The Dhaka Times Desk মানুষের মন কখনও কখনও হয়ে যায় পাষণ্ড। আর তাই সেই ব্যক্তি তখন এমন কিছু ঘটনার সূত্রপাত ঘটান যা সকলকে বিস্মিত করে। এমনই এক কাণ্ড ঘটিয়েছেন এক সন্তান। নিজের মায়ের মৃতদেহ ৩ বছর ফ্রিজে রেখেছিলেন এক পাষণ্ড সন্তান!
এমন লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বেহালাতে। সেখানকার এক বাড়ি হতে বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয় পুলিশ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বেহালার ঘোলসাপুরের শুভব্রত মজুমদার নামে এক ব্যক্তি গত ৩ বছর ধরে নিজের মা’র মরদেহ বাড়ির ফ্রিজে লুকিয়ে রেখেছিলেন। এই ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে বলা হয়, শুভব্রত মজুমদারের মা ৩ বছর পূর্বে মারা যায়। এরপর প্রতিবেশীরা তার বৃদ্ধা মায়ের খোঁজ নিতে চাইলে ছেলে বলতেন, মায়ের দেহ পিস হ্যাভেন’এ রাখা হয়েছে। তবে পিস হ্যাভেন কোথায় সে ব্যাপারে প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর দিতেন না শুভব্রত মজুমদার। যে কারণে বৃদ্ধার মৃত্যু নিয়ে প্রতিবেশীদের মনে সন্দেহ বাড়তে থাকে। এক সময় প্রতিবেশশীরা পুলিশকে খবর দেয়।
তারপর পুলিশ তদন্তে নামার পর ভয়াবহ সত্যিটা বেরিয়ে আসে। বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ আবিষ্কার করে পিস হ্যাভেন নয়, গত ৩ বছর ধরে মায়ের মরদেহ ফ্রিজে মমি করে রেখে দিয়েছিলেন তারই ছেলে!
সে শুধু ফ্রিজে ভরেই ক্ষান্ত হননি, মমি করে রাখার জন্য মৃত মায়ের শরীরে মাখানো হয়েছে ফর্ম্যালডিহাইড। সংরক্ষণের জন্য পেট কেটে বের করা হয় নাড়িভুঁড়িও!
জানা যায়, কয়েক বছর পূর্বে কোলকাতার রবিনসন স্ট্রিটেও প্রায় একই ধরনের অপরাধের প্রমাণ পেয়েছিলো পুলিশ। সেবার বোন দেবযানীর কঙ্কালসহ ভাই পার্থকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা যায়, বোনের মৃত্যুর পর কাওকে কিছু না জানিয়ে ভাই পার্থ সেই মরদেহ বাড়িতেই রেখে দেন।
জানা যায়, শুভব্রতকে এলাকাবাসী এক সময় মেধাবী ছাত্র হিসেবেই জানতো। লেদার টেকনোলজির ছাত্র শুভব্রত পাস করার পর বানতলার চর্মনগরীর একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজও করতেন। তবে সেই কাজ ছেড়ে দেন শুভব্রত। এরপর সে কিছুই করতো না। মা বীণা মজুমদার এবং বাবা গোপাল মজুমদারের সঙ্গেই থাকতেন ভবঘুরে স্বভাবের এই শুভব্রত।
প্রতিবেশীরা জানান, ২০১৫ সালে হাসপাতালে বীণাদেবীর মৃত্যু ঘটে। সৎকারের কোনো সংবাদ না কেওই জানতো না। এই বিষয়ে প্রতিবেশীরা প্রশ্ন করলে শুভব্রত বলতেন, মায়ের দেহ পিস হ্যাভেনে রাখা রয়েছে। তবে পড়শিদের সন্দেহ কাটেনি।
৪ এপ্রিল রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুভব্রতের বাড়িতে অভিযান চালায় বেহালা থানার পুলিশ। তখনই পুলিশের নজরে আসে, বিশাল এক ডিপ ফ্রিজে বীণাদেবীর মরদেহটি মমি করে রাখা হয়েছে।
বাড়িতে অবশ্য শুভব্রত’র বাবা গোপাল মজুমদারও বসবাস করতেন। ৮৯ বছরের বৃদ্ধ এই বিষয়ে কিছু জানতেন কিনা সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে গ্রেফতার করা না হলেও শুভব্রত’র বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।