Categories: entertainment

Suchitra Sen's death is more painful for the people of Pabna: demand to save the Pabna house and make it a memorial museum

The Dhaka Times Desk মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের মৃত্যুতে পাবনাবাসী বেশি কষ্ট পেয়েছেন। কারণ পাবনার কন্যা সুচিত্রা সেনের জীবদ্দশার বহু স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে এখানে। তাঁর বাড়ি উদ্ধার করে সেখানে স্মৃতি যাদুঘর করার দাবি করা হয়েছে।


বাংলা চলচ্চিত্রের এক মহানায়িকা সুচিত্রা সেন আজ বাংলাদেশ সময় সকাল ৮.৫৫ মিনিটে কোলকাতার একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তাঁর মৃত্যুতে শুধু ভারত নয় বাংলাদেশের বিশেষ করে পাবনাবাসীরা শোকাহত হয়েছেন। মহানায়িকার এই মহাপ্রয়ান যেনো সকলকেই ব্যথিত করেছে।

বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের অসংখ্য স্মৃতি ছড়িয়ে আছে পাবনায়। পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লায় এখন পর্যন্ত দাঁড়িয়ে আছে তার শৈশব-কৈশরের স্মৃতিমাখা পৈতৃক সেই বাড়িটি। এই বাড়িটিকে দখলমুক্ত করে সেখানে সুচিত্রা সেন আর্কাইভ গড়ে তোলার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন পাবনাবাসীসহ অগণিত সুচিত্রাভক্ত।

সর্বস্তরের মানুষের দাবির মুখে জেলা প্রশাসন তিন বছর আগে বর্তমান দখলকারীর (লিজ গ্রহীতা) লিজ বাতিল করলেও উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপে সে উদ্যোগ আবারও থেমে রয়েছে। আজ পর্যন্ত শেষ হয়নি সেই আইনি জটিলতা।

অপরদিকে মহানায়িকার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর উদ্বেগাকূল পাবনার সাংস্কৃতিক কর্মী, রাজনীতিবিদ, নাট্যকর্মী, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের পাবনাবাসী আবারও সোচ্চার হয়ে ওঠেন তার বাড়িটি উদ্ধার করে সেখানে একটি আর্কাইভ করার জন্য। এরই মধ্যে তারা মহানায়িকার আরোগ্য কামনায় মোমবাতি প্রজ্বলন এবং প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় অব্যাহত রেখেছে। আজ সকালে মৃত্যুর খবরে পাবনাবাসীরা শোকে হত বিব্‌হল হয়ে পড়েছেন।

Related Posts

পাবনাবাসীর কাছে পাবনার মেয়ে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়িকা সুচিত্রা সেন ওরফে রমা’দি স্মৃতি হয়েই আছে। পাবনা শহরের গোপালপুরের হেমসাগর লেনে অবস্থিত রমাদি’দের অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত বাড়িটি ঘিরে নস্টালজিয়াতে আক্রান্ত হয় পাবনার মানুষ। আর তাই তাদের প্রিয় নায়িকাকে আরও স্মরণীয় করে রাখতে পাবনাবাসী বেশ কয়েক বছর থেকে আয়োজন করে আসছে সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র উৎসব। সুচিত্রা সেনকে নিয়ে পাবনাবাসীর আবেগ এবং গর্বের যেন শেষ নেই।

সুচিত্রা সেনের ডাক নাম রমা। তিনি ১ম থেকে ২য় শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছেন পাবনা মহাকালী পাঠশালায় (বর্তমানে পাবনা টাউন গার্লস হাইস্কুল) এবং পরে ৩য় শ্রেণীতে ভর্তি হন পাবনা বালিকা বিদ্যালয়ে (বর্তমানে যেটি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়)। ১০ম শ্রেণীতে পড়াকালীন রমা দি (সুচিত্রা সেন) ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট ভারতে চলে যান। তার বাবা করুণাময় দাসগুপ্ত পাবনা পৌরসভায় সেনেটারি ইন্সপেক্টর এবং পরে হেড ক্লার্ক থেকে ১৯৫০ সালের ১৫ মে সেখান থেকে অবসর নেন। পাবনা পৌরসভায় তার লাগানো দুটি পামগাছ এখনও তাঁর স্মৃতি বহন করছে।

বাবা করুণাময় এবং মা ইন্দিরার মোট সন্তান সংখ্যা ছিল আট। প্রথম দু’জন ছেলে। নিতাই এবং গৌর। এরপর ৫ মেয়ে উমা, উষা, রমা, মীনা, লীনা এবং রুনা।

