Categories: মতামত

কিভাবে আপনি বুঝতে পারবেন অতিরিক্ত খরচ করে ফেলছেন?

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির যে হারে মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে সে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে না একজন ব্যক্তির আয়। চাকুরীজীবি কিংবা মধ্যম মানের ব্যবসায়ীদের দ্রব্যমূল্যর এই উর্ধ্বগতির জন্য জীবন বেহাল অবস্থা। এই অবস্থায় যদি আপনি আপনার নিত্যদিনের খরচের লাগাম যদি টেনে না ধরেন তবে আপনার অবস্থা হয়ে যাবে আরো কাহিল। তাই নিত্যদিনের খরচের বিষয়ে থাকুন সচেতন।


আমাদের আজকের বিষয়টি হলো কিভাবে বুঝবেন আপনার নিত্যদিনের খরচে অতিরিক্ত খরচ করে ফেলছেন। নিত্যদিনের এই খরচের বিষয়টি বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। একজন ব্যাচেলরের ক্ষেত্রে তার খরচের বিষয়টি হবে একরকম আবার একজন বিবাহিত মানুষের ক্ষেত্রে খরচের বিষয়টি হবে আরেকরকম। তবে সামগ্রিকভাবে খরচের কিছু ভেরিয়েবল বা চলক রয়েছে যা সকলের ক্ষেত্রেই প্রায় একইরকম। আমরা চেষ্টা করবো আপনাকে সেই ভেরিয়েবলগুলোর ক্ষেত্রে একটি দিকনির্দেশনা প্রদান করতে যেন আপনি আপনার খরচের ক্ষেত্রে একটি লাগাম ধরতে পারেন।

১। যানবাহনঃ

আমাদের নিত্যদিনের খরচের ক্ষেত্রে যানবাহন একটি বড় ফ্যাক্টর। আপনার চলার পথে যে পরিমাণ খরচ হয় তার একটি হিসাব করলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই ক্ষেত্রটি লাগামহীন হয়ে যাবে যদি আপনি দেখেন যে, কর্মস্থল কিংবা চলার পথে আপনি সাধারণ পাবলিক বাসের পরিবর্তে বেশিরভাগ সময় রিকশা কিংবা সিএনজি ব্যবহার করছেন। যানবাহনের পিছনে খরচের ক্ষেত্রে কিছুটা সচেতন হউন। প্রতিদিনের চলার পথে একটি সুনির্দিস্ট হিসাব রাখুন যে, যানবাহনের পেছনে কত টাকা ব্যয় করবেন। এরফলে আপনি যখনি চলার পথে দেখবেন আপনার খরচের টাকা কুলুচ্ছে না বুঝতে পারবেন আপনি যানবাহনের পেছনে বেশি খরচ করে ফেলছেন।

২। বাইরের খাবার-দাবারঃ

Related Post

যাদের কর্মস্থলটি বাসা থেকে অনেক দূরে তারা সাধারণত বাইরেই খাবারটি অর্থাৎ দুপুরের খাবারটি সেরে নেন। বাইরে খাবারের ক্ষেত্রে একটু সচেতন থাকুন। স্বাস্থ্য সচেতন তো থাকবেনই তার পাশাপাশি আপনার মানিব্যাগের স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিন। কেননা বর্তমান বাজারে বাইরের খাবারের মূল্য অনেক বেশি। আপনার স্বাস্থ্যর দিকে নজর দিলে খাবারের দাম হবে আকাশচুম্বী আর টাকার দিকে নজর দিলে খাবার হবে অস্বাস্থ্যকর। কিন্তু আপনাকে এই দুইটির সমন্বয় করতে হবে। সেটি কিভাবে করবে? খাবারের পেছনে কত খরচ করবেন তার একটি নির্দিস্ট পরিমাপ রাখুন। এই পরিমাপের বাইরে গেলেন তো আপনি বুঝতে পারবেন খাবারের পেছনে বাড়তি খরচ করে ফেলছেন।

৩। দামী ব্র্যান্ডের পরিচ্ছদঃ

দামী ব্র্যান্ডের জুতা, দামী ব্র্যান্ডের পোশাক পরিহার করার চেষ্টা করুন। জুতা এবং পোশাকের পেছনে আমাদের নিত্যদিনের খরচের একটি বড় অংশ চলে যায়। চেষ্টা করুন দামী ব্র্যান্ডের না কিনে আরো একটু সাশ্রয়ীমূল্যে পোশাক বা পরিচ্ছদ কিনতে। আপনার হয়তো একটি পোশাক দেখে বেশি ভালো লেগে গেল কিন্তু এমন ধরনের আরো কিছু পোশাক আপনার হয়তো রয়েছে। তারপরও আপনি সেই পোশাকটি কিনলেন এটি আপনার বাড়তি খরচ হয়েই থাকবে যদি না আপনার আয়টি সীমিত থাকে। কেননা মাস শেষে আপনাকে এই অতিরিক্ত খরচের জন্য অন্য একটি স্থান থেকে খরচ কমাতে হবে তা না হলে হিমসিম খাওয়া অবস্থায় পড়তে হবে।

