The Dhaka Times Desk বঙ্গবন্ধু সেতুতে সিরিজ দুর্ঘটনা স্থম্ভিত করেছে সকলকে। ৯ জনকে প্রাণ দিতে হয়েছে শনিবারের ওই দুর্ঘটনায়। কিন্তু কেনো এমন দুর্ঘটনা?
যে কোনো ব্রিজের ওপর গাড়ি চলার সময় খুব ধীর গতিতে গাড়ি চালানো প্রয়োজন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেতুতে রেলগাড়ি খুব ধীরে চললেও বাস বা অন্যান্য যানবাহন চলে দ্রুত গতিতে। ঘন কুয়াশার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটলেও এখানে আরেকটি কারণ হলো গাড়ির গতি এতো বেশি থাকার কারণে গত পরশুর (শনিবার) সিরিজ দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। গাড়ির গতি বেশি থাকায় একটি দুর্ঘটনা ঘটার পর, ঘটতে থাকে একের পর এক দুর্ঘটনা। অর্থাৎ একটির সঙ্গে আরেকটি, আরেকটির সঙ্গে আরেকটি এভাবেই ঘটে সিরিজ দুর্ঘটনাটি।
প্রশ্ন এসেছে এতোগুলো গাড়ি কেনো সিরিজভাবে আক্রান্ত হলো? অনেকের মনেই এমন প্রশ্ন এসেছে। কারণ সেতুতে প্রবেশের সময় টোল দিতে হয়। টোল দিতে বেশ কয়েক মিনিট করে সময় চলে যায়। তারপরও এতোগুলো গাড়ি কীভাবে সিরিজে পড়লো সে প্রশ্ন করেছেন অনেকেই।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সেতুর ওপর দিয়ে যেসব গাড়ি চলাচল করে সেগুলোর গতি আরও কম থাকা উচিত। বেশিরভাগ সময় দেখা যায় গাড়ির গতি সেতুতে ওঠার পর আরও বেড়ে যায়। যদিও আসা যাওয়ার জন্য পৃথক লেন রয়েছে। লেন থাকলেও সেতুতে ওভার টেকিং অর্থাৎ অতিক্রম করা বেশ দুরহ ব্যাপার। তারপরও দেখা যায় বাস-ট্রাক অতিরিক্ত গতিতে চলাচল করছে। গতি কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। যেমন ট্রেন চলার সময় গতি অনেক কম রাখা হয়। সেরকম বাস-ট্রাক বা অন্যান্য যানবাহনের ক্ষেত্রেও গতি কম রাখার নিয়ম করা উচিত।
আরও একটি বিষয় রয়েছে। আর তা হলো মহাসড়কগুলোতে চলাচলকারি বাস চালকরা সব সময় খুব দ্রুত গতিতে বাস চালিয়ে থাকেন। আমরা দেখেছি ঘন কুয়াশার সময় খুব কাছের যানবাহনও দেখা যায় না। কিন্তু চালকরা গাড়ি চালন অন্য সময়কার মতোই ফুলস্পিডে। এক কথায় বলতে গেলে বেপরোয়াভাবেই গাড়ি চালান চালকরা।
শীতের সময়টিতে কুয়াশা থাকে, এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটি মাথায় রেখেই চালকদেরকে গতি কমিয়ে নিরাপদভাবে গাড়ি চালানো উচিত। তানা হলে অকালে প্রাণ হারাতে হবে এদেশের নাগরিকদের। বহু মানুষকে হতে হবে পঙ্গু। আমাদের দেশে এমনিতেই সড়ক দুর্ঘটনার হার অনেক বেশি।
ফিটনেসবিহীন গাড়ি, সড়কের বেহাল দশা, চালকদের অজ্ঞতা ইত্যাদি নানা কারণে প্রতিদিনই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। এতে করে বহু মানুষ প্রাণ দিচ্ছেন। পঙ্গু হচ্ছেন আরও বহু মানুষ। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়, তদন্ত হয় কিন্তু বাস্তবে সেই রিপোর্ট রয়ে যায় লাল ফিতায়। তদন্ত কমিটির সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা হয় না।
শুধু বঙ্গবন্ধু সেতুতেই নয়, বাংলাদেশে প্রতিদিন বহু সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এগুলো প্রতিরোধে দরকার কার্যকরী ব্যবস্থা। তা না হলে একের পর এক দুর্ঘটনায় অকালে প্রাণ দিতে হবে এদেশের নাগরিকদের। পঙ্গু হতে হবে বহু নাগরিককে। সারাজীবন পঙ্গুত্ববরণ করে বেড়াতে হবে অনেককে। এই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আসুন জরুরি এবং কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করি। আর কাওকে যেনো এভাবে অকালে প্রাণ দিতে না হয়, তারজন্য সময় থাকতে পদক্ষেপ গ্রহণ করি। ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনে আমরাও শরীক হই।