দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক॥ কচ্ছপ এক ধরনের সরীসৃপ যারা পানি এবং ডাঙা দুই জায়গাতেই বাস করতে পারে। এদের শরীরের উপরিভাগ শক্ত খোলসে আবৃত থাকে যা তাদের শরীরকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে রক্ষা করে। এ খোলস চামড়ার তৈরি নয়, আবার এটি পরিবর্তনও করা যায়না। তাহলে কচ্ছপের শক্ত খোলসের রহস্যটা কি?
কচ্ছপ পৃথিবীর আদি উভচর প্রাণীগুলোর মধ্যে অন্যতম। ঠিক কত বছর আগে পৃথিবীতে এর আবির্ভাব তার কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ নেই। কচ্ছপের খোলস অন্যান্য সকল প্রাণীর প্রতিরক্ষা আস্তরণ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ও শক্ত। এর ফলে কচ্ছপ জলে ও স্থলে দুই জায়গায় নিজেকে নিরাপদে রাখতে পারে। কোন কারণে যদি এই খোলস তুলে ফেলা হয় তাহলে কচ্ছপ মারা যায়। কচ্ছপের খোলসের গঠনকে ‘অদ্ভুত বিবর্তন‘ বলে মনে করা হয়। কারণ, এই প্রাণীর নিকটবর্তী অনুরূপ গড়নের কোনো প্রাণী খুঁজে পাওয়া যায় না।
সম্প্রতি, Yale University এর এক গবেষক ড. টাইলার লাইসন কচ্ছপের খোলস নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি গবেষণায় দেখতে পান, বর্তমান কচ্ছপের সাথে ২১০ মিলিয়ন বছর আগের Eunotosaurus নামের এক ধরণের ডাইনসরের ফসিলের সাথে মিল আছে। Eunotosaurus ছিল সরীসৃপ। তাই এরা ডাঙা এবং পানি উভয় স্থানে বিচরন করতে পারত। Eunotosaurus এর কিছু বৈশিষ্ট্য কচ্ছপের মতো, আবার কিছু বৈশিষ্ট্য ছিল মেরুদণ্ডী সরীসৃপ, স্তন্যপায়ী ও পাখির মতো। পাঁজর ও মেরুদণ্ডের হাড়ের মিশ্রণে কচ্ছপের খোলস তৈরি। কচ্ছপের খোলসে প্রায় ৫০টি হাড়ের জোড়া থাকে। কচ্ছপের খোলসের গঠন জটিল ধরনের। ফসিল থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, প্রথমে পাঁজরের হাড়ের বিস্তার ঘটে, এরপর বিস্তার ঘটে শিরদাঁড়ার স্নায়ুর এবং সবশেষে তৈরি হয় বাইরের আকৃতি।
ড. টাইলার লাইসন বলেন, “২১০ মিলিয়ন বছর আগে পারমিয়ান যুগ থেকে এর রূপান্তর শুরু হয়। আজকের আকারে আসতে কচ্ছপের লাখ লাখ বছরের ধারাবাহিক পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়েছে। অনেক প্রাণী ফুসফুসে বায়ু প্রবাহ সচল রাখার জন্য পাঁজর প্রসারিত করে খোলস তৈরি করে। আপনি যদি পাঁজরের হাড় মিশিয়ে এক শক্ত প্রতিরক্ষা খোলস তৈরি করতে চান, তাহলে আপনাকে শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য নতুন উপায় খুঁজতে হবে। কচ্ছপ পাঁজরের সাহায্যে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে পারে না। কচ্ছপ এই কাজটি করে পেটের ভেতরের পেশীবহুল ফিতার সাহায্যে। এই ফিতা কচ্ছপের ফুসফুস এবং অন্যান্য অঙ্গগুলোর মধ্যে মোড়ানো থাকে। এর মাধ্যমেই শ্বাস-প্রশ্বাস চালায় কচ্ছপ।”
‘কারেন্ট বায়োলজি‘ সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা থেকে জানা যায়, Eunotosaurus এর ছিল কচ্ছপেরই মতো দেখতে ইংরেজি ‘T’ আকৃতির ৯ জোড়া বিস্তৃত পাঁজরের হাড়। কিন্তু এর কশেরুকায় লম্বা শিরদাড়া ছিল না, যা আধুনিক কচ্ছপের আছে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, পাঁজরের মধ্যবর্তী পেশী ছিল না Eunotosaurus এর। উল্লেখ্য, পাঁজরের মধ্যবর্তী পেশীই কচ্ছপকে পাঁজরের খাঁচা নড়াতে ও নিঃশ্বাস নিতে সাহায্য করে। এই যে দেখুন কচ্ছপের খোলসের বিবর্তনের ভিডিও।
কচ্ছপ পৃথিবীতে এখনও বর্তমান প্রাচীন প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে কচ্ছপের প্রায় ৩০০ প্রজাতি পৃথিবীতে রয়েছে, এদের মধ্যে কিছু প্রজাতি মারাত্মকভাবে বিলুপ্তির পথে রয়েছে। বাইরে শক্ত খোলসের কারণেই কচ্ছপ অনেক প্রতিকূলতা এড়িয়ে টিকে আছে।
তথ্যসূত্রঃ কারেন্ট বায়োলজি
This post was last modified on ডিসেম্বর ১৩, ২০১৪ 12:33 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রোগা হওয়ার জন্য অনেকেই দিনে ২ থেকে ৩ বার এই…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আঞ্চলিক রাউন্ডে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করায় ওয়ার্ল্ড স্কলার্স কাপের গ্লোবাল রাউন্ডের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের তথ্যপ্রযুক্তিখাতের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার এমন একটি ল্যাপটপ বাজারে এলো যা একইসঙ্গে একাধিক কাজ…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকাই সিনেমার বর্তমান সময়ের নায়িকা মিষ্টি জান্নাত অভিনীত বেশ কয়েকটি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে আবারও মিশরের কায়রোতে পৌঁছেছেন ইসরায়েলের…