দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পৃথিবীতে কত রকমের দ্বীপপুঞ্জ রয়েছে। নানা প্রকৃতি রয়েছে এসব দ্বীপপুঞ্জের। ইন্দোনেশীয়ার দ্বীপপুঞ্জ কোমোডো ড্রাগন কাহিনী রয়েছে আজকের প্রতিবেদনে।
এই ‘কোমোডো ড্রাগন’ দ্বীপে কোন মানুষের বসবাস নেই। এর চারিদিকে শুধুই গভীর অরণ্য। এখানে ছায়াছায়া অন্ধকার, ভেজা মাটি। এই ‘কোমোডো ড্রাগন’ দ্বীপের একটি রহস্যময় প্রাণীর কারণে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করলো।
১৯১২ সালে এই দ্বীপে একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ভেঙ্গে পড়লো। অবশ্য বৈমানিক কোন মতে বেঁচে যান। কোমোডো দ্বীপে বেশ কিছু হিংস্র প্রাণী রয়েছে। ওই বৈমানিক বুদ্বি খাটিয়ে এইসব প্রাণীর হাত থেকে রক্ষা পান। কিন্ত তিনি সেখানে এমন এক প্রাণী দেখেন যা তাকে আতঙ্কিত করে তোলে। তিনি দেখেন প্রাণীটির মুখ হতে আগুন বের হচ্ছে।
ওই দ্বীপ হতে উদ্বার পেয়ে বৈমানিক সভ্য জগতে এসে বর্ণনা করেন তার রোমহর্ষক অভিজ্ঞতার নানা কথা। তিনি জানান যে, সেখানে আগুন মুখো ড্রাগন তিনি দেখেছেন সেই দ্বীপে। তার এই বক্তব্যকে অনেকেই পাগলের প্রলাপ বলেই উড়িয়ে দেন। কারণ হলো ড্রাগন হচ্ছে চীনের একটি কাল্পনিক প্রাণী। ড্রাগন নিয়ে পুরাকালে অনেক গল্প গাথা রয়েছে। চীনের পৌরানিক কাহিনীতে এমন অনেক ড্রাগনের গল্প রয়েছে। আসলে আধুনিক সভ্য জগতে এই পৌরানিক প্রাণীটি কিভাবে দেখা যাবে?
বহু আগের কথা। ১৯২৭ সালে একদল আমেরিকান অভিযাত্রী কোমোডো দ্বীপে যান সেই রহস্যময় প্রাণীটির খোঁজে। তারা সেই ভয়ঙ্কর প্রাণীটির ছবি তুলতেও সমর্থ হন। সেই ছবি যখন প্রকাশিত হয় তখন অনেকেই ছবি দেখে রীতিমত বিস্মিত হন। এই ধরনের বিচিত্র আকারের প্রাণী এই সভ্য জগতে রয়েছে তা অনেকের কল্পনাতেই আসেনি।
আমেরিকান অভিযাত্রী দলের এক নেতা বলেন, ওই প্রাণীটির মুখ দিয়ে প্রকতপক্ষে আগুন বের হয়না। আসলে বের হয় কমলা রঙের চকচকে জীভ। সেই জীভটি যখন সাই সাই করে বের হয় আর ঢুকে, তখন মনে হয় আগুন ঝলকাচ্ছে, বা আগুনের ফুলকি বের হচ্ছে। এরপর ফ্রান্সের একদল টিভি তথ্যচিত্র কলাকুশলী সেই দ্বীপে যান ও ছবি তোলেন। সেই ছবির নাম দেওয়া হয় ‘কোমোডোর ড্রাগন’।
বিজ্ঞানীরা বলেন, এই ধরনের প্রাণী ৫০ কোটি বছর আগে অষ্ট্রেলীয়ায় ছিল। এরা হচ্ছে মনিটর লিজার্ড টাইপের প্রাণী। বিজ্ঞানীদের কথায় যেনো রহস্য আরও ঘনীভূত হলো। এরপর থেকে জাকার্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিজ্ঞানের বিজ্ঞানীরা ব্যাপকভাবে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান চালাতে থাকেন।
