The Dhaka Times Desk অপরাধ করলে জেলে যেতে হয় তা আমাদের জানা। কিন্তু তাই বলে বাঘকে জেল! ঠিক তাই। মানুষখেকো এক ‘উস্তাদ’ বাঘকে চিড়িয়াখানায় জেল দিয়েছে এক আদালত!
অন্ততপক্ষে তিন তিনটি হত্যাকাণ্ডের সন্দেহভাজন খুনি হিসেবে তার নামই চলে এসেছে। আদালত এই ‘উস্তাদ’কে ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে নয়। গত ৫ বছরে নিহত ওই তিনজনের দু’জন তরুণ এবং একজন পঞ্চাশোর্ধ্ব বনরক্ষী। যে কারণে পশুপ্রেমী এক ব্যক্তির রিট আবেদন সত্ত্বেও আদালত পুনরায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ছেড়ে দেওয়ার পরিবর্তে ‘উস্তাদ’ নামের ৯ বছর বয়সের বাঘটিকে বিশেষ ব্যবস্থায় একটি চিড়িয়াখানাতে আটকে রাখার পক্ষেই মত দিলেন আদালত।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ৮ তারিখে ভারতের রাজস্থানের রানথামবোড়ে ন্যাশনাল পার্কের ৫৩ বছর বয়সী বনরক্ষী বাঘের হাতে প্রাণ হারান। বন বিভাগ মানুষখেকো বাঘটিকে আটক করতে অভিযান চালায়। খুঁজে বের করে ‘উস্তাদ’ নামের বাঘটিকে চেতনানাশক তির মেরে আটক করা হয়। বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, ২০১০ সালে ২৩ বছর বয়সী স্থানীয় এক তরুণ ও ২০১২ সালের মার্চে ১৯ বছর বয়সী এক তরুণের মৃত্যুর জন্যও উস্তাদকেই দায়ি করেন তারা।
জানা যায়, মানুষখেকো এই ‘উস্তাদ’ বাঘের খবর গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। বাঘটিকে আটক করে উদয়পুর জেলার একটি চিড়িয়াখানায় হস্তান্তরের খবর পাওয়ার পর এর বিরুদ্ধে রাজস্থানের আদালতে রিট করেন সংক্ষুব্ধ এক ব্যক্তি। রানথামবোড়ে ন্যাশনাল পার্কের নিয়মিত দর্শনার্থী চন্দ্রমুলেশ্বর শিং বাঘটিকে চিড়িয়াখানায় আটকে না রেখে, পুনরায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আদালতে ওই রিট করেন। কিন্তু আদালত শেষ পর্যন্ত জনস্বার্থে ‘উস্তাদ’ বাঘটিকে বিশেষ ব্যবস্থায় আটকে রাখার পক্ষেই মতামত দেয়। শেষ পর্যন্ত উদয়পুরের চিড়িয়াখানায় ফুটবল মাঠের চেয়েও ছোট একটা এলাকায় আটকে রাখা হয়েছে ‘উস্তাদ’ নামের ওই মানুষখেকো আলোচিত বাঘটিকে। বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে।
উল্রেখ্য, ২০১৪ সালের পশু শুমারি অনুযায়ী ভারতে বাঘের সংখ্যা ২,২২৬টি। সেই হিসাবে বিশ্বের প্রায় ৭০ শতাংশ বাঘই রয়েছে ভারতের বনাঞ্চল ও সংরক্ষিত এলাকায়। একমাত্র ভারতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৬০ জন মানুষ বাঘের হাতে প্রাণ দিতে হয়।