দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ খবরটি ছোট্ট হলেও এর পরিধি ব্যাপক। কারণ খুব সাধারণ একটি বিষয় হলো এই পরচুলা। অথচ এই পরচুলা এবার ক্যান্সার রোগীদের জন্য সুখবর বয়ে এনেছে। অর্থাৎ তাদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে!
বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়েছে, ভারতের ব্যাঙ্গালোরের পরচুলা দোকান হতে তৈরি শত শত পরচুলা পরে ক্যান্সার রোগীদের জীবনে যেনো নতুন প্রাণের সূচনা করছে।
বিবিসিকে মরিশেট্টি কুমার নামে পরচুলা তৈরির কারিগর বলেছেন, ‘কোনও কাজই ছোট বা বড় হয় নয়। কেও হয়তো ভাবতে পারেন যে তারা যেটা করছেন সেটা ক্ষুদ্র কিংবা অর্থহীন। তবে আমি আমার ভাগ্যকে মেনে নিয়েছি হাসিমুখে। কারণ পরচুলা তৈরি করাই আমার একমাত্র কাজ।’
খবরে বলা হয়েছে, ‘যেসব মানুষ রোগে ভুগে বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছেন, তারা এই পরচুলা পরে খুশী হচ্ছে। অর্থাৎ তাদের মনে নতুন করে আশার সঞ্চার জাগছে। তাদের জন্য এতুটুক করতে পারাটা সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার।’ এমনভাবেই বলেছেন পরচুলার করিগর মরিশেট্টি কুমার।
এক কৃষক পরিবারে জন্ম নেওয়া মরিশেট্টি কুমার তরুণ বয়স হতেই ঘর ছেড়ে পালান। তার লক্ষ্য ছিল কান্নাডা ভাষার চলচ্চিত্র তৈরিতে যে দল কাজ করছে তাদের সঙ্গে কাজ করবেন তিনি। সেই দলের সঙ্গে কাজও করেছেন দীর্ঘকাল। চলচ্চিত্র ইউনিটের সঙ্গে দীর্ঘ কাজের অভিজ্ঞতায় তিনি শিখেছেন কিভাবে মানুষের ফেলে দেওয়া চুল দিয়ে বিভিন্নভাবে পরচুলা তৈরি করা সম্ভব। পরচুলা তৈরির কাজটি অনেক কষ্টকর। কারণ সাধারণ চুলগুলো প্রতিটিই হাতে বুনতে হয়।
যখন তিনি এই কাজটি শেখেন তখন ক্যান্সার কিংবা কেমোথেরাপির কারণে রোগীদের চুল পড়ে যেতে পারে সে সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতেন না তিনি।
মরিশেট্টি কুমারের কাছে একদিন একজন কাস্টমার এলেন যিনি ক্যান্সারের কারণে তার সব চুল পড়ে যাওয়ায় আক্ষেপ করছিলেন। মূলত সে সময়েই এই রোগ এবং রোগের প্রভাবে চুল পড়ে যাবার বিষয়ে জানতে পারলেন মরিশেট্টি কুমার।
‘আমি সেদিন ওই কাস্টমারের মাথায় পরচুলা পরিয়ে দেবার পর তার চোখে যে উজ্জ্বল দৃষ্টি দেখতে পেয়েছিলাম সেটিই আমার জীবনে এক পরিবর্তন নিয়ে এলো’ -এ কথা বললেন মরিশেট্টি কুমার।
মরিশেট্টি মূলত কিনে আনা চুলগুলো পরিস্কার করেন এবং সেগুলো ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে তারপর সেগুলো রোদে শুকান। টিভি ও চলচ্চিত্র তারকাদের জন্য মূলত পরচুলা তৈরির কাজ করতেন মরিশেট্টি কুমার। তবে এখন তা থেকে তিনি সরে এসে শুধুমাত্র ক্যান্সার রোগীদের জন্য পরচুলা তৈরি শুরু করে দিয়েছেন।
মরিশেট্টি কুমার পরচুলা তৈরির জন্য তিরুপাটি শহর হতে সাধারণ চুল কিনে আনেন। এর কারণ হলো ওই স্থানটি মাথার চুল ফেলার জন্য মঙ্গলজনক বলা হয় বলেই তীর্থযাত্রীরা সেখানে তাদের মাথার চুল ফেলে আসেন।
মরিশেট্টি কুমারের এই কাজে সাহায্য করেন তার স্ত্রী ললিতা মরিশেট্টি। ললিতা মরিশেট্টি মূলত কিনে আনা চুলগুলো পরিস্কার করেন এবং সেগুলো ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে তারপর রোদে শুকান। এরপর চুলের সেই বান্ডিলগুলো নিয়ে সেগুলো বাঁধতে বসেন। ক্যান্সারের রোগীদের জন্য এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার পরচুলা তৈরি করেছেন মরিশেট্টি কুমার ও মিসেস ললিতা মরিশেট্টি। স্বামী-স্ত্রীর যৌথ প্রচেষ্টায় একটি দোকানও খুলেছেন এই দম্পতি।
এই পর্যন্ত তারা ২০ হাজারেরও বেশি পরচুলা তৈরি করেছেন কেবলমাত্র ক্যান্সার রোগীদের জন্য। এই পরচুলার দামও খুব কম নেন তারা।
মরিশেট্টি কুমার বলেছেন, ‘আমি খুব বেশি দাম পাইনা, তবে এই কাজ করে আমি যে মানসিক শান্তি পাই, তা এককথায় বুঝানোর মতো নয়’ ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষের প্রশান্তি দেখে এই পরচুলার কারিগর শান্তি পান। এভাবেই তিনি বাকি জীবন অতিবাহিত করতে চান। এটাকে তিনি পেশার সঙ্গে সমাজ সেবা হিসেবেও দেখেন।
This post was last modified on জানুয়ারী ২২, ২০২৪ 12:14 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ২০২৪ সালেই মুক্তির কথা ছিল এম রাহিম পরিচালিত সিয়াম আহমেদ…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশাল গোলাকৃতি একটি বেলুনের ভিতর লেহঙ্গা পরে রয়েছেন এক বিয়ের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৭ পৌষ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনি দুধ কোন সময় খাচ্ছেন ও কতোটুকু খাচ্ছেন, তা জানা…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মেসেজিং এন্ড কলিং প্ল্যাটফর্ম হলো…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নুহাশের চলচ্চিত্র মানেই এক অন্যরকম অনুভূতি। আর সেই চলচ্চিত্র ‘বেসুরা’য়…