The Dhaka Times Desk বাবা-মা দু’জনেই সন্তানের কাছে সমান। আর সেই বাবা-মা যদি একসঙ্গে না থাকে তখন সন্তানদের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। সেজন্য এক মেয়ে তার বাবা-মাকে একসঙ্গে করলেন ২২ বছর পর!
অবিশ্বাস আর অভিমানে দু’জন ছিলেন দুই প্রান্তে। তাও এক দিন দু’দিন নয় দীর্ঘ ২২ বছর! একজন ছিলেন লক্ষ্মীপুরে অন্যজন কক্সবাজার। এই দূরত্বে এক বছর বয়স থেকেই বাবার আদর-স্নেহ হতে বঞ্চিত ছিলো তাদের মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা (২৩)।
গত ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে কলেজপড়ুয়া মেয়ে আয়েশার প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত তার বাবা-মায়ের অভিমানের দেওয়াল ভেঙেছে! আয়েশা ফিরে পেয়েছে বাবা সিদ্দিক উল্লাহকে (৫০)!
প্রকাশ থাকে যে, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চর জাঙ্গালিয়া গ্রামের অধিবাসী সিদ্দিক উল্লাহ ১৯৯৩ সালে কক্সবাজারের বাসিন্দা রহিমা খাতুনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের এক বছর পর তাদের ঘরে জন্ম নেয় কন্যা আয়েশা। দু’বছরের মাথায় তাদের মধ্যে অবিশ্বাস ও অভিমানের দেওয়াল তৈরি হয়। একপর্যায়ে সিদ্দিক মেয়ে এবং স্ত্রীকে রেখেই লক্ষ্মীপুরে চলে আসেন। আবার বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। তবে মেয়ে আয়েশাকে বুকে নিয়ে স্বামীর অপেক্ষায় ২২ বছর কাটিয়ে দেন রহিমা খাতুন।
মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা বড় হয়ে বুঝতে পারেন বাবা-মা একসঙ্গে না থাকায় সংসারের কি অবস্থা হয়। তাই তার বাবাকে ফিরে পেতে কক্সবাজার আইন সহায়তা কেন্দ্রের আশ্রয় নেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম মজুমদার এবং হাজিরহাট ইউনিয়র পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিনের মাধ্যমে মেয়ে আয়েশা ফিরে পেলেন বাবাকে। আর, স্ত্রী রহিমা খাতুন ফিরে পেয়েছেন স্বামীকে।
মেয়ে আয়েশা বলেন, ২২ বছর পর আমি বাবাকে ফিরে পেয়েছি, আমি বাবা-মাকে সব সময় একসঙ্গে চাই, কাওকে হারাতে চাই না। রহিমা খাতুন এসময় কিছু বলতে চেয়েও আনন্দের কান্নায় বলতে পারছিলেন না। বাবা সিদ্দিক উল্লাহ বলেন, আমার বিশ্বাস ছিলো একদিন আমার মেয়েকে আমি কাছে পাবোই।