দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রত্যেক মানুষের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন সখ। মানুষের রুচির ভিন্নতা থাকতে পারে সেটিই স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে বিষধর সাপের কামড় খাওয়া কী কারও সখ হতে পারে?
মানুষের চিন্তাধারা যেমন ভিন্ন তেমনি সখগুলোও হয়ে থাকে ভিন্ন ধরনের। কিন্তু তাই বলে এমন বিচিত্র ধরনের সখও যে কারও থাকতে পারে তা কখনও চিন্তাও করা যায় না। টিম ফ্রিডি নামে এক ব্যক্তির শখের কথা শুনলে সত্যিই আপনার ঘুম হারাম হয়ে যেতে পারে।
আমাদের প্রায় সকলেরই সাপভীতি রয়েছে। কারণ হলো সাপের কামড়ে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে। যদিও সব সাপই বিষধর নয়। তবে তাতে কী, সাপ দেখলে আমরা ভয়ে ভিত হয়ে পড়ি আর এটিই স্বাভাবিক ঘটনা। কেনোনা, আমরা প্রাণীটি সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানি না। আবার বিষহীন সাপের কামড়ও অনেক যন্ত্রণাদায়ক। যে কারণে সাপের ভয়ে কমবেশি আমরা সবাই অস্থির থাকি।
তবে আজ এমন এক ব্যক্তির কথা জেনে নিন, যিনি শখ করেই সাপের কামড় খান! তাও আবার তার নাকি বিষধর সাপের কামড় প্রিয়! এসব শুনলে তাকে রক্ত-মাংসের মানুষ বলে আপনার মনে নাও হতে পারে। মনে হবে যেনো তিনি অন্যগ্রহের একজন মানুষ।
৩৭ বছর বয়সি মার্কিন নাগরিক টিম ফ্রিডি। গত ১৬ বছরের মধ্যে তিনি স্বেচ্ছায় অন্তত ১৬০ বার বিষধর সাপের কামড় খেয়েছেন। তবে তাতে কি দিব্যি বহাল তবিয়তে বেঁচে রয়েছেন তিনি। তবে সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, বিশ্বের সবচেয়ে বিষধর দুই সাপ- টাইপ্যান এবং ব্ল্যাক মাম্বারের কামড়ও তিনি খেয়েছেন। এই দুটি সাপের কোনো একটি কাওকে কামড়ালে কয়েক মিনিটের মধ্যে তার মৃত্যু হওয়া স্বাভাবিক। অথচ ওই সাপগুলোর কামড় খেয়েও টিম ফ্রিডির কিছুই হয়নি!
টিম ফ্রিডি পেশায় একজন বিজ্ঞানী। মানুষের কল্যাণে সাপের বিষের ভ্যাকসিন তৈরি করার উদ্দেশ্যে তিনি এমন পথে হেঁটেছেন। অর্থাৎ এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে শুধু শখ নয়, শখের পাশাপাশি বিষধর সাপের কামড় খাওয়া তার গবেষণারও একটি অংশ।
তবে সাপের কামড় সবসময় সুখের হয় তা নয়। ২০১১ সালে সাপের কামড় খেতে গিয়ে একবার কোমায় চলে গিয়েছিলেন ফ্রিডি। পরপর দু’বার কোবরা সাপের কামড় খেয়েছিলেন ফ্রিডি। প্রথম কামড় খাওয়ার পর সব ঠিক ছিল। তবে দ্বিতীয়বার কামড়ের পর অজ্ঞান হয়ে যান ফ্রিডি। এরপর তিনি বলেন, ‘ওটা একটা বড় ভুল ছিল আমার। তবে কখনও কখনও আপনাকে ওরকম ভুল করতে হতেই পারে।’
এদিকে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞানী ড. ব্রায়ান হানলে টিম ফ্রিডিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন যে, তার শরীরে এখন অ্যান্টিবডির সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ। নিজের হাতে সাপের কামড় খাওয়ার কারণে ২০ বছরের দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন করে গত বছর ফ্রিডিকে ছেড়ে চলে গেছেন তার স্ত্রী। এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে তার স্ত্রী বহুবার নিষেধ করেছিলেন, তবে ফ্রিডি শোনেননি। শেষমেষ বিচ্ছেদ ঘটেছে তাদের দীর্ঘ ২০ বছরের দাম্পত্য জীবনের।
তবে যতোই জীবনের ঝুঁকি থাকুক না কেনো সাপের বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরির মহান কাজটি করে চলেছেন এই বিজ্ঞানী। সুতরাং সাপের ভয় এক দিকে সরিয়ে রেখে মানবতার বৃহত্তর কল্যাণের জন্য এই নিঃস্বার্থ মানুষটিকে অবশ্যই ধন্যবাদ জানানো উচিত।
স্বেচ্ছায় সাপের কামড় খাওয়ার ভিডিওটি দেখুন
This post was last modified on আগস্ট ১৯, ২০১৬ 6:31 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবারের রোজার ঈদে ইত্যাদির বিশেষ পর্বে গায়িকা হিসেবে অভিষেক ঘটে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন যে, ইসরাইলকে ফিলিস্তিনের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মূলত এই ছবিটি একটি হাতে আঁকা কার্টুন। তবে গল্পটি বহুপুরনো…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জীবন-যাপনে কিছু নিয়ম করে চলা উচিত। কারণ নিয়ম করে না…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনলাইনে যে কোনো অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রয়োজন হয় পাসওয়ার্ড।…