দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সৌর্য-বীর্যের বাঙালি যুবকরাই পারে এদেশটাকে পাল্টে দিতে। একদিন এদেশের যুবকরায় বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন-একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আবার বর্তমান পরিস্থিতিতেও এদেশের যুবকরাই পারে এদেশটাকে পাল্টে দিতে। গাইবান্ধার ঘাঘট নদে স্বেচ্ছাশ্রমে চার যুবক নির্মাণ করলো এক বাঁশের সাঁকো। যাতে উপকৃত হবেন হাজার হাজার মানুষ।
বাযান্ন থেকে একাত্তর। এরপর নব্বুইয়ের গণঅভ্যূত্থান সবকিছুতেই নেতৃত্বে ছিল এদেশের যুবকরা। তারা ইচ্ছা করলেই অনেক অসাধ্য সাধন করতে পারেন। আজকের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটও অনেক তেমন। শুধু সরকারি সাহায্যের দিকে তাকিয়ে না থেকে সমাজের যুব সমাজ যদি এগিয়ে আসে তাহলে অনেক অসাধ্য সাধন করা সম্ভব। যেমন গাইবান্ধার চার যুবক দেখালো সে নজির। তারা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে
গাইবান্ধার ঘাঘট নদে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত করলো ১৭০ ফুট দীর্ঘ একটি বাঁশের সাঁকো। গাইবান্ধা সদর উপজেলাস্থ খোলাহাটি ইউনিয়নে ভেড়ামারা রেলসেতুর পাশে সাঁকোটি নির্মাণ করা হয়।
সম্প্রতি মানুষ ও হালকা যানবাহন (সাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকশা ইত্যাদি) চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই সেতুটি। সাঁকোর রূপকার হচ্ছেন চার যুবক আবদুল লতিফ, সাইদার রহমান, ফরিদ মিয়া ও এরশাদ মিয়া। এখন তাদের নাম সবার মুখে মুখে। স্থানীয়দের কাছে তাঁরা এখন শুভকাজের এক ‘মহানয়ক’।
জানা গেছে, গাইবান্ধা রেলস্টেশনের দেড় কিলোমিটার উত্তরে ঘাঘট নদের ভেড়ামারা রেলসেতু পেরিয়ে প্রতিদিন ছাত্র-ছাত্রী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার হাজার হাজার মানুষ নানা প্রয়োজনে জেলা শহরে যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু তাদের এই যাতায়াত ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এর কারণ হলো হঠাৎ ট্রেন চলে এলে, সেতু হতে লাফিয়ে পড়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। বিকল্প পথে যেতে হলে গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ সড়ক ধরে ৭ কিলোমিটার পথ ঘুরে তবেই গাইবান্ধা শহরে যাতায়াত করতে হতো। এই সমস্যা আজকের নয়, প্রায় পাঁচ যুগের।
এলাকাবাসী সূত্রে বলা হয়েছে, রেলসেতু দিয়ে যাতায়াতের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হতো এলাকাবাসী। মাস দুয়েক আগে ওই এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জনৈক শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ভেড়ামারা রেলসেতু পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। ট্রেন এসে পড়ায় তিনি তাঁর মোটরসাইকেলটি নদীতে ফেলে দেন এবং নিজেও নদীতে লাফিয়ে পড়ে প্রাণরক্ষা পান। আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য তারা মিয়া রেলসেতু পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। তিনি এখনও আহত অবস্থায় বাড়িতে শয্যাশায়ী।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফের নেতৃত্বে এলাকার ৩ সমাজকর্মী ফরিদ, সাইদার এবং এরশাদ ভেড়ামারা রেলসেতুর পশ্চিম পাশে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরির পরিকল্পনা করেন। তাঁদের এই উদ্যোগে সাড়া দিয়ে পাশের গ্রামের লোকজনও আর্থিক সহায়তা করে। এরপর সাঁকো তৈরির কাজে নেমে পড়েন ওই চার যুবক। এলাকার লোকজনও তাঁদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবে সবাই সাহায্যের হাত বাড়ি দেয়। টানা ১০ দিনের পরিশ্রমে অবশেষে তৈরি হয়ে যায় সেই বাঁশের সাঁকো।
আবদুল লতিফ সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘শুভকাজে গ্রামের মানুষ কিভাবে এগিয়ে আসেন তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি এই কাজ করতে গিয়ে। নিজেদের বাঁশের ঝাড় হতে ৩শ’ বাঁশ দিয়েছেন এলাকাবাসী। আবার যে যতটুকু পেরেছেন অর্থ সাহায্যও করেছেন। আবার অনেকেই গায়ে-গতরে খেটেছেন। তাঁদের অবদানও কম নয়।’
চার যুবকের এই উদ্যোগের ফলে ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবেন। এবার সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য নিশ্চয়ই বিষয়টি অবগত হয়ে স্থায়ীভাবে একটি সেতু নির্মাণের প্রচেষ্টা করবেন- এমনটিই আশা করা হচ্ছে।
This post was last modified on ডিসেম্বর ৪, ২০১৪ 12:16 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিল্মের মানুষদের নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের অভিযোগে ২০২১ সালে সেন্সর বোর্ড থেকে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মধ্য আফ্রিকার দেশ চাদের রাজধানী এনজামেনায় প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বোকো হারাম…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভাইরাল এক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, হাতির পিঠে দড়ি দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৫ পৌষ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি মোটামুটি সব ধরনের মৌসুমি ফল এবং সবজিই স্বাস্থ্য…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মোবাইল হ্যান্ডসেটের এন্ট্রি-লেভেল ক্যাটাগরিতেও ব্যবহারকারীদের চমকে দিতে প্রস্তুত অনার বাংলাদেশ।…