Categories: অ্যাপস

[অ্যাপ রিভিউ] Endomondo: ক্যালোরি পরিমাপন অ্যাপ্লিকেশন

Endomondo – নামটা যাদের কাছে পরিচিত তাদের জীবনের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ এই ছোট্ট অ্যাপটি। আর যাদের কাছে পরিচিত না তাদের কাছে শুধুমাত্র খুব “খটমটে” একটা শব্দ। প্রথমবার নামটা শুনলে যেকারও কাছেই বিদঘুটে বলে মনে হলেও রিভিউটি পড়ার এই ফ্রি অ্যাপটি আপনার সার্বক্ষণিক সঙ্গীতে পরিণত পারে।


ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে কয়েকটি প্লাটফর্মের ডাউনলোড লিঙ্ক নিচে দিয়ে দেওয়া হলো।
অ্যান্ড্রোয়েড ফোনের জন্যে ডাউনলোড লিঙ্ক (Google Play): Click here

অ্যাপলের ডিভাইসগুলোর জন্য ডাউনলোড লিঙ্ক (iTunes): Click here

Windows 8 – ভার্সন (Microsoft Store): Click here

উইন্ডোজ ফোনের জন্যে ডাউনলোড লিঙ্ক: Click here

নোকিয়ার পুরোনো সিম্বিয়ান সিরিজের ডিভাইসগুলোর জন্যে ডাউনলোড লিঙ্ক (Ovi Store): Click here

Related Post

Endomondo শব্দ টি  নাম এর সাথে কাজ না মানালেও এককথায় বলা যেতে পারে এটি “ক্যালোরী বার্নার”। যার ফলে আপনি থাকবেন স্বাস্থ্যবান এবং পরিশ্রমী। কিভাবে? আপনার একজন ব্যক্তিগত ট্রেইনারের ভুমিকাটি পালন করবে এই অ্যাপটি। Sports’কে অন্যতম কার্যকর Exercise বলা হয়। এই ছোট্ট অ্যাপটি আপনি প্রতিদিন যে পরিমাণ Exercise করছেন সেটার লগ রেখে দেবে এবং আপনার প্রয়োজনে সেটাকে সংরক্ষণ করবে তাদের ওয়েবে। শুধুমাত্র কতোটুকু পথ হেটেছেন বা দৌড়েছেন সেটার লগ রেখেই সে তার কাজ শেষ করবে না। আপনার সেই সময় কতোটা ক্যালরী বার্ন হয়েছে সেটাও হিসেব করে রাখবে Endomondo। আপনি তাদের ওয়েবসাইটে যেকোন সময় লগ-ইন করলে দেখবেন আপনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল Exercise (Walking, Cycling, Running, Swimming ইত্যাদি)’র লগ এবং তাদের মধ্যকার Comparison থেকে সবকিছু। পাশাপাশি প্রত্যেক দিনে, সপ্তাহে, মাসে আপনি কতোটা Exercise করেছেন, আপনার কতোটুকুন ক্যালোরী বার্ন হয়েছে তার সব তথ্য Endomondo তাদের সার্ভারে নিয়ে বিশ্লেষন করে সংরক্ষণ করবে আপনার জন্যে।

প্রত্যেকটা অ্যাপেরই কিছু ভালো দিক এবং কিছু খারাপ দিক থাকে। Endomondo’র ক্ষেত্রে খারাপ দিকের সংখ্যা খুবই কম। প্রায় নিয়মিত ব্যবহারকারী হলেও এর খারাপ দিক খুঁজতে বেশ বেগ পেতে হয় ব্যবহারকারীদের। প্রথমেই জেনেনিন অ্যাপটির ভালো এবং মন্দ দিক গুলো।

ভালো দিক:

  • অন্যান্য যেসব Sports Tracker অ্যাপগুলো আছে তাদের চেয়ে বেশি Stable
  • GPS Tracker-এর ক্ষেত্রে একটা সমস্যা খুব হয়। ম্যাপে টানা মার্কটা খুব আঁকাবাকা হয়ে আসে। Endomondo‘তে এই সমস্যাটাতে খুব কম পড়বেন।
  • প্রচুর পরিমাণে হালকা একটা সফটওয়্যার।
  • Calculation যেকোন Tracker সফটওয়্যারের চেয়ে কম।
  • Android এবং Apple ডিভাইসসমূহে অনেক বেশি ফিচার পাবেন।
  • ইন্টারনেট ব্যবহার অনেক কম। শুধুমাত্র জিপিএস কানেক্ট হবার সময় এবং আপলোড করার সময় ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন পড়ে। ম্যাপ না দেখালে একবার GPS পেয়ে যাওয়ার পর থেকে আপলোডের আগ পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যবহার করে না।

 

