The Dhaka Times Desk বিশ্বের এই সবথেকে কম বয়সী শিক্ষকের নাম বাবর অালী। তবে সবাই বাবর মাস্টার নামেই তাকে চেনে। নিজের বাড়ির আঙ্গিনায় এক চিলতে উঠানই তার স্কুল। আজ রয়েছে এই কম বয়সী প্রধান শিক্ষকের গল্প!
এই ক্ষুদে শিক্ষক সকালে নিজে পড়েন এবং বিকেলে অন্যদের পড়ান। প্রায় ১৬ বছর ধরে ঠিক এভাবেই নিজের শেখা অন্যদের শিখিয়ে আসছেন বাবর। এই ১৬ বছরে প্রায় ৫ হাজার শিশুকে শিক্ষিত করে তুলেছে বাবর। কোলকাতা হতে ২০০ কিলোমিটার দূরে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার একটি স্কুলে নিজে পড়াশুনা করেন বাবর।
সম্প্রতি এই বাবর আলীকে বিবিসি বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হিসেবে ঘোষণা করেছে। ২০০৯ সালে বিবিসির একটি প্রতিবেদনে মাত্র ৯ বছর বয়সে নিজস্ব বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকারী বাবর আলীকে সারাবিশ্বের সামনে তুলে ধরা হয়েছিলো। ২০০৯ সালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সিএনএন-আইবিএন তাকে ‘রিয়েল হিরোজ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করেছিলো। এনডিটিভি তাকে ‘ইন্ডিয়ান অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কারও প্রদান করে।
বাবর আলী জানিয়েছেন, বাড়ি হতে স্কুল যাওয়ার পথে প্রতিদিন সমবয়সী ছেলেমেয়ে গুলোকে দেখে তার খুব কষ্ট হতো। ওরা রাস্তা-ঘাটে পড়ে থাকা জিনিস কুড়াতো তখন, কেও কেও আবার বিড়িও বানাতো। ছেলেটা ভাবতো- কেনো ওরা পড়ার সুযোগ পাচ্ছে না?
১০ বছর বয়সে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া বাবর আলি তখন থেকেই ভাবতে থাকে ওদের জন্য কিছু একটা করতে হবে তাকে। সেই থেকেই শুরু।
বাবর জানিয়েছেন, ২০০২ সাল হতে তাদের উঠানটাই আনন্দ শিক্ষা নিকেতন বানিয়ে ফেলেন বাবর। নিজের বোনসহ মাত্র ৮ জন ছেলেমেয়ে নিয়ে স্কুল শুরু করেছিরো বাবর। আজ শুধুমাত্র সেখানকার নয়, গোটা বিশ্বের কমবয়সী প্রধান শিক্ষকে পরিণত হয়েছেন বাবর । বিকেল বেলা প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে নিজের বাড়ির উঠানে পেয়ারা গাছের তলায় ওই ছেলেমেয়েগুলোকে লেখাপড়া শিখিয়ে থাকে বাবর আলী।
বাবরের বাবা-মা খুব বেশি শিক্ষিত না। তারপরও ছেলের এই উদ্যোগে তারাও পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে মা-বাবার গর্বের যেনো শেষ নেই। কারণ একটি শিক্ষিত সমাজ গড়তে লড়ছে তারই সন্তান বাবর আলী। নিয়ম করে গণিত, বিজ্ঞান, ভূগোল পড়াচ্ছে ছোট ছোট শিশুদের। শেখাচ্ছে ঝরঝরে বাংলায় লিখতে এবং পড়তে।
জানা গেছে, মাঝে-মধ্যেই ক্লাস হতে চক চুরি হতো। শিক্ষকরা ধরেও ফেলেন সেটি, এটি ওই বাবরেরই কাজ ছিলো। তবে তারা যখন জানতে পারেন যে, কেনো বাবর চক চুরি করে? এরপর হতে স্কুলের শিক্ষকরা প্রতি সপ্তাহে এক প্যাকেট করে চক বাবরের হাতে তুলে দিতেন।
পরিবার এবং স্কুলের চেষ্টায় ওইসব শিশুদের স্কুলের পোশাক, বই ও অন্যান্য পড়ার সামগ্রী দেয় বাবর আলী। এই ধরনের শিশুর পরিবারের লোকজনদের বোঝাতে সমর্থ হয়েছে সে। তারাও বাবরের স্কুলে পাঠাতে রাজি হন বাচ্চাদের। তাই ২০১৫ সালে উঠান হতে একটি বাড়িতে স্থানান্তরিত হয় বাবরের স্কুলটি। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা দফতরের পক্ষ হতে একটি বেসরকারি স্কুল হিসেবে স্বীকৃতিও পায় বাবরের এই স্কুলটি।
বাবর জানিয়েছেন, গত ১৬ বছরে প্রায় ৫ হাজার শিশুকে শিক্ষিত করেছেন তিনি। বেশ কয়েকজন আবার সেই স্কুলেই শিক্ষক হিসেবে যোগদানও করেছেন। ২৫ বছর বয়সী বাবর আলী নিজে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও লাভ করেছেন। বর্তমানে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করছেন বাবর আলী। তবে এতো কম বয়সে শিক্ষকতা শুরু করার কারণে সোস্যাল মিডিয়াসহ বিশ্বের নাম করা সংবাদ মাধ্যমে তিনি এখন একজন পরিচিত মুখ। বাবর আলী এগিয়ে যেতে চান আরও বহু দূর। মানুষকে শিক্ষার আলোতে আলোকিত করতে চান জীবনের শেষ দিন অবধি।
This post was last modified on অক্টোবর ২৩, ২০১৮ 4:28 pm
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিয়মিতভাবে শরীরচর্চার করার সময় আপনি কী খাবেন, কতোটা খাবার খাবেন…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ১০০ টাকায় ‘জেন-জি’ সিম বিক্রি বন্ধ করতে যাচ্ছে রাষ্ট্রায়াত্ত মোবাইল…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একের পর এক সিনেমায় অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়াচ্ছেন বর্তমান…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য দুই সপ্তাহেরও কম সময় বাকি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাড়ি চুরি করে ৪৫০ কিমি দূরে ফেলে রেখে ক্ষমা চাইলো…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৯ কার্তিক ১৪৩১…