৪। আড্ডায় চায়ের কাপে ঝড়ঃ

নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য আড্ডাটা একটি প্রয়োজনীয় বিষয়। আমাদের কর্মজীবনের ব্যস্ততায় আড্ডাটা হলো এক ধরনের টনিক। যা নতুন আরেকটি দিনের কর্মস্পৃহা জোগায়। কিন্তু আড্ডায় আপনি যদি বেশি উদার হয়ে যান তবে তা হবে আপনার জন্যই সমস্যাসঙ্কুল। আবার আপনি যদি আড্ডায় contribution না করেন তবে আপনি হয়ে যাবেন বৃত্য। তাই আড্ডায় খরচের বিষয়ে একটু লাগাম টেনে ধরুন। তাছাড়া একটি আড্ডায় সবাইল মিলে দেওয়াটাই ভালো এতে করে একজনের উপর বেশি চাপ পড়বে না আবার আড্ডার বিলের ক্ষেত্রে একজনের দিকে সবাই চেয়ে থাকবে না। আড্ডার খরচের ক্ষেত্রে নিজের একটি পরিমাপ মাথায় রাখুন যখনি দেখবেন এই পরিমাপের চেয়ে বেশি হয়ে যাচ্ছে তখনি আপনি বুঝতে পারবেন আপনার খরচের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে।

৫। বাহুল্যজনিত খরচঃ

আপনি হয়তো বাজারে গেলেন এই চিন্তা করে যে, এই এই দ্রব্যগুলো ক্রয় করবেন কিন্তু বাজার থেকে ফিরে আসলেন এই দ্রব্যগুলো না কিনে অন্য দ্রব্য কিনে নিয়ে এসে। আবার দেখা গেল শপিং এ গেলেন কি কিনতে কি কিনবেন তা ঠিক না রেখেই কিনে ফেললেন এমন অদরকারী কিছু যা শুধু আপনার টাকাই খরচ করেছে। এভাবে নিত্যদিনের বাহুল্যজনিত খরচে আমাদের অনেক টাকাই খরচ হয়ে যায়। তাই শপিং কিংবা বাজারের আগে একটি তালিকা প্রস্তুত করুন যে কি কি কিনবেন। যখনি আপনি দেখবেন আপনার মূল জিনিসের চাইতে বেশি জিনিস কেনা হচ্ছে তখনি বুঝতে পারবেন আপনি বাহুল্য জিনিস ক্রয় করছেন এবং আপনার অর্থ খরচ হচ্ছে বেশি।

আপনি একটু সচেতন হলেই অনেক টাকা আপনি অতিরিক্ত খরচ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন যা আপনার মাসিক একটি খরচের পর উদ্বৃত্ত হিসেবে থাকতে পারবে। এটিকে আপনি সঞ্চয় করতে পারবেন। আমাদের জীবনযাত্রার মানকে আরো বেশি উন্নত করতে চাইলে আমাদের সঞ্চয়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া দরকার।

This post was last modified on ফেব্রুয়ারী ২১, ২০১৭ 11:00 অপরাহ্ন

K. A. B Tohin

Recent Posts

৬ মাসে ইসরায়েলি বর্বরতায় গাজায় নিহত ১৩ হাজার শিশু

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজা উপত্যকায় গত ৬ মাসে নিহত শিশুদের সংখ্যা আঁতকে উঠার…

% দিন আগে

আপনার চরিত্র কেমন তা আপনার আঙুলের আকৃতিই বলে দেবে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার ব্যক্তিত্ব কীরকম তা বলে দিতে পারে আপনার আঙুলের আকৃতি!…

% দিন আগে

সিলেটের মালিনিছড়া চা বাগানের দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১…

% দিন আগে

খালি পেটে পাকা পেঁপে খাওয়া কী আদৌ শরীরের জন্য ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পেঁপেতে উপস্থিত ‘পেপসিন’ ও ‘প্যাপাইন’ নামক উৎসেচকগুলো পরিপাকে বিশেষ সহায়ক।…

% দিন আগে

আইফোনের নতুন গেম ইমুলেটর ডেলটা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ডেলটা নামে আইফোনের একটি নতুন ইমুলেটর অ্যাপ তৈরি হয়েছে।…

% দিন আগে

চমক দেখাতে আসছে ‘পুষ্পা-২’

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দক্ষিণী সিনেমা ‘পুষ্পা’র তুমুল জনপ্রিয়তার পর মুক্তি পেতে চলেছে ‘পুষ্পা-২’।…

% দিন আগে