Dhaka Times Report. আবারও পদ্মা সেতু নিয়ে কথা-বার্তা শুরু হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক কথায় হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ করে দেয়। জাপানের উপ-প্রধানমন্ত্রী কাতসুইয়া ওকাদা বাংলাদেশ সফরে আসায় আবারও বিষয়টি আলোচনার টেবিলে চলে এসেছে।
জানা গেছে, পদ্মা সেতু নির্মাণে অর্থায়ন বিষয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা করবে জাপান। তবে এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে যে মতবিরোধ রয়েছে তা মেটাতে বাংলাদেশকে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। জাপান পদ্মা সেতুতে একা অর্থায়ন করতে পারে না। দু’দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে ৪ মে ঢাকা ত্যাগের আগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলনে জাপানের উপ-প্রধানমন্ত্রী কাতসুইয়া ওকাদা এসব কথা জানান। ঢাকায় মেট্রো রেল নির্মাণে অর্থায়ন সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে জাপানের উপ-প্রধানমন্ত্রী কাতসুইয়া ওকাদা জানান, প্রকল্পটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। বিষয়টি জাপানের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে। তবে সিদ্ধান্তের ব্যাপারে নতুন কোন তথ্য নেই।
বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপগুলো কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানিয়ে জাপানের উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে জাপানের করের টাকা বাংলাদেশের উন্নয়নে আরও ভালোভাবে ব্যবহার করা যাবে। তিনি জানান, বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট বড় সমস্যা। এই সংকট সম্পর্কে জাপানি বিনিয়োগকারীদের কথা আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছি। জাপানি বিনিয়োগে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাধা কিনা এমন এক প্রশ্নের উত্তরে কাতসুইয়া ওকাদা জানান, দক্ষিণ এশিয়ায় জাপান ও বাংলাদেশ গণতন্ত্রের ঐতিহ্যের বাহক। বাংলাদেশ জাপানের বিনিয়োগকারীদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় জায়গা। বাংলাদেশের মানবাধিকার সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে উপ-প্রধানমন্ত্রী জানান, এটি একটি সমস্যা। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশকেই নিজেদের মতো করে সমাধান খুঁজতে হবে। খবর পত্রিকা সূত্রের।
হোটেল সোনারগাঁওয়ে ৪ মে সকালে ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআই নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে জাপানের উপ-প্রধানমন্ত্রী কাতসুইয়া ওকাদা জানান, জাপানি বিনিয়োগকারীরা এখানে বিনিয়োগ বাড়াতে চায়। কিন্তু এক্ষেত্রে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট একটি সমস্যা। এই সংকট নিরসনে উভয় দেশকেই একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সব সেক্টর জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য বেশ আকর্ষণীয়। তিনি জানান, দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ বছরপূর্তি হয়েছে। ৪০ বছরে দু’দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক আরও উন্নত হবে। এক্ষেত্রে জাপান সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। এর আগে এফবিসিসিআই সভাপতি একে আজাদ বলেন, দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য মোটেই সন্তোষজনক নয়। বর্তমানে উভয় দেশের মধ্যে মাত্র ১.৭ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়। এর মধ্যে জাপান বাংলাদেশে রফতানি করে ১.৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য এবং বাংলাদেশ রফতানি করে মাত্র ৪৩৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। জাপানে বাংলাদেশী গার্মেন্টস পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকলেও অন্য পণ্যে এই সুবিধা নেই। তিনি বাংলাদেশের কৃষি ও চামড়াজাত পণ্য এবং ওষুধসহ অন্যান্য পণ্য রফতানিতে এই সুবিধা দেয়ার অনুরোধ জানান।
এছাড়া বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ আরও বাড়ানোর জন্য দেশটির ঢাকাস্থ দূতাবাস ও সে দেশের ব্যবসায়ীদের বলার অনুরোধ জানান। মতবিনিময় শেষে কাতসুইয়া ওকাদা আশুলিয়ায় একটি জাপানি গার্মেন্টস কারখানা পরিদর্শনে যান। এখানে প্রায় ৩ হাজার বাংলাদেশী শ্রমিক কর্মরত আছে।