Categories: Lifestyle

সোশ্যাল মিডিয়া: প্রভাব, ভুল তথ্য এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর এর নেতিবাচক প্রভাব

মোহাম্মদ শাহ জালাল ॥ সোশ্যাল মিডিয়া (SM) বলতে সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইট (SNSs) কে বোঝায়, যা অনলাইন সেবা হিসেবে সংজ্ঞায়িত হয়েছে, যেখানে ব্যক্তিরা একটি প্রকাশ্য বা আধা-প্রকাশ্য প্রোফাইল তৈরি করতে পারে এবং যোগাযোগের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার সুযোগ পায়, যেমনটি বয়েড এবং এলিসন ২০০৭ সালে উল্লেখ করেছেন।

সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে, বৈশ্বিক জনসংখ্যার ৩.৮১ বিলিয়ন মানুষ অন্তত একটি SNS অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করে, যেখানে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা প্রতিদিন গড়ে ১৪৪ মিনিট SNS-এ ব্যয় করে (গ্লোবাল ডিজিটাল পপুলেশন, ২০২০)। সোশ্যাল মিডিয়া জীবনের প্রতিটি দিককে প্রভাবিত করে এবং এটি নতুন অভিজ্ঞতা ও জীবনের বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি অন্বেষণের সুযোগ দিতে পারে, এর সহজলভ্যতার কারণে। তবে, এই সহজলভ্যতার জন্য প্রায়শই ভুল তথ্য ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে তৈরি হয়, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যদিও ভুল তথ্য জীবনের প্রতিটি দিককে প্রভাবিত করতে পারে, তবে স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ভুল তথ্য মানুষের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ হতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ সহজ হয়ে গেছে, কিন্তু অপ্রয়োজনীয় প্রতিযোগিতা বা অবাস্তব প্রত্যাশার কারণে এটি মানুষের মধ্যে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এই যোগাযোগগুলো ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু মস্তিষ্কে সেগুলো এনকোড হওয়া এবং নিউরোনাল কার্যকলাপের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী জিন এক্সপ্রেশনে পরিবর্তন ঘটাতে পারে। হাইপোথ্যালামাস একটি নিউরোএন্ডোক্রাইন রিলে কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে, যা স্ট্রেস ফিজিওলজি বা চাপের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত।

এন্ডোক্রিন স্বাস্থ্য

Related Posts

এন্ডোক্রিনোলজি হল চিকিৎসাবিজ্ঞানের সেই শাখা যা এন্ডোক্রিন গ্রন্থি এবং হরমোন নিয়ে কাজ করে।
এন্ডোক্রিন সিস্টেম হল গ্রন্থি এবং অঙ্গের একটি জটিল নেটওয়ার্ক, যা হরমোন ব্যবহার করে শরীরের বিপাকীয় ক্রিয়া, ঘুম, শক্তি স্তর, প্রজনন, বৃদ্ধি এবং বিকাশ, এবং আঘাত, চাপ ও মেজাজের প্রতিক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় করে।

সামাজিক মাধ্যমের বর্তমান প্রভাব সমাজে এক ধরনের বিপ্লব ঘটাচ্ছে, কিন্তু এই বিপ্লবের সঙ্গেই আসছে মনস্তাত্ত্বিক অস্থিরতা, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং হিংস্রতার নতুন রূপ। অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জীবনযাপন, সফলতা এবং বিনোদনের একটি কৃত্রিম রূপ ধারণ করছে, যা বাস্তব জীবনের চেয়ে অনেক বেশি চটকদার ও আকর্ষণীয় বলে মনে হয়। তবে এর পিছনে রয়েছে গভীর হতাশা, আত্মতৃপ্তির অভাব এবং এক অনবরত প্রতিযোগিতার মনোভাব, যা মানুষকে মানসিকভাবে আরও দুর্বল ও বিচ্ছিন্ন করে তুলছে।

১. তাত্ক্ষণিক সাফল্য ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা

সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা প্রায়ই সফল ব্যক্তিদের বিলাসবহুল জীবনের ছবি এবং ভিডিও দেখতে পাই। ধরুন একজন উদ্যোক্তা অনেক কঠোর পরিশ্রম ও ঝুঁকি নিয়ে নিজের ব্যবসা দাঁড় করিয়ে সফলতা অর্জন করেছে। তিনি একটি মহামূল্যবান গাড়ি কিনলেন এবং সেই গাড়ির সাথে তার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করলেন। এখানে আমরা তার সাফল্যের ঝলক দেখতে পাই, কিন্তু এই সাফল্য অর্জনের জন্য তিনি কত রাত নির্ঘুম কাটিয়েছেন, কতবার ব্যর্থ হয়েছেন এবং কত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গেছেন, তা কখনো দেখা যায় না।

