Categories: general

Are plastic bottled products and drinks dangerous?

The Dhaka Times Desk খবরটি ছোট্ট কিন্তু বিপজ্জনক বটে। একটি দৈনিকে এমন একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে প্লাস্টিক বোতলজাত পণ্য ও পানীয় বিপজ্জনক।


খবরটি সকলের জন্যই চিন্তার বিষয় হয়ে গেছে। কারণ বর্তমানে যেসব পানীয় জাতীয় পণ্য বাজারজাত হচ্ছে তার প্রায় ৯৮ শতাংশই প্লাস্টিক বোতলে।

খবরে বলা হয়েছে, আকার ও ওজনে সুবিধাজনক হলেও প্লাস্টিক বোতল স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। ডাস্টবিন থেকে উচ্ছিষ্ট বোতল কুড়িয়ে নিয়ে পুনঃব্যবহারের কারণে তা আরও বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। অথচ বাংলাদেশে দিন দিন প্লাস্টিক বোতলের ব্যবহার পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে। শুধু পানি নয়, তেল, সস, জুস এমনকি ওষুধ পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে প্লাস্টিক বোতলে। এসব বোতল তৈরিকালে নিকেল, ইথাইলবেনজিন, ইথিলিন অক্সাইড, বেনজিন প্রভৃতি ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ উৎপাদিত হয়।

প্লাস্টিক বোতলে কি কি ক্ষতি হতে পারে

গবেষকরা জানিয়েছেন, প্লাস্টিক বোতলের (পিইটি) পানি, তেল, সস, ওষুধসহ অন্যান্য পণ্য পানাহারের কারণে মানবদেহে ১০ ধরনের রোগ বাসা বাঁধতে পারে। যেমন:

# আকস্মিক মুটিয়ে যাওয়া
# হরমোনজনিত নানা অস্বাভাবিকতা
# সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা কমে যাওয়া
# স্তন ক্যান্সার
# প্রোস্ট্রেট ক্যান্সার
# জরায়ু ক্যান্সার
# হাইপারঅ্যাকটিভ শিশু
# অটিজম
# হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া

গবেষণায় ক্ষতিকর উপাদানের প্রমাণ পাওয়ায় কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো ইতোমধ্যেই প্লাস্টিকের উৎপাদন কমিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে। আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস রাজ্যের কনকর্ড শহরে প্লাস্টিক বোতল-পানীয় বিক্রি নিষিদ্ধ হয়েছে। ওয়েস্টার্ন ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি তার ক্যাম্পাস, এভারগ্রিন স্টেট কলেজ ও সিয়াটল ইউনিভার্সিটিও একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।

Related Posts

চটকদার বিজ্ঞাপনের মোড়কে প্লাস্টিক বোতলে (পিইটি) মিনারেল ওয়াটার হিসেবে বিশ্বে যে পানি বাজারজাত হচ্ছে, তার মান নিয়ে বিশ্বজুড়েই প্রশ্ন উঠেছে। হালে শুধু বোতলজাত পানির মান নয়, বোতলটির মান, উপযোগিতা ও বিপর্যয় নিয়েই হুঁশিয়ারি উচ্চারিত হচ্ছে।

বাংলাদেশে প্লাস্টিক বোতলের ব্যবহার

বাংলাদেশে ৩০টি কোম্পানি প্রতি মাসে অন্তত ১০ লাখ পিইটি বোতল উৎপাদন করে বাজারে ছাড়ছে। এতদিন যেসব ওষুধ, সিরাপসহ জীবন রক্ষাকারী নানা তরল ওষুধ কাচের বোতলে ভরে বিক্রি হতো, সেসব ওষুধও এখন প্লাস্টিক বোতলে ভরে বাজারে ছাড়া হচ্ছে।

দেশি খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কোম্পানির মধ্যে যারা পুরান বোতল ব্যবহার করেন তারা সেগুলো চানখাঁরপুল, লালবাগ, নয়াবাজার, মাতুয়াইল, শনিরআখড়াসহ বিভিন্ন ডাস্টবিন ও ময়লার ডিপো থেকে সংগ্রহ করে থাকেন। নোংরা আর জীবাণু ভরা এসব বোতল কারখানায় নিয়ে হাতুড়ে পদ্ধতিতে সাবান-সোডা আর হালকা গরম পানিতে ধুয়েই পুনরায় পণ্য সামগ্রী ভরে বাজারে ছাড়ে। এতে নানারকম রোগ সংক্রমিত হয় খুব সহজেই।

অস্ট্রেলিয়ার ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্রিস উইনডার সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, প্লাস্টিক বোতলের পুনর্ব্যবহার ব্যাকটেরিয়া দূষণের জন্য মারাত্মকভাবে দায়ী। একাধিক গবেষণা সূত্রে জানা যায়, প্লাস্টিক বোতল তৈরি হয় মূলত দুই ধরনের প্লাস্টিক থেকে। এর একটি পলিকার্বন- যা বিসফেনল এ (বিপিএ) থেকে উৎপাদিত এবং অন্যটি পিইটি- যা পলিইথিলিন থেকে উৎপাদিত। পলিইথিলিনকে নিরাপদ বিবেচনা করা হয়। তবে বিপিএ ক্ষতিকর। বেশিরভাগ বোতলজাত পানীয়তে শনাক্ত হওয়া ‘বিসফেনল এ’ (বিপিএ) এমন একটি সিনথেটিক কেমিক্যাল যা মানব দেহের স্বতঃনির্গত হরমোন সিস্টেমে বাধা সৃষ্টি করে।

