বিদ্যুৎহীন গ্রামে ফ্রিজ-টিভি, ওয়াশিং মেশিন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সত্যিই আজব গ্রামের খোঁজ পাওয়া গেছে। যে গ্রামে বিদ্যুৎ নেই, তারপরও প্রায় সব বাড়িতেই রয়েছে টিভি, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, মিক্সারসহ নানা রকমের বৈদ্যুতিক যন্ত্র!

তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো এসব বিদ্যুৎচালিত যন্ত্রগুলো চালানোর জন্য কোনো বিদ্যুৎই নেই ওই গ্রামে! কখনও বিদ্যুৎ ছিলও না ওই গ্রামে।

হয়তো প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে এসব যন্ত্র কেনা হলো কেনো? এর উত্তর হলো আসলে এগুলো কখনও কেনা হয়নি। ভোটের আবেদনের সঙ্গে (ভেট) উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে এসব যন্ত্রগুলো।

Related Post

এমন আজব ঘটনাটি ভারতের তামিল নাডু রাজ্যের কোয়াম্বাটুর জেলাস্থ প্রায় ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত আজব দুটি গ্রাম সেম্বুক্কারাই এবং থুমানুরে গ্রাম। দুটি গ্রাম মিলিয়ে প্রায় ১৫০ পরিবারের বসবাস। প্রতিবার ভোটের পূর্বে দুটি গ্রামের বাসিন্দাদের বাড়িতে জমা হতে থাকে বৈদ্যুতিক সামগ্রী! এসব পাঠিয়ে নিজেদের ভোটব্যাংক নিশ্চিত করেন স্থানীয় নেতারা। তবে মজার বিষয় হলো, সেই ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ঘরে তুলেও তা চালানোর উপায় থাকে না ওই গ্রাম দুটির বাসিন্দাদের।

আজকের কথা নয়, সেই ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর হতে আজ পর্যন্ত এতো বছরেও সেম্বুক্কারাই এবং থুমানুরে গ্রামে বিদ্যুৎ বাতি জ্বলেনি ;কোনো দিন! অর্থাৎ বিদ্যুতের কোনো রকম সুবিধাই নেই এই গ্রাম দুটিতে।

জানা যায়, প্রতিবছর ভোটের সময় এলে গ্রাম দুটিতে রাজনৈতিক নেতারা ভোট পাওয়ার আশায় গ্রামবাসীদের জন্য বিভিন্ন রকমের ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ভেট নিয়ে যান। সেই ভেটের তালিকায় রয়েছে টিভি, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিনের মতো নানা ধরনের ইলেনট্রনিকস সমগ্রী। ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পর হতেই এই প্রত্যন্ত গ্রাম দুটিতে আজব ধরনের এই ট্রাডিশন চালু রয়েছে। এই দুটি গ্রামের দেড় শতাধিক বাসিন্দার বেশির ভাগই দিনমজুর অথবা কৃষক।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, তামিলনাড়ুর ডিএমকে কিংবা এআইএডিএমকে যে রাজনৈতিক দলের নেতা হোন না কেনো, ভোটের মুখে ভেট নিয়ে এসে গ্রামের বাসিন্দাদের সন্তষ্ট করে যান ভোটের সময়। নিশ্চিত করেন তাদের ভোট ব্যাংক। ভেট পেয়ে গ্রামের মানুষরা মোনাফেকি না করে ভোটটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের নেতাদের দেন। তবে ভোট দিলে কি হবে আসল কাজের কিছুই হয় না। ভোট মিটলেই প্রত্যন্ত গ্রামে আর কখনও দেখা মেলে না ওইসব নেতাদের। অনেক নেতাই বিদ্যুৎ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও আজও বাস্তবায়িত হয়নি তা।

আর তাই এতো বছর ধরে সেম্বুক্কারাই এবং থুমানুরে গ্রামের ঘরে ঘরে ইলেকট্রনিকস পণ্যের পাহাড় জমে গেছে। বছরের পর বছর ধরে বাসিন্দাদের একটি দাবি ছিল বিদ্যুৎ দিতে হবে। তা হয়নি আজও পর্যন্ত!

This post was last modified on সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৭ 1:00 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে ওষুধের পাশাপাশি জীবন যাত্রায় কিছু বদল আনতে হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকলে খাওয়া-দাওয়ায় রাশ টানতে হবে। তবে…

% দিন আগে

প্রবৃদ্ধিশীল ফ্রিল্যান্সিং খাতে গুরুত্বারোপ: কুমিল্লায় ফ্রিল্যান্সার মিটআপ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফ্রিল্যান্সিং খাতের প্রবৃদ্ধির ওপর আলোকপাত করে সম্প্রতি ফ্রিল্যান্সার নিয়ে এক…

% দিন আগে

সবাইকে সাথে নিয়ে দেশের ঝান্ডা-বেসিসের পতাকা পুরো বিশ্বে বয়ে বেড়াতে চাই- এম আসিফ রহমান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নতুন প্রজন্মের কাছে ভিষণ জনপ্রিয় মুখ এম আসিফ রহমান। ওয়ার্ডপ্রেস…

% দিন আগে

ইত্যাদির গানে দুনিয়া মাত করলেন অভিনেত্রী ফারিণ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবারের রোজার ঈদে ইত্যাদির বিশেষ পর্বে গায়িকা হিসেবে অভিষেক ঘটে…

% দিন আগে

ফিলিস্তিনের অবৈধ দখল ছাড়তে হবে: আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন যে, ইসরাইলকে ফিলিস্তিনের…

% দিন আগে

ছবিতে রয়েছে একটি ব্রাশ: খুঁজে বের করতে পারবেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মূলত এই ছবিটি একটি হাতে আঁকা কার্টুন। তবে গল্পটি বহুপুরনো…

% দিন আগে