একদিন সুচিত্রা সেনের পরিবার ভারত চলে গেলেও, এই বাড়িটিই যেন তার স্থায়ী ঠিকানা হয়ে থাকে পাবনাবাসীর কাছে। পাবনার এই বাড়িতে রমা দির শৈশব ও কৈশরের অনেকটা সময় কেটেছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, রমা দি বা সুচিত্রা সেন পাবনাকে এবং তার বাড়িটিকে মনে রেখেছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কয়েকজন বাঙালিকে রমা দি বলেছিলেন পাবনায় তার অনেক স্মৃতি রয়েছে। তিনি পাবনায় আসবেন। ২০০১ সালে বাড়িটি দেখতে এসেছিলেন রমা দির পিসতাতো ভাই-বোন সুজাতা সেনগুপ্ত, পরমা সেনগুপ্ত, অলক সেনগুপ্ত, দিলীপ সেনগুপ্ত। তারা সে দিন বলেছিলেন রমা দির জন্মগৃহে এসে তারাও ধন্য। তাইতো পাবনাবাসী সুচিত্রা সেনের বাড়িটি স্মৃতির মণিকোঠায় আগলে রাখতে চায়।

কেমন আছে ওই বাড়িটি

পাবনা শহরের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে পাবনা-ঢাকা মহাসড়কের কোলঘেঁষে সুচিত্রা সেনের এই বাড়িটি চোখে পড়বে। বর্তমানে বাড়িটির অনেক পরিবর্তন হয়েছে। একতলা ভবনের সিঁড়ি দিয়ে উঠে বারান্দার বাঁ-পাশের ঘরটায় যেখানে সুচিত্রা সেন থাকতেন সে ঘরটি আগের মতো নেই। নেই তার ছবিও। অবশ্য জানালার শিকগুলো তেমনি আছে। কপাটও আছে তেমনি। যে সিঁড়িটি সংক্ষিপ্তভাবে উঠে ছাদে গেছে সেটির জীর্ণদশা। স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাদসহ বেশকিছু স্থান সংস্কার করায় আগের অবস্থার বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটেছে।

সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সুচিত্রা সেনের পরিবার ভারতে চলে যাওয়ার পর পরবর্তী সময়ে বাড়িটি সরকারের অর্পিত সম্পত্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। পরে ১৯৮৭ সালে বর্তমান মৌজা-পাবনা শহরের গোপালপুর ৫৮৭নং দাগে ৯৯নং খতিয়ানে ০.২১২৫ একর জমি জামায়াত নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান ইমাম গাযযালী ইন্সটিটিউট নামক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে লিজ দেয়া হয়। শেখ হাসিনার সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে ওই লিজ বাতিল করে। এই লিজ বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে সেটি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। কিন্তু পাবনার সচেতন নাগরিকরা সুচিত্রা সেনের বাড়িটি ছেড়ে দেয়ার এবং প্রশাসনের কাছে এটি স্মৃতিকেন্দ্র করারও দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন থেকে।

সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি বলেন, সুচিত্রা সেনের বাড়িটি উদ্ধার করে সেখানে আর্কাইভ করা হবে এবং এটি হবে আমাদের সংস্কৃতির লালনকেন্দ্র। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে একুশে বইমেলা উদযাপন শেষে পাবনায় সপ্তাহব্যাপী সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করা হবে। এখন এই মহানায়িকার মহাপ্রয়ানে এসব দাবি আরও জোরালো হবে বলেই মনে করছেন সুচিত্রা ভক্তরা। তারা দাবি করছেন সরকারের কাছে বিষয়টি সমাধানের জন্য। আজ সুচিত্রা সেন আমাদের মাঝে নেই কিন্তু ভারতের খ্যাতিমান এই অভিনেত্রীকে দেশের জনগণ আজীবন স্মরণ করতে চান। আর সেজন্যই সুচিত্রা সেনের বাড়িটিকে একটি স্মৃতি যাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর তাহলে সুচিত্রা সেন ওরফে রমাদি বেঁচে থাকবেন সবার মাঝে শত সহস্র বছর ধরে বাঙালিদের হৃদয়ে।

This post was last modified on জানুয়ারি ১৭, ২০১৪ 3:44 pm

Staff reporter

View Comments

Recent Posts

নিজের আইপি অ্যাড্রেস জানবেন যেভাবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী অনেকেই নিজের আইপি অ্যাড্রেস সম্পর্কে মোটেও অবগত নন।…

% days ago

I want to sing a duet with Shreya Ghosal - Rizvi Wahid

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রিজভী ওয়াহিদ- যাকে বাংলা আধুনিক গানে প্রেমের গানের শিল্পী বলা…

% days ago

The number of donkeys in the country is the highest!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি পালিত হলো বিশ্ব গাধা দিবস। ‘গাধা’ শব্দটি প্রায়ই আমরা…

% days ago

Such a view of rocks among trees is truly exceptional

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১…

% days ago

5 minutes of exercise every day will lose fat! Then start exercising at home

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা শরীরচর্চার সময় না পেলেও নিয়ম করে মিনিট পাঁচেক স্কোয়াটে…

% days ago

Why iPhone game emulator Dell is so popular

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ডেলটা নামে আইফোনের একটি ইমুলেটর অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে।…

% days ago