‘এনভায়রনমেন্ট ক্যালিফোর্নিয়া রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি সেন্টার’ এই বিপিএ-এর ওপর পরিচালিত ১৩০টি গবেষণার ফল পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত দিয়েছে, ব্রেস্ট ক্যান্সার, জরায়ুর ক্যান্সার, অকালে গর্ভপাতের ঝুঁকি, টেস্টাটেরন লেভেল কমে যাওয়ার সঙ্গে বিপিএ সম্পর্কিত। গবেষকরা আরও বলেছেন, বিপিএ-এর কারণে শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে ওঠায় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। বোতলজাত পানির ক্ষতিকর দিক নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে উদ্বেগ বাড়ছে। তাদের বিভিন্ন গবেষণায় বেরিয়ে আসছে, বোতলজাত পানি কোনোমতেই নিরাপদ ট্যাপের পানির চেয়ে স্বাস্থ্যকর নয়, বরং ক্ষতির পরিমাণ তাতে অনেক বেশি। কারণ যেসব উপাদান দিয়ে প্লাস্টিকের বোতল তৈরি হয়, তা ওই বোতলে বিপজ্জনক কিছু রাসায়নিক উপাদান ছড়িয়ে দেয়। এসব রাসায়নিক উপাদান বোতলজাত পণ্য পানাহারকারীর স্বাস্থ্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদি বিপর্যয় সৃষ্টি করে থাকে। গবেষণায় বেশ কিছু বোতলজাত পানিতে ব্যাকটেরিয়া দূষক যেমন পেয়েছেন, তেমনি কিছু ব্র্যান্ডের পানিতে শিল্পজাত দ্রাবক, প্লাস্টিক থেকে নির্গত রাসায়নিক উপাদানের মতো ক্ষতিকর সিনথেটিক জৈব রাসায়নিক পদার্থ শনাক্ত করেছেন। কিছু বোতলে তা আর্সেনিকের মতো অজৈব দূষকও খুঁজে পেয়েছেন।

প্লাস্টিক থেকে পানিতে ছড়িয়ে পড়া রাসায়নিক পদার্থকে বিজ্ঞানীরা মানবদেহের হরমোন বা প্রাণরস বিপর্যয়কারী উপাদান বলছেন। কারণ এসব রাসায়নিক পদার্থ মানবদেহে প্রবেশের পর হরমোনের স্বাভাবিক কাজে বাধা দেয়। পাশাপাশি মুটিয়ে যাওয়া, অকালে যৌবনের চিহ্ন দেহে ফুটে ওঠা, উর্বরতা বা সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা কমে যাওয়া, স্তন ক্যান্সার, প্রোস্ট্রেট ক্যান্সার, জরায়ু ক্যান্সার, হাইপারঅ্যাকটিভ শিশু, অটিজম, হৃদরোগও এসব রাসায়নিক পদার্থের কারণে হচ্ছে বলে গবেষকরা দাবি করছেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বিশিষ্ট পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জসিমউদ্দীন আহমেদ বলেন, তাপ লাগলে বোতলের পানিতে খুব দ্রুত রাসায়নিক বিক্রিয়া সংঘটিত হয়। এ বিক্রিয়া মিশে যায় বোতলজাত পানি, সস, জুস কিংবা ওষুধে। ফলে প্লাস্টিকের বোতলে ভরা পণ্য সামগ্রী দূষণ থেকে মুক্ত থাকে না কোনোভাবেই। তিনি বলেন, যদিও পিইটি বোতল দৈনন্দিন জীবনে জনপ্রিয়তা পেয়েছে তবুও খাদ্য, কোমল পানীয় ও জীবন রক্ষাকারী ওষুধ প্লাস্টিক বোতলে মোড়কজাতের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতা জরুরি। পিইটি বোতল পরিবেশের জন্য যেমন ভয়ঙ্কর ক্ষতির কারণ হিসেবে চিহ্নিত তেমনি মানবদেহের জন্য তা বয়ে আনছে আরও বেশি বিপজ্জনক পরিস্থিতি। তাই সময় থাকতে এখনই এ বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। কৃতজ্ঞতায়: দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন।

This post was last modified on জুন ২৯, ২০১৬ 5:43 pm

Staff reporter

Recent Posts

শীতকালীন ঝড়ে গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয়

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালীন ঝড় এবং অবিরাম বৃষ্টির কারণে ফিলিস্তিনের গাজায় এক ভয়াবহ…

% days ago

হঠাৎ ধরা পড়লো তাসমানিয়ার সৈকতে ওপারফিস!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়ার এক সৈকতে একজন কুকুরচালক হঠাৎ দেখতে পান একটি…

% days ago

গাছিদের রস সংগ্রহের দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ৩ পৌষ ১৪৩২…

% days ago

আপনি কেনো খাবেন ছোট মাছ?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছোট মাছ যেমন- মলা, কাচকি, পুঁটি, টেংরা, তিনকাটা, খরে ইত্যাদি…

% days ago

এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসি-এর ৩০তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসি এর ৩০ তম বার্ষিক সাধারণ সভা…

% days ago

গণিতের “শূন্য’ কেনো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গণিতের বিশাল জগতে কোন সংখ্যাটি আসলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে?…

% days ago