১৯৬১ সালে মধ্যে কোমোডোতে আরও বেশ কিছু অভিযান চালানো হয়। যে কারণে জানা গেলো বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেলো শুধু কোমোডোতেই নয়, আশেপাশে আরও অন্তত ৪টি দ্বীপে রয়েছে এই প্রাণী। আবারও বিজ্ঞানীদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ালো বিষয়টি। দূরের অষ্ট্রেলীয়া হতে কিভাবে এখানে আসলো এসব প্রাণী? কেমন করে এতদিন টিকেই বা রইল এখানে? পৃথিবীর অন্য কোথাওতো নেই এসব প্রাণী। বিষয়টি নিয়ে তথ্য সংগ্রহের আগ্রহ প্রকাশ করলো রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা। তারা ঠিক করলো ইন্দোনেশীয়া-রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা যৌথ উদ্যোগে এক অভিযান চালাবে।
জাহাজে করে এক সময় সেই ওই দ্বীপে গেলেন বিজ্ঞানীরা। দ্বীপে নামার কিছুক্ষণের মধ্যেই দুটি ড্রাগন দেখলেন তারা, একটি ১৩ ফুট অন্যটি ৭ ফুট। শক্ত সমর্থ পা এটির, খয়েরি কালো রঙ। মাটির ওপর লেজটাকে ঘষতে ঘষতে হাটে। প্রচণ্ড শক্তি এদের
লেজে। বিজ্ঞানীরা একটি মরা হরিণ এনেছিলেন সেখানে, অল্প সময়ের মধ্যেই হরিণ দুটি সাবাড় করে ফেললো রাক্ষুস দুটো একেবারে শিংসহ।
এর কয়েকদিন পর বিজ্ঞানীরা দেখলেন, লেজের এক বাড়িতে একটি বুনো শুয়োর মেরে ফেললো। খুব পেটুক স্বভাবের প্রাণীগুলো। সারাক্ষণ খাই খাই ভাব। খাবারের লোভ দেখিয়ে বেশ কয়েকটিকে ধরাও হলো। এটিকে জাকার্তা চিরিয়াখানায় এনে রাখা হলো। গবেষণার জন্য ৩টি প্রাণী ব্যবচ্ছেদ করা হলো। দেখা গেলো এরা আসলেই ৫০ কোটি বছর আগের অষ্ট্রেলীয়ার রহস্যময় পুরানো প্রাণী।
আবার একটি ড্রাগনকে সমুদ্রে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হলো। তাতে দেখা গেলো দিব্যি সাতরে তীরে চলে এসেছে। তাতে অনুমান করা যায় প্রাণীগুলো সুদুর অষ্ট্রেলীয়া হতে সাগর পাড়ি দিয়ে এখানে চলে এসেছে। প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে এতগুলো বছর প্রাণীগুলো কিভাবে টিকে থাকলো এখানে? এর একটিই উত্তর হলো পরিবেশের জন্য। কারণ হলো ওইদ্বীপে তাদের কোন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। খাবারের কোন ঘাটতি পড়েনি। আর তাই ডাইনোসরের সমসাময়িক এই প্রাণীটি প্রকৃতির বিস্ময় হয়ে এখনও টিকে রয়েছে।
তথ্যসূত্র: অজানা জ্ঞান (Unknown Knowledge) এর সৌজন্যে।
This post was last modified on জানুয়ারী ২৭, ২০২১ 11:15 পূর্বাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মোবাইল হ্যান্ডসেটের এন্ট্রি-লেভেল ক্যাটাগরিতেও ব্যবহারকারীদের চমকে দিতে প্রস্তুত অনার বাংলাদেশ।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মৌরির গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্যস্ত সময় পার করে বছরশেষে একটু বেড়াতে গিয়েছিলেন বলিউড অভিনেত্রী…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ এক দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। দাবানলে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘটনাটি ভারতের। সেখানকার কুচামন পুরসভার বিরোধী নেতা অনিল সিংহ মেদতিয়া।…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৪ পৌষ ১৪৩১…