খারাপ দিক:

  • মাঝেমধ্যে জিপিএস পেতে বেশ সময় নেয়। তবে এটি আপনার ভৌগলিক অবস্থান, আবহাওয়া এবং ডিভাইসের ক্ষমতার উপর নির্ভর করবে।
  • কিছু low-end হ্যান্ডসেটে কিছু কিছু ফিচার পাবেন না। তবে সেগুলো আপনার Exercise-এ তেমন কোন প্রভাব ফেলবে না।

প্রত্যেকটা Workout-এর সাথে থাকবে একটি করে ম্যাপ। ম্যাপে মার্ক করা থাকবে আপনি Exercise করার সময় কোন কোন জায়গায় গিয়েছিলেন সেটা। নিচের ছবিতে সেরকম একটা ম্যাপ দেওয়া হলো। লন্ডনের নানান রাস্তায় ৫ঘন্টায় ২৯.৩৯ কিলোমিটার হেটে Endomondo‘র মাধ্যমে এমন “জিপিএস ড্রয়িং” তৈরী করেছেন এর ব্যবহারকারী James Bishop। এটা করার সময় James Bishop-এর সম্পূর্ণ Workout’টা পাবেন এখানে

ছবিঃ Endomondo ব্যবহার করে এর ব্যবহারকারী James Bishop-এর করা GPS Drawing

শুরুতেই বলেছিলাম, যারা এটাকে ব্যবহার করে তাদের কাছে এটি জীবনের প্রতিদিনের একটি অংশে পরিণত হয়। এখন যোগ করছি, শুধুমাত্র Exercise করা বা তার লগ রাখাই না; Endomondo বেশ মজার অ্যাপও বটে! ফেসবুকের সাথে Integrate করে রাখলে এটি আপনার প্রতিটি আপলোডকৃত Workout’কে শেয়ার করে দেবে ফেসবুক বন্ধুদের সাথে। বন্ধুদের সাথে সর্বোচ্চ রেকর্ড ভাঙ্গার প্রতিযোগীতায় নেমে পড়ুন! তাদের রেকর্ড ভাঙ্গার সেই চেষ্টার সাথে সাথে আপনি আরও ফিট হবেন। কারণ সেটা করতে চাইলে আপনার বন্ধুর চেয়ে বেশি Exercise করতে হবে আপনাকে। এভাবে করেই দেখবেন Exercise-এর একটা অভ্যাস তৈরী হয়ে গেছে। এতে করে যে শুধু শরীরটা হালকা হবে তাই নয়, পকেটটাও কিছুটা ভারী হবে। রিকশা ভাড়াটা অনায়াসেই বাঁচাতে পারবেন। ১০-১৫ মিনিট দূরত্বের পথ রিকশায় যাবার চেয়ে হেঁটে যাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত।

Endomondo কিভাবে কাজ করবে সেটা বুঝতে হলে আপনাকে প্রথমে জানতে হবে GPS Tracking সম্পর্কে। GPS শব্দটার সাথেতো আমরা সবাই’ই কম-বেশী পরিচিত। GPS এর পূর্ণরূপ হলো Global Positioning System। সহজভাষায় বলতে গেলে, আপনি পৃথিবীর কোন দেশের কোন শহরের কোন অংশে অবস্থান করছেন সেটা মূহুর্তের মাঝেই বের করে ফেলার নাম GPS; আর এই প্রক্রিয়াটিকে বলে GPS Tracking। Endomondo এই প্রযুক্তিটিকেই ব্যবহার করে।

ছবিঃ Endomondo-র ওয়েবসাইটে একটি Workout

আপনার স্মার্টফোনের মধ্যে যে GPS সিস্টেমটা আছে Endomondo চালানোর জন্যে সেটাই যথেষ্ট। তাও চলুন একবার জেনে নেই Endomondo কোন কোন মোবাইল সিস্টেম সমর্থন করে। অ্যান্ড্রয়েড, ব্লাকবেরী, HTC, আইফোন, hp, LG, মটোরোলা, নোকিয়া, স্যামসাং, সনি এবং উইন্ডোজ ফোনে চলবে Endomondo। পাশাপাশি Garmin এবং Polar ডিভাইসগুলোর জন্যেও আছে Endomondo‘র অ্যাপ। তবে মূল শর্তটা আগেই দিয়ে দিয়েছি। ডিভাইসে অবশ্যই GPS-সমর্থন থাকতে হবে। বর্তমান সময়ের বাজারে থাকা প্রায় সব স্মার্টফোনেই জিপিএস সমর্থন আছে।

