দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সকলকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। এই বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী রাতে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুতে জাতি আজ এক বরেণ্য চিত্রশিল্পীকে হারালো।
৮০ বছর বয়সী বরেণ্য চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত পাঁচ দিনব্যাপী বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবমঞ্চে গতকাল রবিবার বক্তৃতাশেষে পড়ে যান প্রথিতযশা এই চিত্রশিল্পী। পরে তাকে জরুরি ভিত্তিতে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তাঁর মরদেহ স্কয়ার হাসপাতালের হিমাগারে রাখার জন্য নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। তাঁকে দেখতে ভিড় জমান আত্মীয়স্বজনসহ তাঁর অগণিত ভক্ত ও শুভাকাঙ্খিরা।
জানা যায়, রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে পাঁচ দিনব্যাপি অনুষ্ঠানের গতকাল বেঙ্গল উৎসবের চতুর্থ দিনের অনুষ্ঠানে রাত ৮.৪০ মিনিটে কাইয়ুম চৌধুরী বক্তৃতা দিতে মঞ্চে ওঠেন। বক্তৃতা শেষ করেন এবং তিনি নেমেও যান। এ সময় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বক্তৃতা দিতে দাঁড়ালে কাইয়ুম চৌধুরী আবার মঞ্চে ফিরে আসেন। বলেন, ‘আমার একটি কথা বলার রয়েছে।’ এরপরই তিনি মঞ্চেই ঢলে পড়েন। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান তাঁকে ধরতে এগিয়ে আসেন। পরে তাঁকে সবাই ধরাধরি করে সিএমএইচে নিয়ে যান। এ কারণে বেশ কিছুক্ষণ অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়।
এটিই ছিল বরেণ্য চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর সর্বশেষ বক্তৃতা
সিএমএইচের কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: নাসিরউদ্দিন জানান, শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী মারাত্মকভাবে হৃদরোগে (কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট) আক্রান্ত হয়েছিলেন। সিএমএইচে আনার পর তাঁকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান।
কাইয়ুম চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়েরসহ রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা শোক প্রকাশ করেছেন।
কাইয়ুম চৌধুরীর মরদেহ আজ সোমবার সকাল ১০টা হতে ১১টা পর্যন্ত চারুকলা ইনস্টিটিউটে রাখা হবে এরপর মরদেহ নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে বরেণ্য এই চিত্রশিল্পীকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
বরেণ্য এই চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৪ সালের ৯ মার্চ ফেনী জেলায়। তাঁর পিতা আবদুল কুদ্দুস চৌধুরী ছিলেন সমবায় বিভাগের পরিদর্শক। শচীন দেব বর্মণ এবং আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের সঙ্গে ছিল তাঁদের পারিবারিক ঘনিষ্ঠতা। স্কুলজীবন হতেই আঁকাআঁকির প্রতি ঝোঁক ছিল কাইয়ুম চৌধুরীর। তিনি ১৯৪৯ সালে আর্ট ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন, পাস করেন ১৯৫৪ সালে। তিনি পেয়েছিলেন শিল্পজগতের আরেক বরেণ্য ব্যক্তিত্ব আচার্য জয়নুল আবেদিনকেও। ১৯৫৭ সালে তিনি আর্ট কলেজে শিক্ষকতায় যোগ দেন। তেলরঙ, জলরঙ, মোমরঙ, কালি-কলম, রেশমছাপ ইত্যাদি বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করেছেন তিনি। জ্যামিতিক আকৃতির অনুষঙ্গ ব্যবহার তার চিত্রকলাকে পৃথক বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করে। বর্ণিল পটভূমিতে মোটাদাগের নকশা মূলত তাঁর প্রধানতম অঙ্কনশৈলী। তাঁর চিত্রাবলী এক বিশাল বর্ণোজ্জ্বলও বটে। চিত্রশিল্পী হিসেবে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দ্যুতি ছড়ানো এই ব্যক্তিত্বের স্বীকৃতির ঝুলিও অনেক ভারি।
একুশে পদক (১৯৮৬)
শিল্পকলা একাডেমি পদক (১৯৭৭)
সুফিয়া কামাল পদক (২০১০)
শহীদ আলতাফ মাহমুদ পদক (২০১৪)
রয়েল কোর্ট ইন তেহরান বিয়েনেইল পদক (১৯৬৬)
লেইপজিক বুক ফেয়ার প্রাইজসহ (১৯৮৩) সহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন ররেণ্য চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী।
This post was last modified on ডিসেম্বর ১, ২০১৪ 9:52 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের দ্রুত তথ্য খোঁজার সুযোগ দেওয়ার জন্য সম্প্রতি ‘সার্কেল…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই প্রথমবারের মতো সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করতে চলেছেন মামনুন ইমন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একটি সংস্থায় কাজ করতে হলে কর্মীদের মেনে চলতে হয় বিদ্ঘুটে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা সবাই জানি শরীরচর্চা করলে শরীর ফিট থাকে। ওজনও তখন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের বাজারে ফিলিপস, ট্রান্সফরমার, মনস্টার এবং এয়ারমার্স ব্র্যান্ডের এআইওটি (আর্টিফিশিয়াল…