করবেন জয়া

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউডের বহুল আলোচিত সিনেমা ‘পিংক’ এর নির্মাতা অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর…

% দিন আগে

হামাসকে সাত দিনের সময় দিলো ইসরায়েল!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জিম্মি চুক্তিতে রাজি হতে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে মাত্র সাত…

% দিন আগে