the knowledge

History of one of the oldest civilizations in the world is the Mesopotamian civilization

The Dhaka Times Desk পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন সভ্যতা হলো এই মেসোপটেমীয় সভ্যতা। শুধু প্রাচীন তা নয়, গুরুত্বপূর্ণও বটে। এই সুপ্রাচীন মেসোপটেমিয়া বর্তমান সময়ের যে অঞ্চলে ইরাক ও সিরিয়া রয়েছে এই অঞ্চলে অবস্থিত।

বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস মেসোপটেমীয় সভ্যতা 1বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস মেসোপটেমীয় সভ্যতা 1

পৃথিবীর ইতিহাসে এই সভ্যতা শুধুমাত্র সভ্যতা নয়, এটি একটি জমাট বাধা ইতিহাস, জীবনের কথা, মানব ইতিহাসের উত্থান পতনের গাথা বলা যায়। আমরা সবাই জানি ‘মেসোপটেমিয়া (Mesopotamia)’ কথাটির অর্থ হলো, দু’নদীর মধ্যবর্তী একটি অঞ্চল। মেসো অর্থ দুই ও পটেমিয়া অর্থ নদী। ইরাকের দুই নদীর মধ্যবর্তী স্থানই হলো এই মেসোপটেমীয় সভ্যতা।

মেসোপটেমীয় সভ্যতার আদি ইতিহাস

আমরা আনেকেই মনে করি, মেসোপটেমীয় সভ্যতা দ্বারা শুধু একটি সভ্যতাকেই বোঝায়। আসলে মেসোপটেমীয় সভ্যতা দ্বারা সুমেরীয়, ব্যাবলনীয়, অ্যাশেরীয় এবং ক্যালেডীয় সভ্যতাকেও বোঝায়। তৎকালিন মেসোপটেমীয় সভ্যতা গড়ে উঠে ইরাকের ইউফ্রেটিস এবং টাইগ্রিস কিংবা ফোরাত এবং দজলা নদীর অববাহিকায়। যা আজও বহাল তবিয়তে রয়েছে। যদিও এর গতিপথ পরিবর্তিত হয়েছে। ইরাকের অপর নাম ছিলো সেচনির্ভর প্রাচীন মেসোপটেমিয়া সভ্যতা। এখনও ‘মেসোপটেমিয়া সভ্যতা’ শব্দ ইরাককেই নির্দেশ করে।

Related Posts

মেসোপটেমীয় সভ্যতার ম্যাপ

এর অনেক ইতিহাস রয়েছে। জানা যায়, প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ হতে খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ অব্দের (খ্রিস্টপূর্ব অর্থ হযরত ঈশা আ: এর জন্মেরও পূর্বে) মেসোপটেমিয়ায় অতি উন্নত এক সভ্যতার উম্মেষ ঘটে, যা আজও সত্যিই এক বিস্ময়! সভ্যতার আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত এই সভ্যতা চার চারটি অন্যান্য সভ্যতারও জন্ম দিয়েছিলো। এই বিস্ময়কর মেসোপটেমীয় সভ্যতা মিশরীয় সভ্যতার হতে একেবারেই ভিন্ন ছিল।

দ্বিতীয় শতকের শুরুর দিকে পার্সিয়ানরা (ইরানিরা) এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় এবং সুদীর্ঘ সপ্তম শতাব্দী পর্যন্ত এই অঞ্চল তাদের শাসনেই থাকে। এই সময় এই সভ্যতার উপর ব্যাপক পার্সিয়ান প্রভাবও পড়ে। এরপর মুসলিম শাসনামল শুরু হয় ও এই সভ্যতা ইসলামের রাজধানী রূপের আত্মপ্রকাশ করে পুরো বিশ্বময় আধিপত্য বিস্তার করে। পরে মুসলিম খিলাফত শাসন যখন এই অঞ্চলে স্থায়ী হয় ঠিক তখন এই স্থানের নাম পরবর্তীকালে ইরাক নামে পরিচিতি লাভ করে। সম্পদে পরিপূর্ণ থাকার কারণে বহিঃশত্রুদের থেকে খুব একটা সুরক্ষিত ছিলনা এই অঞ্চল। বারবার এর উপর আক্রমণ চলতে থাকে ও লুটতরাজ কায়েম হতে থাকে!

মেসোপটেমীয় সভ্যতার অবদান

এই বিশাল মেসোপটেমীয় সভ্যতা পৃথিবীতে বিশেষ কিছু অবদানও রাখে। এই সভ্যতা থেকে পৃথিবী অনেক কিছুই পেয়েছে বলে মনে করা হয়।