Endomondo কি করে, কিভাবে করে সেটা নিয়েতো অনেককিছুই বললাম। এবার মূল অ্যাপটাতেই ফিরে আসি। মানে কিভাবে এটাকে ব্যবহার করবেন সেই অংশে আসি। Endomondo খুবই সাধাসিধে একটা অ্যাপ। Endomondo ব্যবহার করতে হলে প্রথমেই আপনার মোবাইল ফোনের জিপিএস সুবিধাটি চালু করবেন। (বেশিরভাগ ডিভাইসে এটা নিজে থেকেই চালু করে দেওয়া থাকে)। না থাকলে মোবাইলের Settings-এ গিয়ে খুঁজলেই পেয়ে যাবেন। GPS চালু করার পর Endomondo চালু করলে সেটা কয়েক সেকেন্ডের মাঝেই জিপিএস স্যাটেলাইটগুলোর সাথে সংযোগ স্থাপন করে ফেলবে। জিপিএসের সাথে সংযুক্ত হবার আগ পর্যন্ত অ্যাপের স্ক্রিনে লেখা থাকবে Locating আর একবার কানেক্ট হয়ে গেলে লেখা পাবেন GPS OK। কোন ধরণের Exercise করছেন সেটা সিলেক্ট করে Start প্রেস করলেই কাজ শুরু করে দেবে Endomondo। এরপর আর আপনার তেমন কোন কাজ করার নেই। মোবাইল ডিভাইসটিকে পকেটে রেখে আপনি আপনার Exercise শুরু করে দিতে পারেন। Exercise শেষ হয়ে গেলে Stop করে দিলে Endomondo সাথে সাথে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত হয়ে আপনার Workout’টাকে তাদের ওয়েবে আপলোড করে দেবে। মোবাইলে বসে History চেক করে বা ইন্টারনেটে তাদের ওয়েবসাইটে লগ-ইন করলে পেয়ে যাবেন সব তথ্য।

ছবিঃ অ্যান্ড্রোয়েড ফোনে Endomondo

Endomondo‘র দুইটি সংস্করণ আছে। প্রথমটি বিনামূল্যে দেওয়া হয়, আর দ্বিতীয়টি প্রিমিয়াম ভার্সন। প্রিমিয়াম ভার্সনটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে সেটি কিনে নিতে হবে। তবে উপরে যতো বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হয়েছে তার সবগুলো আপনি ফ্রি ভার্সনে পাবেন। রিভিউটিতে বিনামূল্যে যেসকল সার্ভিস ব্যবহার করতে পারবেন শুধুমাত্র সেগুলোর কথাই বলা হয়েছে। প্রিমিয়াম ভার্সন ব্যবহার করলে আপনি উপরের সার্ভিসগুলোর পাশাপাশি পাবেন আরও নানান সুবিধা। যেমন: Exercise-এর সময় আবহাওয়া বার্তা, Heart Rate,  Step counter’সহ নানান সুবিধা। ফ্রি এবং প্রিমিয়ার ভার্সনের মধ্যকার তুলনা পাবেন এই লিঙ্কে

অ্যাপটি ডাউনলোড করতে প্রথমে আপনার মোবাইল ফোন দিয়ে http://www.endomondo.com/m/select ঠিকানায় যেতে হবে। সেখানে গিয়ে আপনার ডিভাইসটিকে সিলেক্ট করলেই ডাউনলোড করার অপশন পেয়ে যাবেন। ওয়েবে আপলোডের সুবিধা পেতে আপনাকে ফ্রি রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। Endomondo’র ওয়েবসাইটের Sign-up অংশে অথবা অ্যাপের মূল ইন্টারফেস দিয়ে প্রথমবার কোন Workout আপলোড করার সময়েই সেটা করে নিতে পারবেন।

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ Endomondo Blog

This post was last modified on মে ২০, ২০১৩ 2:04 অপরাহ্ন

তাজুল ইসলাম

Recent Posts

হাঁটা কিংবা দৌড়ানোর জুতো কেমন হওয়া উচিত?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হাঁটা কিংবা দৌড়ানোর জুতো কেমন হওয়া উচিত? সেটি হয়তো অনেকের…

% দিন আগে

ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল শেয়ার আরও সহজ হচ্ছে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রাম। ফটো ও…

% দিন আগে

সংগীতশিল্পী টেইলর সুইফট বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমেরিকান পপশিল্পী গায়িকা টেইলর সুইফটের খ্যাতি রয়েছে সর্বত্র। বহু আগে…

% দিন আগে

২০২৫ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাপদ্ধতি যা হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা হবে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি…

% দিন আগে

চালক বাস না থামানোয় দরজা ধরে এক কিমি ঝুললেন তরুণ!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাসের ভিতর থাকা মহিলা কন্ডাক্টরের সঙ্গে কথা বলছেন ঝুলে থাকা…

% দিন আগে

সুইজারল্যান্ডের মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৭ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে