অর্ধেক মস্তিষ্কের এক সন্তানকে বাঁচাতে মা এর লড়াই

দি ঢাকা টাইমস্‌ ডেস্ক ॥ পৃথিবীতে মা হচ্ছেন সবচেয়ে বড় সহায়। সব কিছু হারিয়ে গেলে, চলে গেলেও মা কখনোই তার সন্তানকে ত্যাগ করেন না। মা সব সময় তার সন্তানের পাশে থাকেন। সন্তানের বিপদে আপদে লড়াই করেন। সেরকমই একটি উদাহারণ মা ইভা অহেনসর্জ। ৬৪ বছর বয়স্ক এই মা লড়াই করছেন তার অর্ধেক মস্তিষ্কের সন্তানের জন্য।


ছেলে ফিলিপ অহেনসর্জ। তার বয়স ৩২ বছর। শৈশবাস্থায় ফিলিপ কথা বলতে পারতেন না। ভয়ংকর শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তার অর্ধেক মস্তিষ্ক অকেজো হয়ে গিয়েছিল। চিকিৎসকরা বলেছিলেন তার মস্তিষ্কের ডান অংশ সর্ম্পূণভাবে অক্ষম এবং তা বয়স বাড়ার সাথে সাথে গুরুতর সমস্যা নিয়ে আসতে পারে। মস্তিষ্কের এই ধরণের সমস্যা নিয়ে বেঁচে থাকা দুর্লভ ঘটনা। এটা শোনার পরও ফিলিপের মা ইভা অহেনসর্জ ভয় পেলেন না। অদম্য মনোবল নিয়ে সন্তানের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নিলেন। ফিলিপ এর বয়স ছিল তখন ৯ বছর। চিকিৎসকরা জানতেন অস্ত্রোপচার সফল না হলে ফিলিপ এর জন্য মৃত্যু‌ অপেক্ষা করছে। ১৯৮৯ সালে একজন সার্জনকে পান যিনি বলেন, ডান পাশের মস্তিষ্ক সরানো গেলে ফিলিপ কথা বলতে পারবে। নেতিবাচক সম্ভাবনা কে আমলে না নিয়ে মা ইভা ছেলের জন্য ঝুঁকি নিলেন। সার্জন ফিলিপের ডানপাশের অনিরাময়যোগ্য অংশ সরিয়ে ফেলতে সফল হোন।

যে ফিলিপ অস্ত্রোপচার এর আগ পর্যন্ত একটি শব্দ উচ্চারণ করতে পারত না সফলভাবে অস্ত্রোপচার এবং আরোগ্য লাভের পর পূর্ণ বাক্য বলতে শুরু করে ধীরে ধীরে। সন্দেহাতীতভাবে এই অস্ত্রোপচার ছিল বিশাল একটা অর্জন ফিলিপ এবং ফিলিপ এর মা এর জন্য। চিকিৎসাবিজ্ঞানেও এই অর্জনটি একটি মাইলফলক বলে বিবেচিত। কিন্তু ইভা এখন নতুন একটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। এইবারের সমস্যাটি আরো বড়। ফিলিপ এক বিরল রোগে ভুগছে যা স্টার্জ ওয়েভার সিনড্রোম নামে পরিচিত। পোর্ট ওয়াইন স্টেইন ছড়ানোর জন্য ফিলিপ এর দৃষ্টিশক্তিও চিরতরে চলে যেতে পারে। যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করানো হয় ফিলিপ অন্ধ হয়ে যাবে। এ মুহূর্তে রোগের বিস্তার রোধে প্রয়োজন বিশেষ লেজার চিকিৎসা। ইভা ইতোমধ্যে ১,৫০,০০০ পাউন্ড ছেলের চিকিৎসার জন্য খরচ করেছেন। কিন্তু পরবর্তী চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে তিনি সমর্থ নন। তিনি লেজার চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা প্রমাণে এনএইসএস এর কাছে চিকিৎসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, তথ্য-প্রমাণাদি, ছবি পাঠিয়েছেন। এনএইসএস তাকে সন্তানের চিকিৎসার কথা ভুলে যেতে বলেছে। ইভা তারপরও নিরাশ হন নি। বিকল্প পন্থায় তিনি অর্থ সংস্থান করার চেষ্টা করছেন। ছেলেকে বাঁচিয়ে তোলার এই অদম্য প্রয়াস তাকে পিছু টানে নি।

ইভা এবং ফিলিপ এর পাশে দাঁড়ানোর জন্য হৃদয়বান মানুষের খুব প্রয়োজন।

Related Post

তথ্যসূত্র: দি টেক জার্নাল

This post was last modified on জুলাই ১৫, ২০১৪ 4:28 অপরাহ্ন

এহ্‌তেশাম

Recent Posts

৬ মাসে ইসরায়েলি বর্বরতায় গাজায় নিহত ১৩ হাজার শিশু

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজা উপত্যকায় গত ৬ মাসে নিহত শিশুদের সংখ্যা আঁতকে উঠার…

% দিন আগে

আপনার চরিত্র কেমন তা আপনার আঙুলের আকৃতিই বলে দেবে!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার ব্যক্তিত্ব কীরকম তা বলে দিতে পারে আপনার আঙুলের আকৃতি!…

% দিন আগে

সিলেটের মালিনিছড়া চা বাগানের দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১…

% দিন আগে

খালি পেটে পাকা পেঁপে খাওয়া কী আদৌ শরীরের জন্য ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পেঁপেতে উপস্থিত ‘পেপসিন’ ও ‘প্যাপাইন’ নামক উৎসেচকগুলো পরিপাকে বিশেষ সহায়ক।…

% দিন আগে

আইফোনের নতুন গেম ইমুলেটর ডেলটা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ডেলটা নামে আইফোনের একটি নতুন ইমুলেটর অ্যাপ তৈরি হয়েছে।…

% দিন আগে

চমক দেখাতে আসছে ‘পুষ্পা-২’

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দক্ষিণী সিনেমা ‘পুষ্পা’র তুমুল জনপ্রিয়তার পর মুক্তি পেতে চলেছে ‘পুষ্পা-২’।…

% দিন আগে