রোহিঙ্গা: এই পৃথিবীতে যেনো কোনো জায়গাই নেই তাঁদের!

এম. এইচ. সোহেল ॥ সৃষ্টিকর্তা তৈরি করেছেন এই পৃথিবীকে। সেখানে মানুষদের বসবাস করার জন্য। কিন্তু এই পৃথিবীতে কোথাও যেনো স্থান নেই রোহিঙ্গাদের। তাঁদের কী অপরাধ? তারা মুসলমান সেজন্য?

চার শত বছর আগে যে রাজ্যে তাঁদের বংশধারীদের বসবাস ছিল। সেই রাজ্য পর্যায়ক্রমে দখল করে নিয়ে এখন তাদেরকে ঘর ছাড়া ভিটা ছাড়া করা হচ্ছে। বিষয়টি ভাবলে সত্যিই গাঁ শিউরে ওঠে। যে মাটিতে তাঁদের বাপ-দাদার জন্ম। যে মাটিতে তাঁদের নাড়ি পোতা। সেই মাটি ত্যাগ করতে হচ্ছে তাঁদেরকে! এক চরমতম অমানবিকতার শিকার হচ্ছেন রোহিঙ্গা মুসলিমরা। নি:শ্ব এইসব মানুষদের এখন যেনো মাথা গোজার ঠাই নেই!

Related Post

নিজের ঘর-বাড়ি সহায় সম্পত্তি সব কিছু হারিয়ে পরবাসে এক মানবেতর জীবন যাপন করছে রোহিঙ্গা মুসলিমরা। বাংলাদেশের মতো একটি ছোট রাষ্ট্রের পক্ষে কয়েক লাখ মানুষকে জায়গা দেওয়া এবং খাওয়ানো পরানো এমনকি তাদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা প্রায় কঠিন একটি কাজ। তবুও মানবতা আছে বাংলাদেশের মানুষের, বাংলাদেশের সরকারের। তাই সাহসী ভূমিকা নিয়ে এই সব নির্যাতিত মুসলমানদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। যে যেভাবে পারছেন সাহায্য করছেন রোহিঙ্গাদের। কেও বিস্কুটের প্যাকেট বিলি করছেন, কেও চাল-ডাল বিলি করছেন, কেওবা নগদ অর্থ দিয়ে সাহায্য করছেন। এক কথায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। যাকে বলে এক মানবিক মহা দৃষ্টান্ত।

বাংলাদেশ এমনিতেই একটি গরীব রাষ্ট্র। এখনও বাংলাদেশ বন্যাকবলিত। দেশের বহু মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে রয়েছেন বন্যার কারণে। কিন্তু তারপরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে সমগ্র বিশ্ববাসীর কাছেই বাংলাদেশ এখন মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

কেনো আজ এমন এক পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলমানরা? এই প্রশ্ন সমগ্র বিশ্ববাসীর মনেই। কেনো শত শত বছর ধরে তারা যেখানে জন্ম নিয়ে বসবাস করছেন সেই ভিটে-মাটি ছাড়া হলেন? মিয়ানমারের গণতন্ত্রের নেত্রী হিসেবে খ্যাত থাকা অং সান সু কি কেনো আজ ক্ষমতায় থাকার পরও এমন পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটলো? অনেক প্রশ্ন উঠছে। উল্টো অং সান সু কি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষে সাফাই গাইছেন!

আজ বিশ্ববাসীর দায়িত্ব মিয়ানমারে যে অমানবিক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও তাদের দোষররা রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর যে অত্যাচার-নির্যাতন চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে। মিয়ানমার যাতে তাদের রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেজন্য আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে। একমাত্র আন্তর্জাতিক চাপের মাধ্যমে মিয়ানমারের সরকারকে বাধ্য করাতে হবে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে। তা না হলে এতো বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে চরম মানবেতরভাবে জীবন যাপন করতে হবে। যা কারও কাছেই কাম্য হতে পারে না।

This post was last modified on সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭ 3:42 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

চমক দেখাতে আসছে ‘পুষ্পা-২’

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দক্ষিণী সিনেমা ‘পুষ্পা’র তুমুল জনপ্রিয়তার পর মুক্তি পেতে চলেছে ‘পুষ্পা-২’।…

% দিন আগে

পাহাড়ি রাস্তায় লাফিয়ে চলা মেয়েটির ছবিতে কী কী পরিবর্তন আছে তা বলতে পারবেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছোট বেলায় কিশোর পত্রিকার পাতায় আমরা অনেকেই এমন খেলা খেলেছি।…

% দিন আগে

সিলেটের সাদা পাথর: এক অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১…

% দিন আগে

গরমে করলার সঙ্গে কয়েকটি খাবার খেলে উপকার পাবেন না: কোন সেই খাবার?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি করলা খেলে সুস্থ থাকে শরীর। তবে সঙ্গে বা…

% দিন আগে

হুমকির মুখে সফটওয়্যার এবং স্টার্টআপ খাতের উদ্যোগ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই বছরের জুন মাসে শেষ হচ্ছে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সার্ভিস…

% দিন আগে

এবার মিউজিক ভিডিওতে তোরসা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শাহ আবদুল করিম এবং হাসন রাজার ভাটির দেশ থেকে ইট-পাথরের…

% দিন আগে