আফ্রিকার সেরা ১০ ভয়ংকর প্রাণী!

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ আফ্রিকা, বিশ্ব জীব বিচিত্রের প্রান কেন্দ্র। আফ্রিকান রক পাইথন বা আফ্রিকার অজগর কিংবা আফ্রিকান সিংহ অথবা আফ্রিকান চিতা! কোন প্রাণীর নাম শুনেননি আপনি বলেন? কিন্তু আপনি কি জানেন আফ্রিকার সেরা ১০ ভয়ংকর প্রাণী কারা? তো আর দেরি কেনো? ওয়াইল্ড লাইফ যারা ভালবাসেন তারা জেনে নিন সেই সব প্রাণীর কথা।


১) জলহস্তী:

জলহস্তী হচ্ছে আফ্রিকার ভয়ংকর হত্যাকারীদের মাঝে অন্যতম। একটি জলহস্তী প্রায় কয়েক টন ওজনের হয়ে থাকে। এদের শক্তির প্রধান বিষয় হচ্ছে এর ওজন এবং বিশাল পেশীবহুল চোয়াল। এরা তাদের নিজেদের কলোনি এবং সীমানায় অন্য কেউ প্রবেশ করুক তা কখনোই মেনে নেয় না। ঠিক এই কারণেই আফ্রিকাতে প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ এবং বন্য প্রাণী করুন ভাবে এসব জলহস্তীর আক্রমণের শিকার হয়।

২) কুমির:

কুমির হচ্ছে সেই প্রাণী যা কিনা উভয়চর প্রাণীদের মাঝে অন্যতম হিংস্র শিকারি প্রাণী। এদের বিশাল চোয়াল এবং ভয়ংকর দাঁত এক কামড়ে গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম যেকোনো প্রাণীর পাঁজর। বলা হয়ে থাকে আফ্রিকার কুমিররা যত হত্যা করে তার বেশীরভাগ শিকারের চেয়ে শিকারকে নিয়ে খেলা করা এবং হিংস্রতা দেখাতেই ঘটিয়ে থাকে।

Related Post

৩) দ্যা ব্ল্যাক মাম্বা:

ব্ল্যাক মাম্বা হচ্ছে আফ্রিকান মানুষের মাঝে বিষের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত এক ভয়ংকর ত্রাস। ব্ল্যাক মাম্বা কখন কিভাবে হত্যা করবে তা আগে থেকে কেউই বলতে পারেনা। ব্ল্যাক মাম্বার ছোবল মিলি সেকেনেডের মাঝেই হয়ে যায়। অর্থাৎ আপনার চোখের পলক ফেলারও কম সময়ের মঝে। এর বিষে এতো ভয়ংকর কার্যকারিতা যে একজন মানুষ এই সাপের ছোবলে ১০ মিনিটের মাঝে মারা যেতে পারে। এর বিষ প্রথমে মানুষের রক্তের প্রোটিন উৎস এবং বিভিন্ন রক্ত কোষ ধ্বংস করে দিয়ে রক্তকে দূষিত করে দেয়।

৪) আফ্রিকান হায়না:

হায়নাকে কে না চেনেন? দুই প্রকারের হায়েনা আফ্রিকাতে রয়েছে এক প্রজাতি হচ্ছে ব্রাউন হায়েনা অন্য প্রজাতি হচ্ছে স্পটেড হেয়েনা। ব্রাউন হায়না সাধারণত যাযাবর সভাবের হয়ে থাকে এরা একা একাই চলাফেরা করে। অপর দিকে আফ্রিকার ত্রাসের চেয়েও বড় ত্রাস হচ্ছে স্পটেড হায়েনা, এরা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সামাজিক ঐক্যবদ্ধ প্রাণী। এদের এক এক দলে প্রায় ৮০ থেকে ২০০টিরও বেশি হায়েনা থাকে। এরা নিজের থেকে অনেক বড় প্রাণী শিকার করতে সক্ষম। এদের চোয়াল এদেরকে দিয়েছে আলাদা মর্যাদা। এরা শক্তিশালী চোয়াল দিয়ে সিংহ থেকেও অনেক জোরে কামড় বসাতে সক্ষম। কি নেই এদের শিকারের তালিকায়? সিংহ থেকে শুরু করে এরা উচ্ছিষ্ট সব কিছুই খায় এবং প্রয়োজনে ভয়ংকর কায়দায় হত্যা করে। এরা শিকার ধরে জীবিত অবস্থায় খাওয়া শুরু করে দেয়, শিকারের কোন অংশই এরা অবশিষ্ট রাখেনা।

৫) আফ্রিকান বন মোষ:

বন মহিষ বা মোষ হচ্ছে আফ্রিকান ভয়ংকর হত্যাকারীদের মাঝে একটি। এরা এক এক জন কয়কটন পর্যন্ত হয়ে থাকে। এদের শক্তি এদের শরীরের ওজন এবং বদ মেজাজ। এদের কেউ উত্যক্ত করলেই তার আর রক্ষে নেই! বন বিশ্লেষকরা বলেন এদের স্মৃতি শক্তিও প্রখর। একবার এক দল শিকারি একটি বন মহিষকে গুলি করলে সেই গুলি গিয়ে লাগে মহিষের পাঁজরে। সে মহিষ তাৎক্ষণিক পালিয়ে গেলেও পরে ওই শিকারি দলের উপর চোরা গুপ্তা হামলা করে যে গুলি করে তাঁকে হত্যা করে।

