ভারতে পবিত্র কোরআন শেখাচ্ছেন এক হিন্দু তরুণী!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ খোদ মন্দির চত্বরে বসে ধর্মগ্রন্থ পবিত্র কোরআনের পাঠ শিক্ষা দিচ্ছেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো যিনি এই পাঠ দিচ্ছেন তিনি একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী!

টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, বিস্ময়কর এই দৃশ্যের দেখা মিলবে ভারতের উত্তরপ্রদেশের আগ্রা শহরের সঞ্জয় নগর কলোনিতে গেলে। সেখানে প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলা পূজা কুশওয়াহা নামে ১৮ বছর বয়সী এক তরুণী পবিত্র কোরাআন শরীফের পাঠ শেখাচ্ছেন ৩৫ জন মুসলমান শিশুকে! স্থানীয় একটি মন্দির চত্বরে বসে চলে এই কোরআন পাঠ শিক্ষাদানের কর্মসূচি।

সংবাদ মাধ্যমকে পূজা কুশওয়াহা জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বছর পূর্বে এলাকায় সঙ্গীতা বেগম নামের এক মুসলমান নারী শিশুদের কোরআন শেখাতেন। তাঁর কাছে পড়তে গিয়েই প্রথম কোরআন শেখার প্রতি আগ্রহ জন্মায় তার। এরপর ধীরে ধীরে সঙ্গীতা বেগমের কাছ থেকে কোরআন শিখতে থাকেন পূজা। স্পষ্ট উচ্চারণ এবং ভাষাগত জ্ঞান যথেষ্ট ভালো থাকায় খুব তাড়াতাড়িই কোরআন পাঠ আয়ত্ত করে ফেলেন পূজা।

Related Post

এরপর ব্যক্তিগত কারণে সঙ্গীতা বেগম শিশুদের কোরআন শেখানোর কাজ ছেড়ে দেন। কিন্তু তিনি এই দায়িত্ব দিয়ে যান তাঁরই একনিষ্ঠ ছাত্রী পূজার ওপর।

কোরআন শিক্ষা দান শুরু সেই থেকেই। তখন থেকেই সঙ্গীতা বেগমের মতোই অত্যন্ত দায়িত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে পূজা এলাকার শিশুদের কোরআন পাঠের শিক্ষা দিয়ে আসছেন। তবে শিক্ষা দানের জন্য কোনো শিশুর কাছ থেকে পারিশ্রমিক নেন না পূজা।

হিন্দু পরিবারের সন্তান হওয়া সত্বেও পূজার নির্ভুল উচ্চারণ এবং ধর্মগ্রন্থ কোরআনের ওপর যথেষ্ট জ্ঞান থাকায় স্থানীয় মুসলিম পরিবারের অভিভাবকরাও তেমন কোনো আপত্তি তোলেননি। বরং তারা পূজার কাছে কোরআনের পাঠ গ্রহণের জন্য নিজেদের সন্তানদের প্রতিদিন নিয়মিতভাবে পাঠাচ্ছেন। যে কারণে ক্রমেই বাড়ছে পূজার শিক্ষার্থীর সংখ্যা!

পাঁচ বছর বয়সী এক কোরআন শিক্ষার্থী আলিশার মা রেশমা বেগম বলেন, ‘এতো কম বয়সে তাকে (তরুণী) কোরআন পড়াতে দেখা অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয়। তাকে আমার সন্তানের শিক্ষক হিসেবে পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আমি ও যেসব মা-বাবাকে আমি চিনি, সবাই তার ধর্মীয় পরিচয়কে কখনও গুরুত্ব দেয় না।’

পূজাকে মহৎ এই কাজে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন এলাকার স্থানীয় মানুষরাও। শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়তে থাকায় পূজার ছোট্ট বাড়িতে জায়গার অভাবে দেখা দিয়েছে। যে কারণে এলাকার সবাই মিলে স্থানীয় একটি মন্দির চত্বরে পূজাকে স্থান করে দিয়েছেন শিক্ষাদানের জন্য। সেই মন্দির চত্বরেই প্রতিদিন সন্ধ্যেবেলা খুদে শিক্ষার্থীদের কোরআন শিক্ষাদানের কাজ করে চলেছেন হিন্দুধর্মাবলম্বি পূজা কুশওয়াহা! সত্যিই এক অনন্য নজির এটি। তাছাড়া পূজার এই কাজে স্থানীয় হিন্দু ধর্মের অনুসারীদেরও কোনো বাধা বিপত্তি নেই!

This post was last modified on সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৬ 11:35 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

দেশজুড়ে বাংলালিংকের ‘সেফটি অ্যান্ড ওয়েলনেস উইক ২০২৫’ উদ্বোধন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী অপারেটর বাংলালিংক গতকাল (শনিবার) ঢাকা, চট্টগ্রাম,…

% দিন আগে

দীপিকা ছেলের জন্য সুস্থ হয়ে উঠতে চান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতীয় অভিনেত্রী দীপিকা কক্কর যে কোনো মূল্যেই হোক না কেনো…

% দিন আগে

নাখোশ ইউরোপ: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে খুশি রাশিয়া

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুমোদিত নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলকে…

% দিন আগে

কানাডায় বরফের নিচে আয়োজন হলো পার্টি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কানাডার কুইবেকে কিছু তরুণ বরফে জমে যাওয়া হ্রদের নিচে ডুব…

% দিন আগে

বরফে আচ্ছাদিত রাস্তা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…

% দিন আগে

শীতে ঠোঁট ফাটা হতে রক্ষা পেতে করণীয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া এবং ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে মুখের…

% দিন আগে