ধর্ম ও দর্শন

ধর্ম পালনের দিক দিয়ে এই সভ্যতার মানুষরা বেশ অগ্রগামী ছিলো। প্রতিটি জিগুরাট এবং মন্দিরেই বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ বিশেষ করে অভিজাত শ্রেণী, দরিদ্র শ্রেণী, ব্যবসায়ী, কামার, মজুর কিংবা কৃষক ইত্যাদি যায় বলা যাক না কেনো, প্রতিটি শ্রেণীর লোকদের বসার ব্যবস্থা ছিল। এসব লোকজন নিজ নিজ স্থানে গিয়ে নগরদেবতাদের প্রণাম, ভক্তি ও বিভিন্ন জিনিস উৎসর্গ করতো। তবে পরে ইসলামের অনুসারীরা এসে ইসলামী উপাসনাগৃহ তৈরি করে এবং ইসলামিক নিয়ম কানুন চালু করেন। এতে করে এই সভ্যতার সার্বজনীন ধর্ম ব্যবস্থার বিশেষ পরিচয় পাওয়া যায়। এই একই সভ্যতা পেগান, খ্রিষ্টান, ইহুদী ও সর্বশেষ ইসলাম এর আগমনের সাক্ষী হয়ে থাকে।

সেই সময়কার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

সেই সময়কার সময়কাল বিচারে মেসোপটেমিয়ার অধিবাসীরা উন্নতমানের কৃষিবিদ ছিলো। গণনার জন্য পাহাড়ের গায়ে দাগ কেটে কেটে সংখ্যা মনে রাখার চেষ্টা করতো তারা। এভাবেই গণনার সুবিধাজনক পদ্ধতি বিকশিত হয়েছে। তারা গণিত শাস্ত্রের উন্নতিসাধন করতে সক্ষম হন। মেসোপটেমীয় সভ্যতার সংখ্যাগুলি ষষ্ঠিক কিংবা ষাট (৬০) কেন্দ্রীক ছিলো (গ্রিক জাতির সঙ্গে কিছুটা মিলেও যায়)।

তাদের ভাষা ও সাহিত্য

তাদের ভাষা ছিলো মূলত সেমিটিক ভাষা। তারা তাদের প্রাত্যহিক ও দৈনন্দিন ভাবের আদান প্রদানসহ বিজ্ঞানচর্চা, প্রশাসনিক কাজে, যোগাযোগের ও ধর্মকর্ম পরিচালনা করতো। এমনকি গ্রীক লেখক হোমার তার ইলিয়াড ও ওডেসি লেখার হাজার বছর পূর্বেই সুমেরীয়রা তাদের নিজস্ব ভাষাতে সাহিত্য রচনা করেছিল, যার নাম ছিল গিলগামেশ। এই সাহিত্য হতে যানা যায় যে, এখানকার লোকজন আসলে মাত্রাতিরিক্ত কল্পনাপ্রবণ ছিলো। যে জাতীর কল্পনা ক্ষমতা ভালো তারা বিজ্ঞানে এগিয়ে যাবে ও এই সভ্যতা তা সত্যিই করেও দেখিয়েছে।

অন্যান্য অবদানের মধ্যে রয়েছে দফতরীয় দলিল যা এখন দেখতে পাওয়া যায় আমাদের জীবন ব্যবস্থায়, যেটি সুমেরীয়দের মধ্যেই প্রথম দেখা যায়।

পৃথিবীতে অনেক সভ্যতা এসেছিলো আবার চলেও গেছে। তবে কিছু সভ্যতা ইতিহাসের পাতাই স্থান করে নিয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম হলো এই মেসোপটেমীয় সভ্যতা। এই সভ্যতা যেমন অনেক উপাখ্যানের জন্ম দিয়েছে ঠিক তেমনি আভিজাত্যের জন্য সংঘাতের সাক্ষীও হয়েছে। আমরা সবাই বাগদাদের খলিফা হারুন-আর-রশিদের কথা জানি। এই শাসকই মেসোপটেমীয় সভ্যতার উপর তার রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলো, অন্তত ইতিহাস সেই স্বাক্ষী দেয়।

This post was last modified on আগস্ট ২৫, ২০১৯ 12:32 pm

Staff reporter

Recent Posts

কাঁধে এই ধরণের ব্যথাও কী হতে পারে ফুসফুসের ক্যান্সা‌রের লক্ষণ?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের প্রায় সময় দেখা যায় কাঁধে ব্যথা হচ্ছে। কাঁধে ব্যথা…

% days ago

ঈদ-উল-ফিতর ২০২৫ উপলক্ষে এনটিভি’র ৭ দিন ব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানসূচী: ঈদ উল ফিতরের ২য় দিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঈদ-উল-ফিতর ২০২৫ উপলক্ষে এনটিভি'র ৭ দিন ব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানসূচী। আজ…

% days ago

আজ পবিত্র ঈদ- উল- ফিতর: ঈদ মোবারক

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ (সোমবার) পবিত্র ঈদ-উল- ফিতর। মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসবের একটি…

% days ago

অবর্ণনীয় প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ১৭ চৈত্র ১৪৩১…

% days ago

সজনে ডাঁটা খেলে কী কী রোগের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গরমের এই সময় সজনে ডাঁটা পাওয়া যায় বাজারে। কচি-সবুজ ডাঁটাগুলো…

% days ago

ঈদ-উল-ফিতর ২০২৫ উপলক্ষে এনটিভি’র ৭ দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানসূচী: ঈদের দিন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঈদ-উল-ফিতর ২০২৫ উপলক্ষে এনটিভি প্রতি বছরের মতো এবারও ৭ দিনব্যাপী…

% days ago