The Dhaka Times Desk এক দেশে খাওয়া আর আরেক দেশে কুলি ফেলানো। এমনই এক ঘটনার পুনরাবৃত্তি। রেজাউল মণ্ডল নামে ৬৫ বছর বয়সী এ বৃদ্ধ কাগজে-কলমে ভারতের নাগরিক। তবে তার রান্নাঘর ভারতে হলেও বেডরুম কিন্তু বাংলাদেশে!
জায়গাটিরি নাম বয়রা উত্তরপাড়া। এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার একটি গ্রাম। এ গ্রামেরই এক বাসিন্দা, নাম তার রেজাউল মণ্ডল। ৬৫ বছর বয়সী এ বৃদ্ধ কাগজে-কলমে ভারতের নাগরিক। কিন্তু তার বেডরুম বাংলাদেশে। অন্যদিকে তার রান্নাঘর ভারতে।
অবাক হওয়ার মতো ঘটনা হলেও এটি সত্য। স্থানীয় জনগণ তাকে চেনেন ‘বাংলাদেশ-ভারতের’ নাগরিক হিসেবেই। বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে তার পরিচয় ৩৯/১১ এস পিলারের বাসিন্দা হিসেবে। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বহুপরিবার। বদলে যায় তাদের স্থায়ী ঠিকানা। তবে রেজাউল মণ্ডলের অভিজ্ঞতাটি একেবারেই ভিন্ন।
অনলাইন টু সার্কলস ডট নেট’র এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তার এক অন্য কাহিনী। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তরেখা ভাগ করেছে তার বাড়ি। রেজাউল মণ্ডলের জন্ম আসলে ভারতে। বর্তমানে ভারতে অবস্থিত ভূমিতেই জন্ম হয়েছিল তার পিতা ও তার পিতা অর্থাৎ দাদার। রেজাউল মণ্ডলের ভাষ্যমতে, গ্রামে তাদের পরিবার ছিল উচ্চবিত্ত। কিন্তু দেশভাগের কারণে তাদের বেশির ভাগ ভূ-সম্পত্তি বেহাত হয়ে পড়ে। এখন মাত্র ১৬ বিঘা জমির মালিক রেজাউল। এর অর্ধেক পড়েছে ভারতে আর অর্ধেক পড়েছে বাংলাদেশে। আর সে কারণে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশেই খাজনা দিতে হয় রেজাউলকে।
বাংলাদেশে থাকা জমি চাষাবাদ করে শস্য ভারতে নিয়ে যান রেজাউল। তবে এজন্য দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নানা চেকআপের মুখোমুখি হতে হয় তাকে প্রতিনিয়তই। তবে এখন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আচরণ আরও রূঢ় বলে জানালেন রেজাউল। যে কারণে নিজের জমির ফসল প্রায়ই দেশে ফেরত নিতে পারেন না তিনি। আবার নিজের জমিতে মুক্ত চলাচলেরও অধিকার নেই তার। সীমান্ত বেড়া অতিক্রম করতে তাকে নানা ভোগান্তির মুখোমুখি হতে হয়। বাংলাদেশের প্রবেশের আগে তার ভোটার আইডি কার্ড জমা দিতে হয় বিএসএফ চেকপোস্টে কর্মরতদের নিকট। উত্তর বয়রা গ্রামের অপর পাশে বাংলাদেশের গাঁদাদহারপুর গ্রাম অবস্থিত। বাংলাদেশের যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার এ গ্রামের নথিপত্রেও বাসিন্দা হিসেবে রেজাউল মণ্ডলের নাম উল্লেখ করা আছে। এখানে খাজনা দেয়ার কারণেই বাসিন্দা হিসেবে তার ঠিকানা রয়েছে বলে জানালেন রেজাউল।
রেজাউল মণ্ডল তার বিভক্ত বাড়ির বর্ণনা দিতে গিয়ে যা বলেন তাতে বোঝা যায়, প্রতিটি জরিপেই তার বাড়ি বিভক্ত হয়েছে দু’টি দেশেই। এ কারণে বর্তমানে তার বেডরুম বাংলাদেশে হলেও তার রান্নাঘর ভারতে। ধান শুকানোর আঙিনা ও গোয়ালঘর পড়েছে ভারতে।
রেজাউল জানান, এমনকি তাকে তার বাড়ির পুনর্নিমানেরও অনুমতিও দেয়া হয় না। উত্তর বয়রা গ্রামে ৬০ পরিবারের বসবাস। এর মধ্যে কেবল রেজাউল মণ্ডলের বাড়িটিই পড়েছে সীমান্তরেখার অধিকারের মধ্যে। তবে এতসব ভোগান্তিতেও কোন অভিযোগ নেই রেজাউলের। নিজের জীবন নিয়েই তিনি বেশ সুখী। তার ৪ ছেলে- ইয়ারুল, আমিরুল, হাবিবুর ও হাফিজুর। ২ কন্যা মার্জিনা এবং সেলিনা। ছোট ছেলে হাফিজুর রহমান যোগ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে। পরিবারের কারই বাংলাদেশে চলে আসার কোন পরিকল্পনা তাদের নেই।
রেজাউল মণ্ডলের স্ত্রী আলেয়া মণ্ডল সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবেই বসবাস করছি। বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করার কোন পরিকল্পনা আমাদের নেই। ভারত ও পাকিস্তানের অর্ধেক নাগরিক হিসেবে বসবাসের অনেক স্মৃতিও রয়েছে রেজাউল মণ্ডলের। কিন্তু এখনও তার নাগরিকত্ব বিভক্ত। তিনি এখন অর্ধেক বাংলাদেশী আর অর্ধেক ভারতীয়। আর তাই রেজাউল মণ্ডল নিজে মনে করেন, তিনি দুই প্রতিবেশী দেশের ভ্রাতৃত্ববোধের এক প্রতীক হয়ে আছেন এবং থাকবেন।
This post was last modified on জুলাই ২২, ২০১৪ 7:43 pm
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকাই চলচ্চিত্রের সুপারস্টার শাকিব খানকে নিয়ে আরও দু'টি নতুন সিনেমা…
The Dhaka Times Desk Playing brain games clears the brain. So this kind of…
The Dhaka Times Desk good morning Friday, 17 May 2024 AD, 3 Jaishtha 1431…
The Dhaka Times Desk Even if the body lacks water, the tongue turns white. regular…
The Dhaka Times Desk Feeding only milk rice and vegetables while your baby is growing…
The Dhaka Times Desk You can tell when hours pass on Facebook…