মানুষ প্রায়ই এসব সাফল্যের বাইরের দৃশ্য দেখে অনুপ্রাণিত না হয়ে হিংস্র হয়ে ওঠে। তারা মনে করে, “আমি কেন পারছি না?” এই অব্যক্ত প্রতিযোগিতার মনোভাব থেকে হতাশা তৈরি হয়। অনেকেই ভাবেন, কম সময়ে প্রচুর টাকা উপার্জন করা সম্ভব, আর এটাই সাফল্যের সংজ্ঞা। এর ফলস্বরূপ, তরুণ প্রজন্ম দ্রুত সফল হতে চায়, যা তাদের মধ্যে মানসিক চাপ ও হতাশা বাড়িয়ে তোলে।

Example: একটি ইউটিউব চ্যানেল চালিয়ে অল্প সময়ে মিলিয়ন ফলোয়ার এবং প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে দেখে অনেকেই ভাবেন, “আমিও এটা করতে পারব,” কিন্তু তারা সেই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর এর পরিশ্রম ও চ্যালেঞ্জগুলোর দিকে নজর দেয় না। এর ফলে কেউ কেউ দ্রুত ফলাফল পেতে শর্টকাট খুঁজতে শুরু করে, যা পরে মানসিক হতাশা এবং ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

২. সামাজিক বিভেদ ও হিংস্রতা

সোশ্যাল মিডিয়া প্রায়ই মানুষকে একে অপরের সাথে তুলনা করার সুযোগ তৈরি করে। এটি সামাজিকভাবে বিভেদ এবং হিংস্রতার জন্ম দেয়। মানুষ অন্যের সাফল্য দেখে ঈর্ষান্বিত হয় এবং নিজেকে সেই তুলনায় ছোট মনে করে। আবার অনেকে সফলতার কৃত্রিম চিত্র সৃষ্টি করে অন্যকে নিচু দেখানোর চেষ্টা করে। এর ফলে সামাজিক সম্পর্কগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সমাজে এক ধরণের হিংসাত্মক প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়।

Example: ধরুন, একজন ব্যক্তি বছরে একবার বিলাসবহুল রেস্টুরেন্টে খাবার খায় এবং সেই খাবারের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে। তার পরিচিতজনেরা যখন দেখে, তখন তারা মনে করে, “সে তো কখনও ভালো ছাত্র ছিল না, অথচ আজ বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে!” এই ধরণের ঈর্ষা এবং ক্রোধ মানুষের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং সমাজে এক ধরনের নেতিবাচক আবেগ সৃষ্টি করে। পরে, যদি সেই ব্যক্তি কোনো খারাপ অবস্থায় পড়ে, তখন অন্যরা তাকে ছোট করার সুযোগ খোঁজে।

৩. ফেক কন্টেন্ট ও বিভ্রান্তি

আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর ফেক কন্টেন্ট পাওয়া যায়, যেখানে মানুষ নাটকীয় গল্প তৈরি করে সহজেই মানুষকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। এই ধরনের কন্টেন্টগুলোতে অতি-আকর্ষণীয় গল্প তৈরি করা হয়, যা সহজে ভাইরাল হয় এবং প্রচুর অর্থ আয় করে। কিন্তু এই গল্পগুলোতে বাস্তবতা নেই। এই ভুয়া কন্টেন্ট সমাজে একটি ভ্রান্ত ধারণা তৈরি করে, যেখানে মানুষ বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠে।

Example: টিকটকে প্রায়ই দেখা যায়, কেউ ভুয়া প্রাঙ্ক ভিডিও তৈরি করছে, যেখানে দেখানো হয় কিভাবে এক অদ্ভুত পরিস্থিতিতে সাফল্য অর্জন করা যায়। এই ভিডিওগুলো মানুষকে ভুল ধারণা দেয় যে, ছোট ছোট কৌশলের মাধ্যমে জীবনে বড় কিছু অর্জন করা সম্ভব। কিন্তু বাস্তবে এসব ভিডিও শুধুই মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য তৈরি, যা সমাজের বাস্তবতাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে।

৪. মানসিক স্বাস্থ্য ও আত্মবিশ্বাসের ক্ষতি

সোশ্যাল মিডিয়া অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে মানুষের মধ্যে একধরনের আত্মবিশ্বাসের সংকট তৈরি হচ্ছে। আমরা প্রায়ই অন্যের সাফল্য ও আনন্দের মুহূর্ত দেখে নিজেকে তুচ্ছ মনে করি। যাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রদর্শিত হয়, তাদের সুখী বা সফল মনে করা হয়। কিন্তু বাস্তবে তাদের জীবনের কষ্ট ও ব্যর্থতা আড়ালে থাকে। ফলে অন্যরা মনে করে, “আমার জীবন এতটা ভালো নয়।’

Example: একজন ব্যক্তি প্রতিদিন অন্যের সাফল্যের ছবি ও ভিডিও দেখে তার নিজের জীবনে অসন্তুষ্ট হতে পারে। এই কারণে সে নিজেকে ছোট মনে করে এবং একসময় আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। এর ফলে সে হতাশায় ভুগতে থাকে এবং তার ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে সমস্যা তৈরি হয়।