৬) আফ্রিকান হাতি:

আফ্রিকান হাতি হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বন্য প্রাণী। এরা এক একটা পাওয়ার হাউজ। মেমথ যুগের অবসান হলে বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় বন্য প্রাণী যদি কাউকে বলা হয়ে থাকে তবে তা হচ্ছে আফ্রিকান বন্য হাতি! এরা অনেকটা সামাজিক প্রাণী, কিন্তু ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে এরা চলা ফেরা করে। এদের দলে একজন নেত্রী থাকে, দলে শিশুরাই প্রধান নিরাপত্তা পেয়ে থাকে। আফ্রিকাতে হাতিদের আক্রমণে গ্রামের পর গ্রাম মাটির সাথে মিশে যাওয়ার নজির অনেক আছে।

৭) গণ্ডার:

আফ্রিকান গণ্ডার খুব একটা বদ মেজাজি তা কিন্তু না! তবে কেউ একে উৎপাত করলে তার জন্য নেমে আসতে পারে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহ করুণ মৃত্যু। গণ্ডার দল বেধে অবস্থান করলেও এরা কিন্তু নিজেদের শাবক নিয়ে নিজেদের সুরক্ষা করে থাকে। এদের মাঝে পুরুষে পুরুষে ক্ষমতার জন্য এবং নারী সঙ্গী পাওয়ার জন্য যুদ্ধ হয়। কখনো কখনো সে সব যুদ্ধ মৃত্যুতে শেষ হয়।

৮) আফ্রিকান চিতা:

চিতা একা শিকার করে, একাই বসবাস করে। চিতাকে আফ্রিকাতে নিঃস্ব শিকারি বলা হয়ে থাকে। আফ্রিকান চিতা পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত গতির প্রাণী। এরা এদের গতি দিয়ে শিকার করে। নিরবে শিকারকে অনুসরণ করে দ্রুত আক্রমণ করে এবং দৌড়ের পাল্লায় শিকার পরাস্থ হতে বাধ্য!

৯) আফ্রিকান স্কর্পিয়ানস বা বিছা

বিছারা নিজেদের বিবর্তন করেছে আজ থেকে হাজার হাজার বছর ধরে। এরা নিজেদের শক্ত চোয়াল এবং শক্তিশালী বিষের থলি দিয়ে নিজের থেকে কয়েক গুন বড় প্রাণীকে নিমিষে মেরে ফেলতে সক্ষম। প্রতি বছর আফ্রিকাতে বন্য প্রাণী ছাড়াও অসংখ্য মানুষ এই বিছার আক্রমণে প্রান হারায়। সারা পৃথিবীতে বিছা রয়েছে প্রায় ১৫০০ প্রজাতির তবে এদের মাঝে ২৫ টি প্রজাতির রয়েছে ভয়ংকর বিষ। আফ্রিকাতে ৫০০ এর উপর মানুষ এই বিছার আক্রমণে জীবন দেয় প্রতি বছর।

১০) সিংহ

আফ্রিকান লায়ন বা সিংহ বনের রাজা! এরা গত্র ভাগে নির্দিষ্ট এলাকায় ভাগ হয়ে অবস্থা করে। এক এলাকার সিংহ অন্য এলাকায় যেতে বা সেখানে গিয়ে শিকার ধরতে পারেনা। আফ্রিকান সিংহ বীর্য এবং দাম্ভিকতার প্রতীক। শক্তি, ক্ষমতা সক্ষমতা কি নেই এদের? দল গত ভাবে শিকারকে আক্রমন করে এরা হত্যা করে। সিংহের মূলত দুটি প্রজাতি বর্তমানে টিকে আছে। একটি হল আফ্রিকান সিংহ অপরটি হল এশীয় সিংহ। তবে পশ্চিম আফ্রিকায় আশঙ্কাজনকহারে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বনের রাজা আফ্রিকান সিংহ। ওই অঞ্চলে মাত্র ৪শ’টির মতো সিংহ আছে এখন। এদের হুঙ্কার গর্জন কয়েক মাইল দূর থেকে শিকারের মনে ভয় ধরিয়ে দেয়।

This post was last modified on জুন ২২, ২০১৬ 5:02 অপরাহ্ন

Zia

"বাপের টাকার হিসেবে বড়লোক, নিজের টাকার হিসেবে গরীব। আল্টিমেট আমি নিজেকে গরীব ভাবি। কারণ বাবার টাকায় ফুটানি মারিনা।"

Recent Posts

বাংলা এবং হিন্দিতে ‘দরদ’-এর ট্রেলার ও গান প্রকাশ [ট্রেলার]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…

% দিন আগে

মুরগির লেগপিস প্রতিদিন খাওয়া কী ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…

% দিন আগে

উপদেষ্টা নাহিদকে নিয়ে নানা অপপ্রচার: সাবধান করেছেন সমন্বয়ক মাসউদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…

% দিন আগে

ইলন মাস্ককে এক লাখ সরকারি চাকরি বাতিলের দায়িত্ব দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…

% দিন আগে

গোল্ডেন আউল: ৩১ বছর ধরে চলা গুপ্তধন অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে গত ৩১ বছর ধরে চলা ‘গোল্ডেন আউল’ বিতর্কের অবসান…

% দিন আগে

হৃদয় জুড়িয়ে যাওয়া মতো এক প্রকৃতি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২৯ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে