The Dhaka Times Desk ছেলে ফেল করেছে, কিন্তু মা পাশ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ২০১৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে গৃহিণী জোবায়দা খানম ও তার ছেলে দুজনই এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু দু:খের বিষয় তার ছেলে পাশ করতে পারেনি। কিন্তু তাতে কি হয়েছে মা তো পাশ করেছে। বুধবার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় গৃহিণী জোবায়দা খানম জিপিএ- ৩.২০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
গৃহিণী জোবায়দা খানম এ বছর যশোর বোর্ডের অধীনে কালীগঞ্জ শহরের শহীদ নুর আলী কলেজ হতে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। ৫০ বছর বয়সের সাবেক এই পৌর কাউন্সিলর কালীগঞ্জ পৌরসভার আড়পাড়া মধুগঞ্জ এলাকায় বসবাস করেন।
সাংবাদিকদের জোবায়দা খানম বলেন, পরীক্ষার ফলাফল পেয়ে তিনি দারুণ খুশি হয়েছেন। তবে একটু মন খারাপ তার ছেলের জন্য। কারণ ছোট ছেলে ইমরান খান এবার পরীক্ষা দিয়ে ফেল করেছে।
জোবায়দা খানম পড়া-লেখা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের আরও জানান, ‘লেখাপড়ার আগ্রহ থাকলেও, মাধ্যমিক পাশের আগেই পারিবারিক সিদ্ধান্তে বিয়ের পর স্বামীর সংসারে যেতে হয়। স্বামী ফখরুদ্দীন খান একজন পরিবহণ শ্রমিক। তার আগ্রহ থাকলেও টানাটানির সংসারে লেখাপড়া করতে পারেনি কখনও।’ ২ মেয়ে ২ ছেলে তার। স্বামী-সন্তানের সংসার সামলাতে জীবনের অনেক সময় কেটে গেছে তার। সংসারের এতো ঝামেলার মধ্যেও তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হতে এসএসসি পাশ করেন। এবার জোবায়দা খানম ছোট ছেলে ইমরান খানের সাথে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন।
তিনি আরও জানান, মাধ্যমিক পাশ বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। মেজো মেয়ে অনার্স মাস্টার্স শেষ করে এখন স্বামীর সাথে অস্ট্রেলিয়ায় থাকেন। আর বড় ছেলে জোবায়ের খান এখন অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র। যে কারণে ছেলেমেয়েদের ঝামেলা ছিলনা বিধায় ছোট ছেলে ইমরান খানের সাথেই এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা দেন।
১৯৯৭ সালে কালীগঞ্জ পৌরসভার মহিলা কমিশনার নির্বাচিত হন জোবায়দা খানম। আর থেকেই তিনি বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে উঠা-বসার সুযোগে বুঝতে পারেন লেখাপড়ার বিকল্প কোন কিছু নেই। তাছাড়া লেখা-পড়ার জন্য বয়সও কোনো ফ্যাক্টর নয়। আর তাই তিনি এই ডিগ্রী নিলেন।