The Dhaka Times Desk ইচ্ছে করলেই কয়েকজন মিলে নিখাদ প্রাকৃতিক পরিবেশে তাবু গেঁড়ে আড্ডা মুখর রাত্রিযাপন, নানারকম পাখি এবং অজানা পোকার শব্দ মনকে এক অদ্ভুত প্রশান্তি দেয়। আর সেটিই হলো ক্যাম্পিং। আজ রয়েছে এর ৩য় খণ্ড।
A moment to spend a night away from the mechanization of the city in a heavenly environment will give you a resource to stay alive in the days to come.
বাংলাদেশে শীতকাল হলো ক্যাম্পিংয়ের জন্য সবচেয়ে আদর্শ সময়। “কোথায় ক্যাম্পিং করবো?” এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। তবে বাস্তবতা হলো, আপনার পছন্দ এমন কোনো স্থানে আপনি ক্যাম্পিং করতেই পারেন। সাধারণত চর, নদীর তীর, সাগর পাড়, ঘন ঝাউ বন বা বিলের আশেপাশের এলাকাগুলো ক্যাম্পিংয়ের জন্য খুব বেশি জনপ্রিয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশে ক্যাম্পিংয়ের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় কয়েকটি স্থান সম্পর্কে। আজকে রয়েছে ৩য় খণ্ডটি।
সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় প্রায় ২৪৩ হেক্টর স্থান জুড়ে অবস্থিত সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের এক সময় নাম ছিল রঘুনন্দন হিল রিজার্ভ ফরেস্ট। এখানে গভীর বনে ট্র্যাকিং ও গাছের উপরে বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চারাস এক্টিভিটি করার সুযোগও রয়েছে।
চারপাশে জানা অজানা পাখ-পাখালি এবং ঝিঁঝিঁ পোকার কূজনে মুখর গহীন বন খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান সিলেট জেলার সদর উপজেলায় অবস্থিত এই ক্রান্তীয় চিরহরিৎ বন যাকে বল হয় খাদিম নগর জাতীয় উদ্যান। এখানে গহীন বনের নিস্তব্ধতা, ঝর্ণাধারা ও চা-বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে। সিলেট বন বিভাগের নিয়ন্ত্রনাধীন এই উদ্যানে সর্বোচ্চ ৩০ জন একত্রে আপনারা ক্যাম্পিং করতে পারবেন।
বান্দরবান জেলার আলীকদম থানার মিরিঞ্জা রেঞ্জে অবস্থিত মারায়ন তং পাহাড়ের চূড়া বাংলাদেশে ক্যাম্পিংয়ের জন্য সবচেয়ে প্রসিদ্ধ একটি স্থান। যদিও বর্তমানে এখানে রাতে ক্যাম্পিং বন্ধ রাখা হয়েছে। তবুও দিগন্তজোড়া পাহাড় ও দূরে সাপের মতো বয়ে চলা মাতামুহুরী নদী, ফসলের ক্ষেত যেনো এক কল্পনার রাজ্যে নিয়ে যাবে আপনাকে।
সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখার জন্য বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতে বেশ আকর্ষণীয়। খোলামেলা পরিবেশ, ঝাউ গাছের সারি, জেগে উঠা সবুজ ঘাসের চর, পিকনিক স্পট ইত্যাদি সব মিলিয়ে বাঁশবাড়িয়া তাঁবুতে রাত্রী যাপনকারীদের জন্য অপূর্ব এক সৌন্দর্য নিয়ে অপেক্ষা করছে। বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতের অবস্থান চট্রগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায়।
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় অবস্থিত রেমা-কালেঙ্গা জাতীয় উদ্যান সুন্দরবনের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বনভূমি এটি। অপরূপ প্রকৃতি, বণ্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য ও জীব বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ উদ্যানের লেকের তীর ক্যাম্পিং করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি স্থান।
রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত কাপ্তাই লেক এক সবুজে মোড়া পাহাড়, সুনীল পানি এবং চোখ জুড়ানো নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য এটি বিখ্যাত। দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ এই কৃত্রিম লেকটিকে প্রকৃতি যেনো তার সমস্ত রূপের সুধা উজাড় করে দিয়ে সাজিয়েছে। আপনার সময় সুযোগ মতোই বছরের যেকোন সময় কাপ্তাই লেকের পাড়ে ক্যাম্পিং করতে আপনিও চলে যেতে পারেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় চন্দ্রনাথ রির্জাভ ফরেস্টের চিরসবুজ বনাঞ্চল নিয়ে গড়ে তোলা সীতাকুণ্ড ইকোপার্কের শোভাবর্ধনকারী অনন্য এক প্রাকৃতিক নিদর্শনের নামই হলো এই সহস্রধারা ঝর্ণা। চমৎকার এই ঝর্ণার পাদদেশে ক্যাম্পিং করার যাবতীয় জিনিসপত্র ভাড়াতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের ঝর্ণাগুলোতে শীতকালে পানি তুলনামূলক কম থাকলেও সহস্রধারা ঝর্ণায় ক্যাম্পিংয়ের জন্য শীতকালই খুবই উপযুক্ত সময়।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলাতে অবস্থিত বারৈয়াঢালা জাতীয় উদ্যানে রয়েছে খৈয়াছড়া, নাপিত্তাছড়ার মতো বেশকিছু নয়নাভিরাম ঝর্ণা। এই উদ্যানের বাওয়া ছড়া এবং সহস্র ধারা লেক ক্যাম্পিংয়ের জন্য প্রসিদ্ধ। বারৈয়াঢালা জাতীয় উদ্যানে ক্যাম্পিংয়ের প্রয়োজনীয় সমস্ত উপকরণই পেয়ে যাবেন।
সিলেটে সারি নদীর তীরে অবস্থিত নাজিমগড় ট্যান্ট ক্যাম্পে ট্র্যাকিং, কায়াকিং ও নৌকা ভ্রমণের সুযোগও রয়েছে এখানে। এখানে অর্থের বিনিময়ে সকল ধরণের আধুনিক সুযোগ সুবিধাও পাওয়া যায়।
ঢাকার সাভারে অবস্থিত নিওক্যাম্পারসকে সৌহার্ধ্যপূর্ণ ক্যাম্প সাইট হিসাবে দেখা হয়। এখানে বিভিন্ন শারীরিক এক্টিভিটি ছাড়াও কার্পেন্টারি, মৃৎশিল্প তৈরি, ট্রেজার শিকার, পাখির ঘড়ি, ক্যাম্পফায়ার ও বার-বি-কিউ ব্যবস্থা রয়েছে।
পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলায় ৪০ একর উঁচু-নিচু পাহাড়ি জায়গায় ১৫ একর নিসর্গময় মায়াবিনী লেক-কে কেন্দ্র করে মায়াবিনী লেক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। খাগড়াছড়ি জেলা শহর হতে মাত্র ৩০ মিনিট দূরত্বে হওয়ায় ক্যাম্পিংয়ের নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। পাহাড়ের নৈস্বর্গিক সৌন্দর্য্য, বিশাল আকাশ ও লেকের স্বচ্ছ শান্ত পানি খুব সহজেই মনকে নির্মল আনন্দে মাতিয়ে তুলতে পারে। তো আর দেরি কেনো?
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাসা খালের পাড়ে মারমা পাড়া শীলবান্ধার দেবতাখুম যেনো পাহাড়ের ভাজে থাকা আরেকটি স্বর্গরাজ্য। মুগ্ধ চোখে কোনো এক পূর্নিমা রাত কাটানোর জন্য বেড়িয়ে আসতে পারেন দেবতাখুমের উদ্দেশ্যে। চোখ, প্রকৃতি কোনো কিছুই আপনাকে অবশ্যই নিরাশ করবেনা। সেই সঙ্গে সত্যিকারের কায়াকিংয়ের সত্যিকারের অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন খুমের এই স্বর্গরাজ্যটিতে। [শেষ পর্ব]
Source: https://vromonguide.com
This post was last modified on জানুয়ারি ২, ২০২০ 4:42 pm
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘ওম্যান অব দ্য ইয়ার’ এবার ভারতীয় সিনেমায় বিশেষ অবদানের জন্য…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঐক্য সম্মেলনে ইরানের জাতীয় সংগীতে দাঁড়ালেন না আফগান মন্ত্রী: কিন্তু…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চলন্ত ট্রেনের পাদানিতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক তরুণী। পাদানিতে দাঁড়িয়ে ট্রেনের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৬ আশ্বিন ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গুণীজনরা বলে থাকেন, ছোট ছোট লক্ষ্য আপনাকে স্থির করতে। সেই…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এবার ইসরায়েলে নতুন করে যুদ্ধাস্ত্র রপ্তানি স্থগিত করলো জার্মানি। তথ্য…