৫. যাচাই-বাছাইয়ের অভাব ও সামাজিক অবিশ্বাস

সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের তথ্যের সহজলভ্যতা দিয়েছে, কিন্তু সেই তথ্য কতটুকু সঠিক, তা যাচাই করার প্রবণতা কমে যাচ্ছে। ভুয়া খবর, অতিরঞ্জিত কাহিনী, বা ভুল তথ্য শেয়ার করার ফলে সমাজে অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে। মানুষ অনেক সময় ভুল ধারণা নিয়ে কাজ করছে এবং ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, যা সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।

Example: একজন জনপ্রিয় সেলেব্রিটি কোনো ভুয়া তথ্য শেয়ার করলে তার অনুসারীরা সেই তথ্য যাচাই না করেই বিশ্বাস করে এবং শেয়ার করে। এভাবে ভুল তথ্য সমাজে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।

সোশ্যাল মিডিয়া বর্তমান সমাজে একটি বিশাল শক্তি হিসেবে কাজ করছে। এটি যেমন তথ্য ও বিনোদনের মাধ্যমে আমাদের জীবনে সহজতা নিয়ে এসেছে, তেমনি এর নেতিবাচক প্রভাবও কম নয়। সোশ্যাল মিডিয়ার ভুল ব্যবহারে মানুষ মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে, সমাজে বিভেদ ও হিংস্রতা বাড়ছে, এবং মানুষের মধ্যে অবিশ্বাস ও ভুল ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে। এজন্য আমাদের উচিত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে সচেতন থাকা, যাচাই-বাছাই করে তথ্য গ্রহণ করা এবং নিজেদের জীবনের বাস্তবতার সাথে তুলনা করা।

# লেখক: কলামিস্ট

>>>>>>>>>>>>>>

How to prevent dengue

Dengue is a mosquito-borne viral fever. This fever is different from other viral or bacterial fevers. However, this fever is not contagious in any way. This viral fever can occur alone or in combination with other viruses (chikungunya, yellow fever, Burma forest, flu, respiratory syncytial) and bacteria (pneumococcus).

Dengue fever is divided into two categories depending on the severity of symptoms and fever.

1. Common dengue fever

2. Dengue fever with bleeding.

In the case of common dengue fever, the following symptoms are mainly seen-

1. Sudden high fever lasting 2 to 7 days.

2. Severe headache.

3. Pain behind the eyes.

4. Along with the fever, red rash appears all over the body.

5. Severe pain in whole body as well as back pain.

6. Nausea or vomiting.

7. A rash or red bumps on the skin.

In case of dengue fever with bleeding:

1. Bleeding from nose, mouth or vomiting with high fever within 2 to 48 hours.

2. Fluid accumulation in chest or abdomen along with fever.

If any of these symptoms appear, seek medical attention immediately.

On the other hand

Wait at home for the first 3 days of fever. On the other hand, sponge the whole body with water every now and then. This will reduce the level of fever. Drink enough water and rest. After that, if the fever does not decrease or if it continues to increase after some time, consult a doctor immediately.

Things to do to prevent Dengue:

1. Try to keep the surroundings of the house as clean as possible.

2. If there are flower tubs or broken plastic bottles, can shells, tires or polythene inside the house, clean them quickly and drain the accumulated water from the flower tubs.

3. Spray or fog at least 3 times a week to kill mosquitoes.

4. You can keep mosquito repellent cream with you while going out.

5. After evening, younger and older members of the household should use mosquito nets.

6. Clean up any accumulated rain water, as this is the time when Aedes mosquitoes lay their eggs.

7. On the other hand, you can use mats along with mosquito nets to avoid mosquito infestation.

8. Since Aedes mosquitoes bite during the day, it is important to avoid sleeping with mosquito nets while sleeping during the day. Source: https://dmpnews.org

This post was last modified on অক্টোবর ২৪, ২০২৪ 3:06 pm

Staff reporter

Recent Posts

দারাজ বাংলাদেশ: স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনস পার্টনার ব্যাকপেজ পিআর

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজ এর জনসংযোগ সংশ্লিষ্ট (পাবলিক…

% days ago

বেরি জাতীয় ফল শরীরের কোন কোন উপকারে লাগে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বেরি জাতীয় ফল নিয়ে আমাদের তেমন একটা ধারণা নেই। কিডনির…

% days ago

ভৌতিক গল্পে ওয়েব ফিল্ম ‘বিভাবরী’ আসছে দীপ্ত প্লেতে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইতিমধ্যেই দীপ্ত প্লে ওটিটি প্ল্যাটফরম জগতে বেশ এগিয়ে গেছে। বিশ্বের…

% days ago

ড্রোন হামলার সাইরেনে বাঙ্কারে পালিয়েছিলেন ব্লিঙ্কেন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় সামরিক অভিযান শুরুর পর মধ্যপ্রাচ্যে…

% days ago

উপকূলের আরও কাছে চলে এসেছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ গতকাল বুধবার (২৩ অক্টোবর) ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’য়…

% days ago

পিকনিকে ভয়ঙ্কর প্রাণী চিতাবাঘের হানা! তারপর যা ঘটলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ভারতের মধ্যপ্রদেশের শাহদোল জেলার গোহপারু এবং জৈতপুরের জঙ্গলে ঘটেছে…

% days ago