প্রজন্ম চত্ত্বর ॥ আন্দোলনকারীদের অভুক্ত থাকতে হয় কেনো? জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ জাতির বিবেকের কাছে একটি প্রশ্ন বড় করে দেখা দিয়েছে আর তা হলো শাহবাগের প্রজন্ম চত্ত্বরে যারা দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টা অবিরাম আন্দোলন করে চলেছেন তারা কেনো অভুক্ত?

কদিন আগে আমরা লিখেছিলাম কোথায় থেকে খাদ্য-পানি চলে আসছে তা বোঝার উপায় নেই। কিন্তু মাত্র ক’দিন যেতে না যেতেই পরিস্থিতি কেনো এমন হলো। গতকাল ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে চ্যানেল আই ও ৭১ টিভির খবরে সরাসরি শাহবাগের প্রজন্ম চত্ত্বর থেকে বলা হয় গত রাতে অনেকেই অভুক্ত ছিলেন। আর এ কারণেই নাকি কর্মসূচিটি দেওয়া হয়েছিল ৩টা থেকে রাত ১০টা। পরে একজন কর্মী নিহত হওয়ায় নতুন প্রজন্মের আন্দোলন জোরদার করা হয়েছে। বলা হয়েছে, আমরা না খেয়ে থাকলেও চব্বিশ ঘণ্টায় আন্দোলন করবো।

অভুক্ত থাকার কথাটি আমার কাছে বড়ই খারাপ লেগেছে। কারণ আমাদের দেশে বিত্তবানদের অভাব নেই। যাদের সামর্থ রয়েছে তারা একদিন একদিন করে আন্দোলকারীদের পাশে গিয়ে খাওয়াতে পারেন। আমাদের দেশে বড় বড় মোবাইল কোম্পারী রয়েছে যারা বিভিন্ন চ্যানেলে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা খরচ করে বিজ্ঞাপন দেন। অথচ এইসব আন্দোলনকারীদের পাশে গিয়ে দাঁড়ালে তাদের এমন কিই বা ক্ষতি হতো? আমাদের দেশে কত বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যারা খেলাধুলাসহ কত কিছুতেই না অর্থ যোগান দিয়ে থাকেন। তারা কি দাঁড়াতে পারেন না আমাদের এই প্রজন্মদের আন্দোলনকারীদের পাশে?

হয়তো কেও কেও প্রশ্ন তুলতে পারেন কেনো এই আন্দোলন। এবং ইতিমধ্যে দু’একজন প্রশ্নও তুলেছেন, বিচার করবে আদালত এখানে আন্দোলন করে কি লাভ। যদি আন্দোলন না হতো হতো তাহলে এদেশ স্বাধীন হতোনা। আর যেখানে গুটি কয়েক জামায়াত-শিবির এবং একটি রাজনৈতিক দল ছাড়া আর সকলেই এই বিচারের পক্ষে সেখানে এ প্রশ্ন ওঠাটা অবান্তর। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধেও অনেকেই এরকম বিরুদ্ধাচারণ করেছে। তাতে এদেশের জনগণ বিচলিত হয়নি- আজও হবে না। এই আন্দোলন এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার আন্দোলন। কারণ একাত্তরের পরাজিত শক্তি এদেশের পুলিশ বাহিনীর ওপর যেভাবে সামপ্রতিক সময় হামলা চালাচ্ছে-তাতে এদেশের অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ একাত্তরের পরাজিত শত্রুরা এখনও এদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকার করে না। আর তাইতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালকে বাতিলের জন্য বার বার হরতাল ধর্মঘট করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও জনগণের যান-মালের ক্ষতি সাধন করছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে এদেশের তরুণ সমাজ ফুসে উঠেছে। আর এই তরুণ সমাজের সঙ্গে সঙ্গে বিবেকবান প্রতিটি মানুষ আজ এক হয়েছে। এটা আমাদের জন্য বড়ই প্রয়োজন ছিল। আজ হয়তো বিরোধী দল দাবি তুলেছে তত্ত্বাবধায়কসহ পদ্মা সেতু ও নানা দুর্নীতির বিরুদ্ধে তরুণ সমাজকে কথা বলার জন্য। কিন্তু এখন এদেশ থেকে রাজাকার তাড়াবার আন্দোলন শুরু হয়েছে- ভবিষ্যতে এদেশের জনগণ এভাবেই দুর্নীতির বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াবে। আর তাই এই আন্দোলনকে আমাদের সকলের সহযোগিতা করা নৈতিক দায়িত্ব।

Related Post

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

কায়রোতে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা আবার শুরু

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে আবারও মিশরের কায়রোতে পৌঁছেছেন ইসরায়েলের…

% দিন আগে

‘ইনস্টাগ্রামে খারাপ মন্তব্য কেনো করলি’? পুলিশের সামনেই রাস্তায় চুলোচুলি চার তরুণীর!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, মারপিট করতে করতে রাস্তায় পড়ে গিয়ে…

% দিন আগে

হাতি ও শ্রীলংকা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বুধবার, ৮ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১…

% দিন আগে

খাওয়া শেষ ৫ মিনিটেই! দ্রুত গতিতে খেলে কী কী ক্ষতি হতে পারে শরীরের?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই খেতে বসলে মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই খাওয়া শেষ হয়ে যায়।…

% দিন আগে

‘ভরসার নতুন জানালা’ প্রকল্পের অধীনে বরগুনার ১৮৫ কৃষি উদ্যোক্তার জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের আয়োজন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বরগুনার আরডিএফ মিলনায়তনে ‘ভরসার নতুন জানালা’ শীর্ষক কৃষিবিষয়ক সহায়তা উদ্যোগের…

% দিন আগে

আইফোনের ব্যাটারি হেলথ পরীক্ষা করার নিয়ম জেনে নিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিজের আইফোনের ব্যাটারি হেলথ নিয়ে যদি কৌতূহলী হয়ে থাকেন কিংবা…

% দিন আগে