M. H. Sohail প্রযুক্তির কারণে মানুষের হাতের লেখা দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। মানুষ ক্রমেই যেনো প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়ছেন। মোবাইল ফোন ও মেইলে চিঠি আদান প্রদানের কারণে মানুষের লেখার অভ্যাসও থাকছে না।
যতো দিন গড়াচ্ছে মানুষ যেনো প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। কোনো কিছু জানার জন্য মানুষ এখন কেবল কম্পিউটার কিংবা হাতে থাকা মোবাইলের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। যেহেতু কোনো কিছু সার্চ করলেই খুব সহজেই পেয়ে যাওয়া সম্ভব তাই মানুষ আর নিজের ব্রেনকে ব্যবহার করছেন না। এতে করে ব্রেনের কার্যকারীতাও দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে।
আগে খবরা খবর আদান-প্রদানের জন্য চিঠি লেখার নেওয়াজ ছিলো। পোস্ট অফিসে এক সময় হাজার হাজার চিঠির স্তুপ দেখা যেতো। অথচ এখন তা আর দেখা যায় না। কারণ কেও এখন আর চিঠি লেখেন না। চিঠি লিখে সাত দিন দশ দিন উত্তরের অপেক্ষায় বসে থাকার সময় এখন ফুরিয়ে গেছে। তাই মানুষকে আর সে পথে মোটেও দেখা যাচ্ছে না। কারণ মাত্র ১১টি নাম্বার টিপেই কল করলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলা যাচ্ছে নিমিষেই। তাই চিঠির রেওয়াজ একেবারেই উঠে গেছে। বর্তমানে পোস্ট অফিসের কাজও সংক্ষিপ্ত হয়ে গেছে। কেবলমাত্র সরকারি কিছু রেজিস্টার্ড চিঠি ছাড়া এখন আর কেও চিঠিই দেয় না। যে কারণে মানুষের লেখার অভ্যাসও চলে গেছে। হাতের লেখা তাহলে কেনো খারাপ হবে না? কেও যেনো আর কাগজ-কলমের কাছেই যেতে চান না!
যে কোনো প্রয়োজনে আবেদন পত্রই হোক আর যে কোনো অফিসিয়াল চিঠি হোক এক সময় হাতে লেখার রেওয়াজ ছিলো। সেটি এখন আর নেই। কারণ কম্পিউটার কিংবা মোবাইলে টিপেই খুব সহজে মেইলের মাধ্যমে সেটি আদান-প্রদানের কাজ সারা যাচ্ছে। তাহেল কেনো কলম হাতে লেখালেখি!
ঠিক এভাবেই মানুষের হাতের লেখা দিন দিন যেমন খারাপ হচ্ছে, ঠিক তেমনি মানুষ তার ব্রেনের কাজও সার্চ ইঞ্জিনে দিয়ে ব্রেনকে করে তুলছেন অলস। এতে করে মানুষের বুদ্ধি হ্রাসও পেতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ বুদ্ধি খাটানোর কাজটি করছে প্রযুক্তির নানা যন্ত্র বা সার্ভিস। এভাবে আমাদের মানব সভ্যতা তাদের অতীত সব ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলছে। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে এমন পরিস্থিতর উদ্ভব ঘটেছে। সময় থাকতে এই বিষয়গুলোর দিকে নজর দেওয়া দরকার। সব কিছু প্রযুক্তির উপর ছেড়ে না দিয়ে নিজের মাথা খাটানোর বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে। নইলো ভবিষ্যতে ক্লাসের পড়া-লেখার পর মানুষের আর লেখার কোনো কিছুই থাকবে না। অলস এক জাতিতে পরিণত হবে বিশ্বের মানব সভ্যতা। অতএব সময় থাকতে বিষয়গুলো নিয়ে একটু হলেও ভাবা উচিত।