The Dhaka Times Desk আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যুগে ট্যাবলেট খুব কম সময়ের মধ্যে একটি অনন্য মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা মনে করছেন, আস্তে আস্তে মানুষ এই ট্যাবলেট কেনা থেকে সরে আসবে।
২০১৪ সালের শেষ নাগাদ গোটা দুনিয়ায় ২৫০ মিলিয়ন ট্যাবলেট ছড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। স্মার্টফোনের চেয়ে বেশ বড় আকারের এই প্রযুক্তি পণ্যটি বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু এতো প্রসার ঘটলেও সেইসঙ্গে এর নির্মাতারা বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ধীরে ধীরে ট্যাবলেটের চাহিদা ক্রমেই ফুরিয়ে যাবে। গত তিন বছরে এর চাহিদা বাড়লেও এখন আবার চাহিদা কমতে শুরু করেছে।
কি কি কারণে চাহিদা কমছে সে বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক:
আসলে কি কারণে ট্যাবের জন্ম হয়েছে তা কেও জানে না। এটি কি আসলে একটা স্রেফ ক্রেজ? ইতিমধ্যেই মাইক্রোসফট সারফেস ৩ ল্যাপটপকে সরিয়ে দিয়েছে। আইপ্যাড জলবায়ুবিদ এবং মেরিন বায়োলজিস্টদের জন্য।
স্যামসাং গ্যালাক্সি প্রো ব্যবহার হয় ব্যবসায়ীদের জন্য। কিন্তু ট্যাব কী কাজের জন্য ব্যবহার হয়? তবে একমাত্র পিন্টারেস্ট বা অন্যান্য সোশাল সাইটে ব্রাউজের জন্য ট্যাব ভালো লাগতে পারে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এখনও নির্মাতারা এর প্রকৃত লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য স্থির করতে পারেননি।
২০১০ সালের প্রথমে আইপ্যাড বের হয় যা ফোনের চেয়ে কিছুটা বড় ও ল্যাপটপের চেয়ে অনেক ছোট আকারে। এটা বই পড়া ও ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য সুবিধাজনক। ২০১৪ সালে স্মার্টফোন বাজারে আসে যা দারুণ গতির ও এটির পর্দাও বেশ বড়। তাহলে, ৭, ৮ বা ১০ ইঞ্চির পর্দার কি প্রয়োজন? স্মার্টফোনের চেয়ে যতটুকু বড় যন্ত্র প্রয়োজন তার জন্য কিন্তু ফ্যাবলেটই যথেষ্ট।
দেখা যাচ্ছে মাত্র ৩ বছর আগেও ফোনই যথেষ্ট ছিল। এরপর হতে স্মার্টফোনের নতুন নতুন সংস্করণ আসার পর বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মেনে নিয়েছেন ক্রেতারাও। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ট্যাবের নতুন সংস্করণে কিনেছে তাদের কাছে এর নতুন সংস্করণ নেওয়ার কোনো অর্থই হয় না। আবার ফোনেই যে কাজ চালানো যায়, সেসব কাজের দিক থেকে ট্যাবের নানা অসুবিধাও রয়েছে। যেমন ফোনের ব্যাটারি বছরে শতাধিক চার্জ সাইকেল পূরণ করতে পারে। অথচ ট্যাবের ক্ষেত্রে তা ডজন খানেকের বেশি নয়। ট্যাবে সিনেমা অথবা অন্য কিছু করতে মাঝেমধ্যে ভালো লাগে, তবে সব সময় নয়। এক্ষেত্রে টেলিভিশন ও ডেস্কটপতো রয়েছে। কাজেই ট্যাব কি কথনও নিত্যসঙ্গী হতে পারছে?
সাধারণত স্মার্টফোনে যেসব অ্যাপ রয়েছে সেগুলোই ট্যাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার ট্যাবের বিশেষত্ব অনুযায়ী এর অ্যাপের কোনো বিশেষত্বও নেই। অনেক ক্ষেত্রে আবার স্মার্টফোনের অ্যাপসও পাওয়া যায় না ট্যাবে। তাই গবেষকরা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, মোবাইলের মতো প্রচুর পরিমাণে ট্যাব বিক্রি করা কখনই সম্ভব নয়। এটি বিক্রির একমাত্র উপায় হলো খুব কম দামে বাজারে সরবরাহ করা। অথবা আরেকটি উপায় আছে তা হলো ট্যাবকে আলাদা মানের এবং ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের অ্যাপ দিয়ে পূর্ণ করে দেওয়া।
এসব নানা দিক বিবেচনায় আনলে ট্যাবের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বেশ চিন্তিত। নতুনভাবে না সাজাতে পারলে আস্তে আস্তে মানুষ এই ট্যাবলেট কেনা থেকে সরে আসবে।