রহস্যময় ভয়ঙ্কর এক পুতুল দ্বীপের কাহিনী!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ আপনাদের জন্য রয়েছে রহস্যময় ভয়ঙ্কর এক পুতুল দ্বীপের কাহিনী! মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটি হতে ১৭ মাইল দক্ষিণে জোকিমিলকো জেলায় রয়েছে এই ভয়ঙ্কর ‘পুতুল দ্বীপ’।

পুতুল নিয়ে খেলা করতে দেখা যায় ছোট ছেলে-মেয়েদের। বিশেষ করে মেয়েরা ছোট বেলায় পুতুল নিয়ে বেশি খেলেন। এক কথায় ছোটবেলায় সবার প্রিয় খেলনার মধ্যে একটি হলো এই পুতুল খেলা! কিন্তু আজকে যে পুতুলের কথা বলবো সেটি রহস্যময় ও ভয়ঙ্করও বটে। মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটি হতে ১৭ মাইল দক্ষিণে জোকিমিলকো জেলায় রয়েছে এই ভয়ঙ্কর ‘পুতুল দ্বীপ’। সাধারণ একটি ঘটনা হতে এই দ্বীপের রহস্যময় যাত্রা শুরু হয়। সেই ঘটনাটি এখন থেকে প্রায় ৯০ হতে ৯৫ বছরের আগের ঘটনা।

Related Post

জানা যায়, এই দ্বীপটি ছিল শীতল এবং অন্ধকারাচ্ছন্ন। তিন মেক্সিকান শিশু এই দ্বীপে পুতুল নিয়ে খেলছিল। খেলাচ্ছলে তারা পুতুলের বিয়েও দেয়। খেলাকালীন সময় হঠাৎ একটি শিশু উধাও হয়ে যায়। এরপর শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। বহু খোঁজাখুঁজির পর পাশের একটি খালে ওই শিশুটির মৃহদেহ পাওয়া যায়।

আর তখন থেকেই সাধারণ মানুষের কাছে এই দ্বীপটি হয়ে ওঠে ভয়ঙ্কর ও রহস্যময় এক দ্বীপ। তারপর থেকে লোকমুখে কালক্রমে প্রচলিত হয়ে আসছে নানা ধরনের কাহিনী। এই দ্বীপটিতে গেলে মেক্সিকোর অনেক সাহসী বীরেরও বুক কেঁপে ওঠে।

রহস্যময় ও আশ্চর্য এই দ্বীপে গাছের ডালে ঝুলছে পুতুল। আবার ছোট পরিত্যক্ত ঘরের দেওয়ালেও ঝুলছে পুতুল। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই শুধু পুতুল আর পুতুল। এই নির্জন দ্বীপে এতো পুতুল এলো কোত্থেকে, সেটা কেওই জানে না। স্থানীয়দের ভাষায় দ্বীপটির নাম হলো ‘ইলসা ডে লাস মিউনিকাস’ বা পুতুলের দ্বীপ।

শোনা যায় যে, নিজে থেকে পুতুলগুলো এই দ্বীপে আসেনি। ডন জুলিয়ান সানতানা নামের এক যাজক ১৯৫০ সালের দিকে এই দ্বীপটিকে তপস্যা করার জন্য বেছে নিয়েছিলেন। তার কাছেই নাকি মৃত শিশুটির আত্মা আবদার করেছিলো, অনেক পুতুল এনে দ্বীপের চারপাশে টাঙিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু যেমন-তেমন পুতুল এগুলো নয়। বীভৎস সব পুতুল চেয়ে বসে শিশুটির আত্মা, যেগুলো দেখলে মনে হবে তারা মানুষের নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছেন। ওই আত্মার অনুরোধেই নাকি জুলিয়ান তার আশ্রমে চাষ করা সবজির বিনিময়ে মানুষের নিকট হতে নষ্ট পুতুল সংগ্রহ করতে থাকেন। নষ্ট পুতুল এনে দ্বীপের চারপাশে টাঙিয়ে দিলে শিশুটির আত্মা খুশি হতো। এভাবেই এক সময় এই দ্বীপটি গড়ে ওঠে পুতুলের এক রহস্যময় দ্বীপ হিসেবে।

২০০১ সালের ২১ এপ্রিল ঘটে আরেকটি রহস্যময় ঘটনা। ওইদিন ডন জুলিয়ান তার ভাইয়ের ছেলেটিকে নিয়ে সেই খালটিতে মাছ ধরছিলেন, যেই খালটিতে শিশুটির মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। মাছ ধরার এক পর্যায়ে ডন জুলিয়ান তার ভাইয়ের ছেলেকে বলেন, পানির নিচ হতে কেও একজন তাকে ডাকছে। এর কিছুদিন পরই ডন জুলিয়ানের মৃতদেহ ওই খাল হতে পাওয়া যায়।

এভাবে একের পর এক ঘটনার কারণে এক রহস্যম হয়ে ওঠে এখানকার কাহিনী। লোকমুখে প্রচলিত হয়ে আসছে দ্বীপটিকে নিয়ে নানা ধরনের কাহিনী। আর তাই মানুষের কাছে আজও রহস্যময় এই ‘ইলসা ডে লাস মিউনিকাস’ বা পুতুলের দ্বীপ।
তথ্যসূত্র: muitoassustadorbr.blogspot.com

This post was last modified on জানুয়ারী ৪, ২০২২ 2:20 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

আপনি কেনো খাবেন ছোট মাছ?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছোট মাছ যেমন- মলা, কাচকি, পুঁটি, টেংরা, তিনকাটা, খরে ইত্যাদি…

% দিন আগে

এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসি-এর ৩০তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসি এর ৩০ তম বার্ষিক সাধারণ সভা…

% দিন আগে

গণিতের “শূন্য’ কেনো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গণিতের বিশাল জগতে কোন সংখ্যাটি আসলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে?…

% দিন আগে

নতুন বছর সিনেমা ‘গোলাপ’ উপহার দিবেন পরীমণি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢালিউডের আলোচিত নায়িকা পরীমণিকে নিয়ে ভক্তদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পালা শেষ…

% দিন আগে

ফিলিস্তিনিসহ ৭ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার ট্রাম্প প্রশাসন ফিলিস্তিনি পাসপোর্টধারী এবং ৭ দেশের নাগরিকদের মার্কিন…

% দিন আগে

ইউরোপের সবচেয়ে আজব মিউজিয়ামগুলো প্রকাশ পেলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ইউরোপের মধ্যে রয়েছে এমন মিউজিয়াম যা…

% দিন আগে