The Dhaka Times Desk দারিদ্রতার মাঝেও কিভাবে নিজের জায়গা করে নিতে হয়, তা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ৩য় স্থান দখল করে দেখিয়ে দিয়েছে কাঠুরিয়া বাবার ছেলে সজিব চন্দ্র রায়। দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ১১ নং মরিচা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম কাঠগড় রাজাপুকুরে এক কাঠুরিয়া পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন সজিব চন্দ্র রায়।
তার বাবা আগে রিকশাভ্যান চালাতেন। তবে দারিদ্রতার মধ্যে সন্তানদের লেখাপড়া এবং মুখে দু মুঠো অন্ন তুলে দিতে অসমর্থ হওয়ায় রিকশাভ্যান বিক্রি করে দেন এবং কাঠুরিয়ার কাজ শুরু করেন। দিন শেষে যা আয় হয় তা দিয়ে কোন মতে তাদের দিন চলে যায়। সংসারের অভাব ঘুচাতে তার মা চারুবালা রায় কৃষি শ্রমিক হিসেবে অন্যের জমিতে কাজ করেন।
তাদের স্বপ্ন ছিল নিজেরা যে দারিদ্রতার কষাঘাতে ভুগছে তার সন্তান যেন এমন সমস্যায় না পরে। পিতা-মাতার এই স্বপ্নকে বিফল করেন নি সজিব। সে চলতি বছরে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ৩য় স্থান অধিকার করেছে। তার এই অসামান্য সাফল্যের কথা জিজ্ঞাসা করলে সজিব চন্দ্র রায় উত্তরে বলেন, যখন সে ৪র্থ শ্রেনীতে পরে, তখন একদিন খুব অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার বাবা মা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় কিন্তু অর্থাভাবে তাকে ঠিকমত চিকিৎসা করা সম্ভব হয় না। তখন থেকেই তার মনে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন লালন করে আসছে।
সজিব ২০১০ সালে কাঠগড় আদিবাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় গোটা বীরগঞ্জ উপজেলার মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। তারপর পর্যায়ক্রম্রে জেএসসি, এসএসসি এবং এইচএসসিতে গোল্ডেন এ+ পেয়ে সবার কাছে সুনামের পাত্র হয়ে ওঠে। এরপর চলতি বছরে মেডিকেল পরিক্ষায় ৩য় স্থান অধিকার করে পিতামাতার স্বপ্নকে সফল করার একটি সুযোগ অর্জন করেছেন।
তার এই সাফল্যের কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পরলে দলে দলে মানুষ তাকে দেখতে আসে। তবে এখন আবার কাঠুরিয়া পিতা এবং দিনমজুর মায়ের মনে নতুন ভয় কাজ করছে। তারা কি পারবে তাদের এই সীমিত আয় দিয়ে সন্তানকে ডাক্তার হিসেবে গড়ে তুলতে???
এদিকে সজিব একজন ভাল ডাক্তার হয়ে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়জিত করতে চাই। তাই সজিবের বাবা-মা শিক্ষকগণ এবং এলাকাবাসীর প্রত্যাশা দেশের বিত্তশালী ব্যক্তিরা যেন তাকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেন যেন তার পিতা-মাতা এবং এলাকাবাসির মুখ উজ্জল করে দেশের সেবা করতে পারে।